রাবিতে নিয়োগ বাণিজ্যের প্রমাণ নিয়ে ইউজিসিতে চাকরি প্রত্যাশী
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে চাকরি প্রত্যাশী মো. নুরুল হুদার স্ত্রীর সঙ্গে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়ার দর কষাকষির একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়। নুরুল হুদা অভিযোগ করেন, উপ-উপাচার্য জাকারিয়া নিয়োগের জন্য তার স্ত্রীর মাধ্যমে তার কাছে টাকা চেয়েছিলেন।
এবার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) নুরুল হুদা শিক্ষক নিয়োগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দুর্নীতির তথ্য-প্রমাণ জমা দিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে ইউজিসিতে চলমান তদন্ত কার্যক্রমের প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। সাক্ষাতে তিনি এসব তথ্য-প্রমাণ জমা দেন।
জানতে চাইলে নুরুল হুদা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে ইউজিসিতে চলমান তদন্ত কার্যক্রমের প্রেক্ষিতে আমাকে ডাকা হয়। তদন্ত কমিটির নিকট শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্যের সকল তথ্য-প্রমাণ জমা দিয়েছি। কমিটির সদস্যরা আমার সঙ্গে সামনাসামনি কথা বলেছেন।
তিনি আরও বলেন, সাধারণত আদালতে মামলার কার্যক্রম যেভাবে পরিচালিত হয় সেভাবেই ইউজিসির তদন্ত কমিটি কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। অর্থাৎ আদালতে বিচারকার্য, সাক্ষ্যপ্রমাণ ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের মতোই হয়েছে। সেখানে নিজের বক্তব্যসহ সকল তথ্য-প্রমাণ জমা দিয়েছি। পাশাপাশি নিয়োগ বাণিজ্যের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিষয়েও জানিয়েছি। আশা করছি ইউজিসি অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
নুরুল হুদা রাবির আইন বিভাগের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। তাঁর বাড়ি লালমনিরহাট উপজেলায়। তিনি স্নাতকে সিজিপিএ ৩.৬৫ ও স্নাতকোত্তরে ৩.৬০ পান। তিনি আইন অনুষদে সেরা হয়ে ২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয় স্বর্ণপদক এবং ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক পান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে প্রভাষক পদে নিয়োগের আবেদন করেন।
জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৩ নভেম্বর আইন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হয়। ১৭ নভেম্বর সিন্ডিকেট সভায় নিয়োগ অনুমোদিত হয়। এর পরদিন ১৮ নভেম্বর নিয়োগপ্রাপ্তরা বিভাগে যোগদান করেন।
পরে গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়ার ফোনালাপের অডিও ফাঁস হয়। এতে নিয়োগের জন্য নুরুল হুদার স্ত্রীর সঙ্গে তাকে কথা বলতে শোনা যায়। ফোনালাপে নুরুল হুদার স্ত্রীকে অধ্যাপক জাকারিয়া বলেন, ‘আচ্ছা মা, একটা কথা বলতো, আমার খুব শুনতে ইচ্ছা যে, এখানে তোমরা কত টাকা দেওয়ার জন্য রেডি?'
এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে নুরুল হুদা সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেন, উপ-উপাচার্য জাকারিয়া ২০১৮ সালের ১৩ নভেম্বর সাক্ষাৎকারের আগে তার স্ত্রীর মাধ্যমে তার কাছে টাকা চেয়েছিলেন। তিনি ১৬ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানান। কিন্তু সবকিছু জানালেও উপাচার্য এই বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেননি।
আরপি/আআ
বিষয়: রাবি নিয়োগ বাণিজ্য ইউজিসি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: