রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১


সিজিপিএ বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে রামেক শিক্ষার্থীরা


প্রকাশিত:
৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:১৮

আপডেট:
২৫ এপ্রিল ২০২৪ ২১:০২

ছবি: সংগৃহীত

ক্যারি অন বহাল রেখে সিজিপিএ বাতিলের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্দোলন শুরু করেছেন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের (রামেক) শিক্ষার্থীরা। সিজিপিএ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত তাদের এ আন্দোলন চলবে বলেও ঘোষণা দেন তারা।

মঙ্গলবার (০৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টা থেকে দুপুর পর্যন্ত ক্লাস বর্জন করে ক্যাম্পাসের মূল ফটকের বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন রামেকের এমবিবিএস ৬৩ ও বিএডিসি ৩৩ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।

এসময় শিক্ষার্থীদের ‘ক্যারি অন বাহাল চাই, সিজিপিএ বাতিল চাই’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে শোনা যায়।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, ২০২১-২০২২ সেশনে হঠাৎ করে বাংলাদেশ মেডিক্যাল এন্ড ডেন্টাল (বিএমডি)-এর ক্যারি অন বাতিল করে সিজিপিএ চালু করেছে। এ প্রক্রিয়ায় একজন শিক্ষার্থী কোনো সাবজেক্টে ফেল করলে পরবর্তী বর্ষে যেতে পারবে না। তাকে ওই সাবজেক্ট পাস করে বর্ষ পরিবর্তন করতে হবে। সিজিপিএ চালু থাকলে মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হবে যার ফলে শিক্ষার্থীদের মাঝে একটা বৈষম্য সৃষ্টি হবে এবং রেজাল্ট ভালো করার জন্য এক অসুস্থ প্রতিযোগীতা সৃষ্টি হবে।

আবির হাসান, হাসিব, চৈতি, সিমুসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, গ্রেডিং পদ্ধতির কারণে পড়াশোনা শেষ করে চিকিৎসা পেশা শুরু করতেও দেরি হবে। একই সঙ্গে এ, বি ও সি গ্রেড করে ফলাফল ঘোষণা করায় চিকিৎসকদের মধ্যেও বিভেদ তৈরি হবে। এ জন্য গ্রেডিং পদ্ধতি বাতিল করে দ্রুত ‘ক্যারি অন’ পদ্ধতি বহাল রাখার দাবি করছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

কলেজের প্রথম বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী তাসমিয়াহ্ তানজিম তিমু বলেন, ২০২১-২২ সেশনে বিএমডিসি ‌‘ক্যারি অন’ পদ্ধতি বাতিল করে ‘সিজিপিএ’ পদ্ধতি চালু করেছে। এতে বিভিন্ন গ্রেডে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের ফলাফল ঘোষণা করা হবে। এ পদ্ধতিতে কোনো বর্ষে একটি বিষয়ে অকৃতকার্য হলে অন্য বর্ষে উন্নীত হওয়ার সুযোগ নেই। যেটা ‘ক্যারি অন’ পদ্ধতিতেই ছিল। মেডিকেলে এমনিতেই পড়াশোনা বেশি করতে হয়। সেখানে ‘ক্যারি অন’ পদ্ধতি বাতিল হলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অকৃতকার্যের সংখ্যা বেড়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, হতাশায় অনেক শিক্ষার্থী ঝরে যাবে। আত্নহত্যার প্রবনতা বাড়তে পারে। শিক্ষার্থীরা ব্যবহারিক শিক্ষার মাধ্যমে চিকিৎসাবিদ্যা আয়ত্ত করার পরিবর্তে বেশি সিজিপিএ অর্জনের প্রতিযোগিতায় নামবেন। এতে ভালো চিকিৎসকের বদলে বেশি সিজিপিএ পাওয়া চিকিৎসকের ছড়াছড়ি শুরু হবে।

এছাড়া মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট বিভিন্ন গ্রেডে ভাগ করা হবে। এছাড়া কোনো বর্ষে একটি বিষয়ে ফেল করলে অন্য বর্ষে ওঠা যাবেনা। যা ক্যারিঅন কার্যক্রমে ছিলোনা। এতে করে ভবিষ্যত চিকিৎসকদের মাঝে সামাজিক বিভেদ সৃষ্টি হতে পারে। শিক্ষার্থীরা সিজিপিএ বাতিল কর ক্যারিঅন পুনরায় চালু করার দাবি করেন।

এ বিষয়ে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. নওশাদ আলী বলেন, ‘নতুন কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা একটু বিপাকেই পড়বে। তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে যে সিন্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সেটি অবশ্যই যৌতিক কারণ রয়েছে। শিক্ষার্থী না বুঝেই এই আন্দোলন করছে। নতুন এই কারিকুলামে তাদের কোনো অসুবিধা হবে না। এছাড়া সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন সিজিপিএ চালু হয়েছে। সরকার যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তা নিঃসন্দেহে একটি ভালো উদ্যোগ। এর ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের মেধার যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারবে বলে জানান রামেক অধ্যক্ষ।

 

আরপি/এমএএইচ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top