রাজশাহী শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১


পোষ্য কোটার যৌক্তিকতা কোথায়


প্রকাশিত:
১৬ অক্টোবর ২০২২ ০৪:২৯

আপডেট:
২৬ এপ্রিল ২০২৪ ১১:০৫

সংগৃহিত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটায় ভর্তি হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানরা। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় বিশেষ কোটায় ৬২১ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ২১৬টি আসনে ভর্তি হবে পোষ্য কোটায়।

প্রশাসন বলছে, আগে থেকেই এই কোটা রাখার রীতি থাকায় হঠাৎ করে বাদ দেওয়া যাবে না। এতে হতাশা প্রকাশ করছেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও প্রতিবাদ করছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পোষ্য কোটায় ন্যূনতম পাস নম্বর পেলেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে আবার মাঝে মাঝে অকৃতকার্য হয়েও ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে। তাই পোষ্য কোটা রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা।

সিলেট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে আসা ফারহান সুহেল নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি। কিন্তু যারা পোষ্য কোটায় ভর্তি হচ্ছে, তারা পরীক্ষার আগেই সিট পাওয়ার সম্ভাবনা পেয়ে থাকে। এটা অবিচার করা হচ্ছে মেধাবী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। দেশের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা রাখার কোনো যৌক্তিকতা আমার চোখে পড়ে না। বরং একজন মেধাবী শিক্ষার্থীর জন্য এটা একটা অভিশাপের মতো। ভালো মার্ক পেয়েও একজন মেধাবী শিক্ষার্থী সাবজেক্ট পায় না। সেখানে আরেকজন তার বাবা-মায়ের জন্য সিট পেয়ে যাচ্ছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী বকুল হোসেন বলেন, ‘দেশের সিংহভাগ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্যান্য কোটার মারপ্যাঁচে ‘পোষ্য কোটা’ দীর্ঘ দিন ধরেই চলে আসছে। ঠিক কোন যুক্তিতে, কোন আইনের বলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চাকরিরত শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের এই ‘অনৈতিক’ সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, তার কোনো স্বচ্ছ ব্যাখ্যা নেই। বরং পোষ্য কোটায় আসা এসব ছেলেমেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাস করে সেখানেই শিক্ষক হচ্ছেন, কর্মকর্তাও হচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয় একটি গবেষণার জায়গা হলেও যারা পোষ্য কোটায় ভর্তি হয়, তারা ঠিকমতো পাসই করতে পারে না। তারা গবেষণা করবে কেমনে?’

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা এম তারেক নূর বলেন, ‘কোটা বিষয়টা আগে থেকেই চলে আসছে। হঠাৎ করে এটা বাদ দেওয়া যায় না। এখনো অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা আছে। কোটামুক্ত কোনো শিক্ষার্থীকে বঞ্চিত করে আমরা কোটায় ভর্তি করায় না। কোটা বাদ দেওয়ার বিষয়ে পরীক্ষা উপকমিটির এখনো পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে ভবিষ্যতে কোটায় সিট কমানোর কোনো সিদ্ধান্ত আসতেও পারে।’

প্রসঙ্গত, গুচ্ছ ছয় বিশ্ববিদ্যালয়েই পোষ্য কোটা নেই। কৃষি গুচ্ছের অন্তর্ভুক্ত আটটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আসন (১১১৬) বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা নেই। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়েও পোষ্য কোটা নেই।

আরপি/ এসএইচ  ০৫



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top