শীত-গরমের লুকোচুরি, সতেজ থাকবেন কিভাবে?
জলবায়ুর পরিবর্তন এবং প্রকৃতির খেয়ালে কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে ঋতু। এর ফলে হেমন্ত এবং বসন্তের প্রকৃত রূপ প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। এখনো শীতকাল আসার দুই মাস বাকি থাকলেও হেমন্তেই শুরু হয়েছে শীতের আমেজ। তবে আনুষ্ঠানিকতার আগেই হেমন্তে শীত এসে কড়া নাড়ছে প্রকৃতিতে। এই দিনগুলোতে নিজেকে অনন্য করে তুলতে ত্বকের লাবণ্য বজায় রাখাটা খুবই জরুরি।
মসৃণ ঝকঝকে ত্বক দেখতেই শুধু সুন্দর নয়, সুখী মনের পরিচায়ক। নিয়মিত ত্বক ও চুল পরিচ্ছন্ন রাখলে অর্ধেক যত্নই সম্পন্ন হয়ে যায়। এই সময়টার যত্ন সবচেয়ে ভালো হয় ত্বকের জন্য যদি ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করেন। শীতে ত্বক সম্পূর্ণভাবে ক্ষতি হওয়ার আগেই হাইড্রেটেড করা শুরু করতে হবে। তাই একদম সহজ উপায়ে, ঘরোয়া পদ্ধতিতে এমন কিছু ফেসপ্যাক তৈরি করে নিতে পারেন যেগুলো বেশ জরুরি, সহজলভ্য ও ত্বকে পুষ্টিও জোগাবে।
হেমন্তের প্রকৃতিতে অনুভূত হয় এক অন্যরকম শীতলতা। ভোরটা শুরু শীতল সূর্যের মোহনীয় আলোয়। চারদিক ঘিরে কুয়াশার চাদর। শিশির জমছে ফসলের খেত আর ঘাসের ডগায়। সারাদিন গরম অনুভূত হলেও সন্ধ্যার পর থেকে হালকা হিমেল হওয়া। এ যেন শীত-গরমের লুকোচুরি। ভোরের শিশির আর সন্ধ্যার কুয়াশা জানিয়ে দিচ্ছে শীত আসছে। আর সঙ্গে তো আছেই সূক্ষ্ম, রুক্ষ ত্বক, ঠোঁট ফাটা, চামড়া কুঁচকে যাওয়াসহ ত্বকের নানান সমস্যা। আবহাওয়ার পাশাপাশি আমাদের ত্বকের নানা পরিবর্তনও যেন বুঝিয়ে দেয় এবার শীতকালীন যত্নের প্রয়োজন। চলুন জেনে নেওয়া যাক
আরও পড়ুন: ঝাল খাবার খাওয়ার পর স্বস্তি মিলবে কিসে?
গোলাপজলের মাস্ক
গোলাপজল ১ চা চামচ, গ্লিসারিন ১ চা চামচ, সঙ্গে একটি ভিটামিন-ই ক্যাপসুল। এভাবে মিশিয়ে একটা কৌটায় রেখে দিয়ে সারাদিনে দু-একবার ব্যবহার করতে পারেন। এতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করবে।
কফি মাস্ক
এটি আসলে জাদুর মতন কাজ করে। মুখের কালো ছোপ ছোপ দাগও নিরাময় করে। এক চামচ কফি, সঙ্গে অল্প পরিমাণ মধু মুখে দিয়ে রাখুন। ১৫ মিনিট পর একটু ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। পরিবর্তনটা নিজেই বুঝতে পারবেন।
লেবুর চিনির স্ক্রাব
ত্বকের ওপরে জমে থাকা মৃত কোষকে সরাতে চিনির স্ক্রাবের বিকল্প নেই। এক চামচ লেবুর রসের সঙ্গে চিনি মিশিয়ে মুখে, ঘাড়ে, গলায় ঘষে নিন। এভাবে করে ৫-৭ মিনিট করুন। এবার মুখ ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বকের মরা কোষগুলো উঠে গিয়ে ত্বককে সজীব দেখাবে।
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার
শীতে সবচেয়ে বড় সমস্যা ত্বক শুষ্ক হয়ে প্রাণহীন দেখায়। আর তীব্র শীত পড়ার আগে এমনটা আরও বেশি হয়। তাই ত্বককে ভেতর থেকে মসৃণ ও কোমল রাখতে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। বিশেষ করে রাতে শোয়ার সময় এটা মিস করা যাবে না। আর সব সময় কেনাটা ব্যবহার না করেও ঘরে নারিকেল তেল দিয়ে এটা তৈরি করতে পারেন।
নজর দিন খাওয়া-দাওয়ায়
এ সময় প্রচুর লেবু, কমলালেবু পাওয়া যায়। এগুলোর জ্যুস বানিয়ে খেতে পারেন। ভিটামিন-সি যুক্ত ফলে ত্বকের ও ঠোঁটের ফাটা সমস্যা একেবারে থাকে না। আবার সবুজ শাকসবজি বেশি খেতে হবে। বেদানায় থাকে ইলজিক অ্যাসিড যা ত্বককে ইউভি রশ্মি থেকে রক্ষা করে। তাই প্রতিদিন কিছুটা বেদানা রাখতে পারেন খাওয়ার তালিকায়। এ ছাড়া স্ট্রবেরি, পেঁপে, কমলালেবু ত্বককে ক্রমাগতভাবে পরিষ্কার ও উজ্জ্বল করে।
আরও পড়ুন: শীতে খুশকিমুক্ত থাকতে করণীয়
সানস্ক্রিনের ব্যবহার
রোদটা আরাম লাগে গায়ে এ সময়। তাই বলে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা ভুলে যাওয়া চলবে না। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা সব ঋতুতেই ব্যবহার করা যায় এমন একটি সানস্ক্রিন বেছে নিন। গ্রীষ্মের চেয়েও এ সময়ের রোদে স্কিন বেশি পুড়ে যায়।
ছিমছাম হাত-পা
হাত ও পায়ে রোজই স্ক্রাব করা প্রয়োজন। রাস্তার ধুলাবালি সবচেয়ে বেশি লাগে পায়ে। তবে পায়ের তলা আর পায়ের পাতার জন্য দু ধরনের স্ক্রাব বেছে নিন। পায়ের তলার জন্য মসুর ডাল বা বেসন খুবই ভালো। আর পায়ের ওপরের জন্য নিন লেবুর রসে চিনি মিশিয়ে।
আরপি/এসআর-১৩
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: