রাজশাহী মঙ্গলবার, ২৩শে এপ্রিল ২০২৪, ১১ই বৈশাখ ১৪৩১


ফাল্গুন-ভ্যালেন্টাইনে ফুল বিক্রি নিয়ে শঙ্কা


প্রকাশিত:
৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০২:০৫

আপডেট:
২৩ এপ্রিল ২০২৪ ১৮:৫০

ছবি: সংগৃহীত

করোনার ধাক্কা সামাল দিয়ে উঠতে না উঠতেই ফুল ব্যবসায়ীরা পড়েছেন নতুন সংশয়ে। শীত মৌসুমে সামাজিক অনুষ্ঠানে ফুলের চাহিদা থাকলেও করোনার কারণে তা মুখ থুবড়ে আছে। ফেব্রুয়ারিতে পয়লা ফাল্গুন, ভ্যালেন্টাইনস ডে ও মহান একুশে ফেব্রুয়ারির দিন ফুলের ব্যাপক চাহিদা থাকলেও খুচরা ব্যবসায়ীরা কোনও আশা দেখছেন না। দিবসগুলো উপলক্ষে বিশেষ প্রস্তুতিও নেই তাদের।

দেশের ফুল ব্যবসায়ীদের সংগঠনগুলোর দেওয়া তথ্যমতে, দেশে বছরে প্রায় ১২শ থেকে ১৫শ কোটি টাকার ফুলের ব্যবসা হয়। কিন্তু করোনায় বিক্রি কমেছে অর্ধেকেরও বেশি। মহামারিতে ৭০০ কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তারা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ এবং সামাজিক অনুষ্ঠানে বিধিনিষেধ থাকায় ফুলের চাহিদা কমেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাই ফাল্গুন ও ভ্যালেন্টাইন দিবসে বিশেষ কোনও পরিকল্পনা নেই তাদের।

ফুল ব্যবসায়ী সমিতিগুলোর তথ্যমতে, দেশের প্রায় ২৩ জেলায় ফুলের চাষ হয়। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো যশোর, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, ঢাকার সাভার। সবচেয়ে বেশি উৎপাদন হয় যশোরে। দেশের চাহিদার তিন ভাগের দুই ভাগই উৎপাদন হয় এই জেলায়। দেশে সাধারণত গোলাপ, জারবেরা, গাঁদা, গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, জিপসি, রডস্টিক, কেলেনডোলা, চন্দ্রমল্লিকাসহ ১১ ধরনের ফুল উৎপাদন হয়। এছাড়াও লংস্টিক রোজ, লিলিয়াম, জারবেরা, স্টোমা, কার্নিশনসহ কয়েক জাতের ফুল আমদানি করা হয়।

ব্যবসায়ীদের তথ্যমতে, সারা দেশে বর্তমানে ৬ হাজারের বেশি ছোট-বড় ফুলের দোকান আছে। এরমধ্যে শুধু রাজধানীতেই রয়েছে সাড়ে ছয়শ’। তবে বিশেষ দিবসকে কেন্দ্র করে রাজধানীর পাড়া-মহল্লায় নতুন নতুন ফুলের দোকান হয়। ফুল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফুল ব্যবসায় এখন মন্দাবস্থা। ফুল পর্যাপ্ত থাকলেও ক্রেতা নেই। অনুষ্ঠান কমে যাওয়ায় বিশেষ কাজ ছাড়া কেউ ফুল কিনছেন না। মালঞ্চ পুষ্প কেন্দ্রের স্বত্বাধিকারী জানান, বিক্রি নেই। প্রতিদিন পকেট থেকে টাকা দিয়ে দোকান চালাতে হচ্ছে। বিক্রি না হলেও দিনে হাজার টাকা খরচ ঠিকই আছে।

শাহবাগ বটতলা ক্ষুদ্র ফুল ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, করোনার ভয়ে ভালোবাসা দিবস, পয়লা ফাল্গুনসহ সব দিবসেই সবার সঙ্গে সবার বিচ্ছিন্নতা আছে। অক্টোবর থেকে পরের বছরের মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত আমাদের সিজন। করোনার কারণে এই সিজনের টাইমে আমাদের দম ফেলার সময় থাকার কথা নয়। অথচ আমরা বসে আছি। প্রতিদিনই পাঁচশ’ থেকে হাজার টাকার লস আছে প্রত্যেক দোকানির। আপাতত অন্য কিছু করেই তাদের চলতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, সচেতন মানুষ তো আর পয়লা ফাল্গুন করবে না। করলেও সংখ্যায় অল্প, সেটা দিয়ে আমাদের ব্যবসা চলবে না। ভ্যালেন্টাইন নিয়েও আমাদের আলাদা কোনও চিন্তা নেই।

দেশের ফুল ব্যবসায়ীদের কেন্দ্রীয় সংগঠন বাংলাদেশ ফ্লাওয়ারস সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রহিম বলেন, ফাল্গুন ভ্যালেন্টাইনের জন্য প্রস্তুতি আমাদের আছে। তবে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। স্টোর মালিকরা ঠিকমতো যত্ন না নেওয়ায় ফুলের বীজ নষ্ট হয়েছে। যে কারণে ফুলের উৎপাদন একটু কম। অনেক কৃষক করোনার কারণে ফুল চাষ বাদ দিয়ে ধান চাষ করেছেন। তিনি আরও বলেন, ‘লক্ষ্যমাত্রা বলতে পারছি না। ২০-২৫ দিন বাজার খুব খারাপ থাকলেও গত কয়েক দিন ভালোর দিকে। সারাদেশে কোনও সামাজিক অনুষ্ঠান নেই। স্কুল-কলেজ বন্ধ। এগুলো খোলা থাকলে একুশে ফেব্রুয়ারিতেও অনেক ফুল বিক্রি হবে।

 

আরপি/ এসআই-১১



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top