রাজশাহী শনিবার, ২০শে এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১


এমপি বাদশাকে রাবিতে অবাঞ্ছিত ঘোষণা


প্রকাশিত:
২৩ অক্টোবর ২০২২ ২৩:০০

আপডেট:
২০ এপ্রিল ২০২৪ ০০:২৫

ফাইল ছবি

সম্প্রতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী শাহরিয়ারের মৃত্যুর ঘটনায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মানববন্ধনে রাজশাহী-২ আসনের এমপি ফজলে হোসেন বাদশা রাবি শিক্ষার্থীদের সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান করায় তাকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছে শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (২৩ অক্টোবর) ফজলে হোসেন বাদশার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রাবি শিক্ষার্থীরা এই ঘোষণা দেয়।

ওই মানববন্ধনে ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ‘আমরা হাসপাতালের পক্ষ থেকে বলতে চাই—এটা প্রমাণিত যে ছেলেটি মারা গেছে, তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে, পালস তার ছিল না– এটা প্রমাণিত হয়ে গেছে। আর এর জন্য কোনো ডাক্তারদের আর নতুন সার্টিফিকেট দরকার নাই। হত্যা করে আপনারা এনেছিলেন। আর পরিবারকে হুমকি দিয়ে আপনারা ডেড নিয়ে গেছেন। ইউথ আউট পোস্টমার্টেম। আমরা হাসপাতালের পক্ষ থেকে মামলা ডায়ের করেছি। আমরা চাই যে পোস্টমার্টেম হোক কবর থেকে ডেটবডি তুলে পোস্টমার্টেম করা হোক।’

এসময় তিনি পুলিশকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘সেই রাতে কারা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসেছিল তাদের ভিডিও বহুজায়গায় আছে। তাদের চিহ্নিত করা হোক, তারা কে? তাদের কি পরিচয়? তারা কি উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছিল? কেন ইন্টার্নি ডাক্তারদের ওপর তারা হামলা চালিয়েছে? আমাদের এই হাসপাতাল শুধু রাজশাহী জেলার চিকিৎসা করে না। দশটি জেলার সাধারণ মানুষের চিকিৎসা করে এই হাসপাতাল। আজকে আমি আমাদের সকল সিনিয়র প্রফেসর, সমস্ত চিকিৎসক, সমস্ত নার্স সেবিকা, কলেজের প্রিন্সিপাল এবং ডাইরেক্টর সাহেব, আমাদের পরিচালনা কমিটি সকলের পক্ষ থেকে আমরা বলছি, যারা হামলা চালিয়েছে তাদেরকে খুঁজে বের করার জন্য একটা তদন্ত কমিটি গঠন করা হোক। পুলিশের পক্ষ থেকে গোয়েন্দা বিভাগের পক্ষ থেকে এবং তাদের ছবি আছে। তাদেরকে বের করে নিয়ে এসে তাদের মুখ থেকে সেই স্বীকারোক্তি আদায় করা হোক। হত্যাকারী কে? অন্যায়কারী কে? কেন তারা এই ষড়যন্ত্রের ফাঁদ পেতেছিলো?’

তবে তার এই বক্তব্যকে উস্কানি হিসেবে দেখছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, ‘রাবি শিক্ষার্থী শাহরিয়ারের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে ফজলে হোসেন বাদশা এমপির বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই। দায়িত্বশীল চেয়ারে বসে উনি সরাসরি শিক্ষার্থীদের খুনি বানিয়ে দিলেন। আমরাও চেয়েছিলাম ময়নাতদন্ত হোক কিন্তু শাহরিয়ারের পরিবারের পক্ষ থেকে বারবার না করা হয়েছে। এমন উস্কানিমূলক বক্তব্যে আমরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা তার প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করছি। সেই সঙ্গে উস্কানিমূলক বক্তব্যের কারণে যতক্ষণ ক্ষমা না চাইবেন, তাকে মতিহারের সবুজ চত্বরে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হলো।’

এর আগে, বুধবার (১৯ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে রাবির শহীদ হবিবুর রহমান হলের তৃতীয় তলার বারান্দা থেকে পড়ে এমজিএম শাহরিয়ার নামের এক শিক্ষার্থীকে গুরুতর আহত অবস্থায় রামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, রামেকে নেওয়ার ৩৫ মিনিট পর বিনা চিকিৎসায় আহত শাহরিয়ারকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে রামেক হাসপাতালের একটি ওয়ার্ডের সামনে ও পরিচালক কক্ষের সামনে ভাঙচুর করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় ইন্টার্ন চিকিৎসক, হাসপাতাল স্টাফরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ। হামলায় ৫ শিক্ষার্থী আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের মধ্যে একজনের মাথা ফেটে গেছে ও আরেকজনকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। অন্যদিকে ইটার্ন চিকিৎসকদের দাবি রাবি শিক্ষার্থীরা তাদেরকে লাঞ্ছিত করেছেন।

সূত্র: ঢাকা মেইল

 

 

 

 

আরপি/এসআর-০২



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top