রাজশাহী শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪, ৬ই বৈশাখ ১৪৩১


শিক্ষার্থীদের আনাগোনায় মুখরিত রাবি


প্রকাশিত:
১৬ মে ২০২২ ১০:১৮

আপডেট:
১৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৪:২০

ছবি: রাজশাহী পোস্ট

গত ২২ এপ্রিল থেকে বন্ধ ছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষা কার্যক্রম। পবিত্র শবে কদর, মহান মে দিবস ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে চলমান ছুটি শেষে ক্লাস চালু হচ্ছে সোমবার (১৬ মে)।

২৪ দিনের টানা ছুটি শেষে ফের শ্রেণি কার্যক্রমে ফিরবে শিক্ষার্থীরা। আবারও শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠছে সবুজ ক্যাম্পাস। দীর্ঘ দিনের ছুটি শেষে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রাণের স্পন্দন মতিহারের এই শিক্ষাঙ্গনে ফিরে উদ্বেলিত। যেন প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পেয়েছে উত্তরের অন্যতম এই বিদ্যাপীঠ।

ছুটি কাটিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরেই একে অপরকে জড়িয়ে ধরছেন শিক্ষার্থীরা। ঈদের দুই সপ্তাহ পরেও বাদ যাচ্ছে না শুভেচ্ছা বিনিময়। খোঁজ নিচ্ছেন একে অপরের আত্মীয় স্বজনের। ঈদ স্মৃতি জানানোর ধুম পড়েছে বন্ধু মহলে। একটু দেরিতে হলেও যেন অঘোষিত ঈদ পুনর্মিলনী চলছে ক্যাম্পাসজুড়ে। আড্ডা ও খোশগল্পে পূর্ণ ক্যাম্পাস পেয়ে যেন প্রাণ ফিরেছে সবুজ চত্বরে।

এর আগে গত ৮ মে ক্যাম্পাসের আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। সেদিন থেকেই শুরু হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল কার্যক্রমও। স্বভাবতই আবাসিক হল খোলার পর থেকেই ক্যাম্পাসে আনাগোনা বাড়তে থাকে শিক্ষার্থীদের। দৌঁড়-ঝাপ শুরু হয় ক্লাস-পরীক্ষা আর অ্যাসাইনমেন্টের। এরই মধ্যে ক্যাম্পাসে ফিরেছেন বেশির ভাগ শিক্ষার্থী। ক্যাম্পাসও ফিরে পেয়েছে সেই চিরচেনা রূপ।

সরেজমিনে দেখা যায়, রাবির প্যারিস রোড, জোহা চত্বর, শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিস্তম্ভ, শহীদ মিনার, পরিবহন মার্কেট, লাইব্রেরি চত্বর, টুকিটাকি চত্বর, ইবলিশ চত্ত্বরসহ আশপাশের এলাকাগুলো শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত। গল্প, গান ও হৈ হুল্লোড় হয়ে উঠেছে আড্ডার অন্যতম অনুসঙ্গ। কোথাও আবার গোল হয়ে জমিয়ে তুলেছে বাদ্যযন্ত্রের সুর। কেউবা গলা ছেড়ে গেয়ে যাচ্ছেন লোকসংগীত।

দীর্ঘ ছুটির পরে প্যারিস রোডে হাতে হাত রেখে ঘুরছেন প্রেমিক-প্রেমিকারাও। পিচ ঢালা রাস্তার দুই ধারের আকাশ ছোঁয়া বৃক্ষের পাতা যেন ছায়া হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ইবলিশ চত্বরের পাশের পুকুর পাড়ের বসার আসনগুলোও ফিরে পেয়েছে বসার লোক। কপোত-কপোতীদের খোশগল্পে চিরচেনা রূপ পেয়েছে এটিও।

ক্যাম্পাসের টুকিটাকি চত্বরে চায়ের দোকানে বন্ধুদের সাথে আড্ডায় মগ্ন ছিলেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। জানতে চাইলে রাবি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের নাজমুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ ২ বছর পর আমরা আনন্দের সাথে ঈদ করতে পেরেছি। করোনার প্রকোপে আগের ঈদগুলো সীমিত পরিসরে হওয়ায় খুব বেশি উদযাপনের সুযোগ ছিল না। এবার গ্রামের বাড়িতে পরিবার পরিজনের সাথে ঈদ করে সময়গুলো সত্যিই অনেক ভালো কেটেছে। কিন্তু ক্যাম্পাসে যাদের সাথে আত্মার সম্পর্ক তাদের সাথে এই আনন্দ ভাগাভাগি করতে না পেরে খারাপই লাগছে।

তিনি আরও বলেন, ঈদ শেষে সবাই আবারও আমরা একত্র হয়েছি। একে অপরকে বুকে জড়িয়ে ধরে ঈদের ‘বাসী' শুভেচ্ছা বিনিময় করছি। সবাই মিলে বসে চা খাচ্ছি আর সবার ঈদের স্মৃতিচারণ করছি। বাড়ির রেশ না কাটলেও ক্লাস-পরীক্ষা শুরু হলে ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক জীবন শুরু হবে বলেও জানান এই শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী আমেনা আক্তার সুমনা বলেন, বাড়িতে থাকতে ক্যাম্পাসকে অনেক মনে পড়তো। বন্ধুদের সাথে আড্ডা, ক্লাসরুম, ক্যাম্পাসের প্রকৃতি আর হলে কাটানো সময়কে অনেক মিস করতাম। বারবার ইচ্ছে হতো ক্যাম্পাসে ফিরে যাই। তবে স্বজনদের ছেড়ে বাড়ি থেকে এসে এখন একটু খারাপ লাগছে। তবে ক্লাস শুরু হলে পরিচিত মুখগুলো দেখলে অনাবিল আনন্দে মন ভরে উঠবে বলেও প্রত্যাশা এই শিক্ষার্থীর।

 

 

আরপি/এসআর-০৫



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top