বাঘায় জমি নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে নারীসহ আহত ৮
রাজশাহীর বাঘায় জমি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে তিন নারীসহ ৮ জন আহত হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রে ভর্তি করা হয়েছে। তবে এই ঘটনায় রোববার সকালে বিক্রম কুমার সাহা নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জানা যায়, নারায়নপুর গ্রামের স্বপন সাহা এবং উত্তম সাহার মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। এরজের ধরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এই সংঘর্ষে আহতরা হলেন স্বপন পক্ষে স্বপন সাহা (৬১) তার বোন ছবি সাহা (৪৮), তুষার সাহা (২২), জুতি সাহা (২০)। তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে তুষাদের বাম হাত ও পা লাটির আঘাতে ভেঙ্গে গেছে।
অপর দিকে উত্তম কুমার সাহার পক্ষে আহত হয়েছে তার ছোট ভাই অপুর্ব সাহা (৪২), বিক্রম কুমার জিত (৪৮), বিদ্যুৎ সাহা (৩৫), কবিতা সাহা (৪০)। তাদের মধ্যে অপূর্ব সাহা এবং কবিতা সাহা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেন। বাঁকি দু’জন ভর্তি রয়েছে। শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারী) সকাল ৯ টায় উপজেলার নারায়নপুর গ্রামে এই সংঘর্ষেও ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে স্বপন কুমার সাহা জানান, নারায়নপুর কেন্দ্রীয় পুজা মন্ডপের পাশে পল্লী চিকিৎসক উত্তম কুমার সাহার আমি চাচাতো ভাই। তার সাথে দীর্ঘদিন থেকে জমি এবং পূজা মন্ডপে যাওয়ার রাস্তা নির্মান করা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এই বিরোধকে কেন্দ্র করে বাঘা পৌর সভার মেয়র আব্দুর রাজ্জাক ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ একটি শালিসের মাধ্যমে মিমাংসা করে দেন। সেই মোতাবেক আমি পুর্বের সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে পাঁচ ফিট দুরে নতুন করে কাজ শুরু করেছি।
কিন্তু আমার চাকাতো ভাই উত্তম কুমার সাহাকে তার সীমানা প্রাচীরের প্রবেশ মুখে চার ফিট ভেঙ্গে সরিয়ে নতুন ভাবে প্রাচীর নির্মান করার শালিশের লোকজন নির্দেশ দিলেও উত্তম কুমার সাহা আংশিক ভেঙ্গে তার কাজ বন্ধ রাখেন।
স্বপন সাহা আরো জানান, এই ঘটনা অবগত হয়ে গত তিনদিন পুর্বে বাঘা পৌরসভার মেয়র আব্দুর রাজ্জাক, প্যানেল মেয়র শাহিনুর রহমান পিন্টু, উপজেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়াহেদ সাদিক কবির, বাঘা থানা অফিসার ইনচার্জ নজরুল ইসলাম, হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা অশিত কুমার বাকু পান্ডে ঘটনাস্থল গিয়ে উভয়কে শালিসের রায় মোতাবেক কাজ করার নির্দেশ দেন।
কিন্তু উত্তম কুমার সাহা একজন লেবার নিয়ে নির্মিত প্রাচীরের উপর থেকে এক ফিট ভেঙ্গে কাজ বন্ধ করে দেন। স্বপন সাহা জানান, বিষয়টি শালিসের লোকজনকে জানার পর আমাকে পুর্বের জায়গায় প্রাচীর নির্মানের অনুমতি দেন। সে মোতাবেক শনিবার নতুন করে কাজ শুরু করতে গেলে আমাদের উপর আক্রমন করা হয়।
এদিকে উত্তম কুমার সাহা দাবি করে বলেন, আমাদের চলাচলের রাস্তা দখল করার জন্য আমার চাচাতো ভাই স্বপন সাহা রাজমিস্ত্রী দ্বারা বেজ খনন করছিল। সেই সময় তাদের সীমানা দখল করে বেজ তৈরি করতে নিষেধ করা হয়। সে সময় তারা আমাদের আঘাত করে। অন্যরা এগিয়ে আসলে তাদেরকেও মারধর করে জখম করা হয়েছে। আমরাও অভিযোগ করার পরও আমার পক্ষের বিক্রম কুমার সাহাকে গ্রেফতার করেছে।
বাঘা উপজেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়াহেদ সাদিক কবির জানান, আমরা ঘটনা স্থালে গিয়ে শালিস বেঠক করে সমাধা করে দিয়েছিলাম। কিন্তু সেটি মানছেনা। তার কথায় স্বপন সাহা মানলেও উত্তম ও তার ভাই অপুর্ব মানেননি। এ বিষয়ে বাঘা পৌর মেয়র আব্দুর রাজ্জাক জানান, ঘটনা স্থলে গিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করে দেয়ার পরও একটি পক্ষ না মানায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে শুনেছি। বাঘা থানার ওসি নজরুল ইসলাম জানান, উভয় পক্ষ থেকে পৃথক দুটি অভিযোগ পেয়েছি। ইতিমধ্যেই একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আরপি / এমবি-২
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: