হাত-পায়ে ঝি ঝি ধরলে করণীয়
হাতে বা পায়ে 'ঝি ঝি' ধরলে কেমন লাগে? সেখানে সাময়িক অসাড়তার পাশাপাশি এমন একটি অনুভূতির তৈরি হয় যেন অসংখ্য সুঁই দিয়ে একসাথে ঐ অংশে খোঁচা দেয়া হচ্ছে। তবে সাধারণত কিছুক্ষণের মধ্যেই অসাড়তা এবং খোঁচা লাগার মত অস্বস্তিকর অনূভুতি চলে গিয়ে স্বাভাবিক অনুভূতি ফিরে আসে।
এটার কেতাবি নাম 'টেম্পোরারি প্যারেসথেসিয়া'। ইংরেজিতে এটিকে 'পিনস অ্যান্ড নিডলস' বলা হয়।
এই 'ঝি ঝি ধরা' অনুভূতিটিকে তিন ধাপে বিভক্ত করা যায়।
প্রথমত, চাপ প্রয়োগ হওয়ার মিনিট খানেক পর তিন থেকে চার মিনিটের জন্য স্থায়ী হওয়া অস্বস্তিকর অনুভূতি, যেটিকে 'কমপ্রেশন টিঙ্গলিং' বলা হয়।
এই অনুভূতিকে অনেকে এমনভাবে বর্ণনা করেছেন যেন, তাদের 'চামড়ার ভেতরের অংশে পিপড়া দৌড়াদৌড়ি করছিল।'
দ্বিতীয় ধাপটি সাধারণত শুরু হয় দশ মিনিট পর। এই ধাপে হাতে বা পায়ে অসাড়তা বোধ হয় এবং যতক্ষণ স্নায়ুর ওপর চাপ থাকে ততক্ষণ এই অনুভূতি থাকে।
তৃতীয় ও শেষ ধাপটি শুরু হয় চাপ অপসারণ করার পর। এই অংশটিকেই ইংরেজিতে 'পিনস অ্যান্ড নিডলস' বলা হয়।
প্রথম দুই ধাপের তুলনায় এই ধাপটি অপেক্ষাকৃত বেশি যন্ত্রণাদায়ক, তবে সাধারণত এই ধাপে যন্ত্রণা বা ব্যাথার চেয়ে ভিন্ন ধরণের উত্তেজনা বোধ করে বলেই জানিয়েছেন অধিকাংশ মানুষ।
কিছুটা ব্যথা বা যন্ত্রণার অনুভূতি থাকলেও তার পুরোটাই শারীরিক।
এই অনুভূতি কিছুক্ষণের মধ্যেই স্তিমিত হয়ে গেলেও ঠিক কোন জায়গায় এই অনুভূতির সূচনা হয়েছিল বা কোথায় শেষ হয়, সেটি নির্দিষ্টভাবে বলতে পারে না মানুষ।
ঝি ঝি ধরলে সাময়িকভাবে অসাড় হয়ে যাওয়া অঙ্গটি টানটান করে রাখলে সাধারণত কিছুক্ষণের মধ্যে দ্রুত ঐ অঙ্গ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যায়।
হাত-পায়ে ঝি ঝি ধরলে করণীয়:-
মাথা এপাশ থেকে ওপাশে দুলান
অনেক সময় বেকায়দায় বসা বা শোয়ার জন্য আমাদের হাতে পায়ে ঝি ঝি ধরে যায়। সাধারণত ঘাড়ের নার্ভে চাপ পড়ার জন্য হাতে ঝি ঝি ধরে। হাতে ঝি ঝি ধরলে আপনার মাথা এপাশ থেকে ওপাশে দুলান। এত ঝি ঝি ধরলে আস্তে আস্তে কমে যাবে।
এক মিনিটে
হাতে বা পায়ে ঝি ঝি ধরলে এপাশ থেকে ওপাশে দুলান এক মিনিট সময় নিয়ে। দেখবেন এক মিনিটেরও কম সময়ে ঝি ঝি কমে যাবে।
দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ হাঁটুন
ঘাড় এদিক-ওদিক করার মাধমে ঘাড়ের মাসল শিথিল হয়। পায়ে ঝি ঝি ধরে শরীরের নিচের অংশের মাসল সংকোচনের জন্য। এক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ হাঁটা শুরু করুন, ঝি ঝি চলে যাবে।
দীর্ঘসময় ঝি ঝি ধরার মত উপসর্গ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। এস এম সিয়াম হাসানের মতে, ঝি ঝি ধরার মত উপসর্গ যদি দীর্ঘসময় ধরে হতে থাকে তাহলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন। এছাড়া কোনো অঙ্গে নিয়মিত ঝি ঝি ধরার ঘটনা ঘটলে বা বারবার ঝি ঝি ধরার ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
আরপি/আআ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: