পাঁচবিবিতে আদিবাসী নারীর জমি দখল, সাংবাদিকদের ওপর ছাত্রলীগ নেতার হামলা
জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে ছাত্রলীগ নেতা ও তার ক্যাডার বাহিনীর হামলায় ৪ সাংবাদিক আহত হয়েছেন। স্থানীয়রা ও সংবাদকর্মীরা আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান।
শনিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে উপজেলার ফিচকারঘাট পিরপাল এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা হলেন, মাছরাঙা টিভির জেলা সংবাদদাতা আল মামুন, দৈনিক বাংলাদেশ সমাচারের জেলা প্রতিনিধি জুয়েল শেখ, বাংলার দুতের জেলা প্রতিনিধি আব্দুর রাজ্জাক ও সংবাদ সারাবেলার পাচঁবিবি প্রতিনিধি বাবুল হোসেন।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার নাম মাহমুদুল হাসান। তিনি মহিপুর হাজী মহসিন সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।
ভুক্তভোগীরা জানান, ফিচকাঘাট পিরপাল এলাকায় এক আদিবাসী নারীর জমি দখল করে ১৪৪ ধারা অমাণ্য করে ভেকু দিয়ে মাটি উত্তোলন করছিলেন ছাত্রলীগ নেতার নাম মাহমুদুল। আদিবাসীদের কাছ থেকে এমন অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে যান ওই সাংবাদিকরা। সেসময় ভিডিও করা ও ওই জমির কাগজ দেখার সময় ছাত্রলীগ নেতা মাহমুদুল ও তার ক্যাডার বাহিনী অতর্কিতভাবে তাদের উপর হামলা করে এবং লাঠিসোঠা দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে মারপিট করে।
এক পর্যায়ে সাংবাদিকদের মোবাইল ও পরিচয়পত্র ছিনিয়ে নেন তারা। স্থানীয় লোকজন ও সাংবাদিকরা খবর পেয়ে তাদের উদ্ধার করে পাঁচবিবি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। পরে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক আল মামুন বলেন, আমরা আদিবাসীর কাছ থেকে অভিযোগ পাই যে, তার জমি অবৈধভাবে দখল করে ১৪৪ ধারা অমান্য করে ছাত্রলীগ নেতা মাহমুদুল মাটি উত্তোলন করছিলেন। পরে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ছবি তুলে সেই জমির কাগজপত্র দেখছিলাম। এসময় কিছু বোঝার আগেই মাহমুদুল তার ক্যাডার বাহিনীসহ আমাদের উপর হামলা করে এলোপাতাড়ি মারপিট করে মোবাইল ফোন, পরিচয় পত্র ছিনিয়ে নেয়।
জয়পুরহাট সাংবাদিক ঐক্য জোটোর সাধারণ সম্পাদক রাশেদুজ্জামান রাশেদ বলেন, সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিকদের উপর হামলা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায়না। অবিলম্বে হামলাকারিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
পাঁচবিবি উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি রুহুল আমিন বলেন, সাংবাদিক সমাজের দর্পন। অন্যায়, অনিয়ম তুলে ধরায় তাদের কাজ। কিন্তু এ কারণে যদি সাংবাদিকদের উপর হামলা হয় তাহলে সাংবাদিকরা কোথায় যাবে। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে পাঁচবিবি থানার অফিসার ইনচার্জ ফয়সাল বিন আহসান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। মামলার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানতে চাইলে সাংবাদিকদের মারধরের বিষয়টি স্বীকার করেছেন ছাত্রলীগ নেতা মাহমুদ হাসান। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের মারধরের ঘটনা ঘটে নি, সামান্য ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। আমি সে সময় ঘটনাস্থলে ছিলাম না। স্থানীয়দের সাথে সাংবাদিকদের বাক বিতণ্ডার এক পর্যায়ে আমি উপস্থিত হলে সাংবাদিকরা আমার সাথেও বাক বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।তবে জমি দখলের সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়টি অস্বীকার করেন।
আরপি/যেডএফ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: