রাজশাহী শনিবার, ১২ই এপ্রিল ২০২৫, ২৯শে চৈত্র ১৪৩১


চাঁদা দাবির অভিযোগে রুয়েট ছাত্রলীগ নেতাসহ আটক ৩


প্রকাশিত:
৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৬:০৪

আপডেট:
১২ এপ্রিল ২০২৫ ০১:৩১

ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসা এক শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে চাঁদা দাবির অভিযোগে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) এক ছাত্রলীগ নেতাসহ তিন শিক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ।

বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর দায়ের করা মামলায় ওই তিনজনকে আটক দেখানো হয়। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার রাতে মতিহার থানা সংলগ্ন সুইটের মোড় থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলেন, রুয়েট ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক শাহ আলম রাতুল (২৪), নূর মোহাম্মদ নাবিল (২৩) ও কামরান সিদ্দিক রাশেদ (২৩)। তিনজনই বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিকেল অ্যান্ড ফুড প্রসেসিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী। তারা শহীদ শহিদুল ইসলাম হলের বাসিন্ধা।

ভুক্তভোগী নাজমুল হাসান রাজশাহীর ইনস্টিটউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি ফরিদপুরে বলে জানা গেছে।

মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত পৌনে ১০টার দিকে নাজমুল তার বান্ধবীকে নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইবলিশ চত্বর সংলগ্ন আমতলার পুকুর পাড়ে বসে গল্প করছিলেন। এসময় দুটি মোটরসাইকেল যোগে ঘটনাস্থলে আসেন রাতুল, নাবিল ও রাশেদ। তারা নাজমুলের কাছে পরিচয় জানতে চায়। নাজমুল ক্যাম্পাসে ঘুরতে এসেছে জানালে, ওই তিনজন নাজমুলের বান্ধবীকে আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে চলে যেতে বলে। ভয়ে নাজমুলের বান্ধবী রিকশায় ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে ওই তিনজন নাজমুলকে মোটরসাইকেলে তুলে রুয়েটে নিয়ে যায়। সেখানে তার কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন আসামিরা।

নাজমুল চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে অভিযুক্তরা তাকে মতিহার থানা সংলগ্ন সুইটের মোড়ের একটি গ্যারেজে নিয়ে যায়। সেখানে নাম না জানা আরও দুই ব্যক্তি তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়। তারা বিভিন্নভাবে হুমকি দিতে থাকে। এক পর্যায়ে নাজমুল বাধ্য হয়ে তার কয়েকজন বন্ধুকে টাকার জন্য ফোন করে। কিন্তু অনেক সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও টাকা না পাঠানোয় নাজমুলকে পাইপ দিয়ে মারধর করে অভিযুক্তরা। পরবর্তীতে নাজমুল বাধ্য হয়ে তার বাবাকে কল করেন। এসময় অভিযুক্তরা তার বাবার সঙ্গে কথা বলে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। এরই মধ্যে নাজমুলের বন্ধুরা অপহরণে বিষয়টি পুলিশকে জানায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নাজমুলকে উদ্ধার করে এবং রাতুল, নাবিল ও রাশেদকে গ্রেপ্তার করে।

মতিহার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবির ঘটনায় আমরা তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছি। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ৩৪২,৩৬৫,৩৮৫,৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করছেন। এই মামলায় আসামিদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

রুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী মাহাফুজুর রহমান তপু বলেন, অপহরণের ঘটনায় আমাদের ছাত্রলীগের এক নেতা জড়িত। আমরা ইতোমধ্যে তাকে সংগঠনকে থেকে অব্যহতি দিয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে সুপারিশ করেছি ওই নেতাকে ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিস্কারের জন্য।

রুয়েটের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক সেলিম হোসাইন বলেন, ‘আমরা বিষয়টি ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের কাছ থেকে মৌখিকভাবে জেনেছি। তার কাছ থেকে লিখিতভাবে নিয়ে শৃঙ্খলা কমিটিতে বিষয়টি আলোচনা করবো। সেখানে অভিযুক্তদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

 

আরপি/এমএএইচ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top