রাজশাহী শনিবার, ২৭শে এপ্রিল ২০২৪, ১৫ই বৈশাখ ১৪৩১


ন্যাশনাল সাইন্স ফেস্ট

রাজশাহী কলেজে ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের অভিনব আবিষ্কার


প্রকাশিত:
৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২১:৫২

আপডেট:
২৭ এপ্রিল ২০২৪ ১৪:৪৫

ছবি: রাজশাহী পোস্ট

কেউ এসেছে শিক্ষকের হাত ধরে, কেউবা মা-বাবাকে সঙ্গে নিয়ে। বন্ধুদের সঙ্গেও এসেছে অনেকে। কেউ নিয়ে এসেছে তার উদ্ভাবনী প্রকল্প, কারও বগলে পোস্টার আর কেউ কেউ উপস্থাপন করবে বৈজ্ঞানিক নিবন্ধ। স্কুল-কলেজের ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের কত কী যে আবিষ্কার! ১ ও ২ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী কলেজ মাঠে বসেছিল এমন খুদে বিজ্ঞানীদের মিলনমেলা। রাজশাহী কলেজ সাইন্স ক্লাবের আয়োজনে সেখানে হয়েছে দুই দিনব্যাপী রাজশাহী কলেজ সপ্তম ন্যাশনাল সাইন্স ফেস্ট-২০২৪।

আগামী দিনে বিজ্ঞানের উৎকর্ষ সাধন ও অনন্যতা উপলব্ধি করে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতাকে প্রকাশের সুযোগ করে দিতে রাজশাহী কলেজ সাইন্স ক্লাব এ মেলার আয়োজন করে। মেলায় প্রধান অতিথি অতিথি উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও প্রযুক্তিবিদ ও বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের অন্যতম অগ্রদূত প্রফেসর মনির হাসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন দেশ বরেণ্য উদ্ভিদ বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. এম মঞ্জুর হোসেন।

বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ১৪৮ জন ক্ষুদে বিজ্ঞানী মেলায় মোট ৩২টি প্রকল্প উপস্থাপন করে। এসব প্রকল্পের মধ্যে- বর্জ্য পদার্থ দ্বারা বিদ্যুৎ উৎপাদন ও পরিকল্পিত নগরায়ন,স্মার্ট কৃষি ব্যবস্থাপনা, ব্যবহার্য পানি পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ ও সাগরের পানি থেকে শক্তি উৎপাদন, বায়োগ্যাসের বর্জ্য মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার অন্যতম।

মেলা ঘুরে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি স্টলের সামনেই কৌতূহলীদের ভিড়। বিভিন্ন বয়সী মানুষ স্টল ঘুরে দেখছেন। নিজেদের উদ্ভাবনের খুঁটিনাটি বুঝিয়ে বলছেন উদ্ভাবকরা। এরপরও প্রশ্ন! সব প্রশ্নের জবাব দিতে হচ্ছিল, তবুও ক্লান্তি নেই ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের। 

মেলায় শেখ রাসেল মডেল স্কুলের একটি স্টলে গিয়ে দেখা যায় , গ্রীণ সিটি নামের একটি পরিকল্পিত শহরে মডেল। যেখানে রয়েছে নির্দিষ্ট দূরুত্বে কলকারখানা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আবাসিক এলাকা ও রাস্তার পাশে রয়েছে বর্জ্য সরবাহের জন্য ডাস্টবিন। সেখান থেকে বর্জ্য পরিবহণের জন্য রয়েছে বর্জ্য সংরক্ষনাগার। কী হবে এসব বর্জ্য দিয়ে? জানতে চাইলে চমৎকার শুরু করে ইসরাতুল আজমী এশা। একে একে আত্মবিশ্বাসের সাথে ব্যাখ্যা করে চিত্র লেখা রঞ্জন, রিফা সানজিদা সাবা ও আব্দুল্লাহ সাফি। তাদের ব্যাখ্যা থেকে বেরিয়ে আসে বর্জ্যের বহুবিধ ব্যবহার।

জানা গেল, বর্জ্য সংরক্ষনাগারে জমা করা বর্জ্য দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। যা বায়ু দূষণ রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে হবে আধুনিক পরিকল্পিত বাসযোগ্য গ্রীণ সিটি ।

পাশেই শিমুল মেমোরিয়াল নর্থ সাউথ স্কুল এন্ড কলেজের একটি টেবিলে স্মার্ট কৃষির মডেল। উদ্ভাবক ইকবাল হাসান মাহমুদ, সানোয়ার হোসেন ইমন, রুফাইদা রিজভী ও তাহমিনা আঞ্জুম। জানতে চাইলে তারাও প্রকল্প কিভাবে কাজ করবে তা দেখিয়ে দেয়।

সে অনুযায়ী, জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে কৃষি জমিতে ঘর-বাড়ি তৈরীর সমস্যা সমাধানে তৈরী করা হয়েছে ইনডোর ফ্যামিলি সিস্টেম। এই সিস্টেমের মাধ্যমে ঘর-বাড়ির মধ্যেই ফসল উৎপাদনের পাশাপাশি মাছ উৎপাদন করা যাবে। পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগে খাদ্য সংকট হলে মোকাবেলা সক্ষম হবে। এছাড়াও জমিতে বীজ ছিটানোর জন্য তৈরি করা হয়েছে ড্রোন। 

এ বিজ্ঞান মেলায় আরও ছিল স্পীড ক্লাবিং, প্রোবলেম সলভিং, ওয়াল ম্যাগাজিন, সায়েন্টিফিক পেইন্টিংসহ অনলাইনে- সায়েন্টিফিক ফটোগ্রাফি ও রিসার্চ পেপার সাবমিশন। আরও ছিল প্রকৃতি সম্পর্কিত অনুসন্ধানী মনকে জাগিয়ে তুলতে ইকো ইনফরমেশন কোয়েস্ট। সব মিলিয়ে বিজ্ঞানমনস্ক করার কার্যকর একটি উদ্যোগ। শনিবার বিকেলে পুরস্কার বিতরণীর মধ্য দিয়ে রাজশাহী কলেজ সপ্তম ন্যাশনাল সাইন্স ফেস্ট শেষ হয়েছে।

 

 

আরপি/এসআর



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top