রাজশাহী শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১

আড়ানীতে নির্বাচনী কার্যালয়ে ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণ


প্রকাশিত:
১৫ জানুয়ারী ২০২১ ০১:১৭

আপডেট:
১৫ জানুয়ারী ২০২১ ০১:২৫

ছবি প্রতিনিধি

রাজশাহীর বাঘায় আগামী ১৬ জানুয়ারি আড়ানী পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগ দলীয় ও বিদ্রোহী প্রার্থী- সমর্থকদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, নির্বাচনী কার্যালয়সহ দোকানপাট ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন করে ২০ জন আহত হয়েছে। ঘটনার জন্য আওয়ামীলীগ দলীয় ও বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষ থেকে একজন আরেকজনকে দোষারোপ করেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বুধবার রাতে ও বৃহস্পতিবার সকালে ৮টি অবিস্ফোরিত ককটেল ও ভাংচুর করা দু’টি মোটরসাইকেল জব্দ করেছে।

বুধবার (১৩-০১-২০২১) রাত ৯ টায় এই ঘটনার পর আড়ানী বাজারের সকল দোকান পাট বন্ধ রয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪-০১-২০২১) সকালের দিকে বাজারের উত্তর এবং দক্ষিণ দিকে দুই প্রার্থীর প্রায় তিন হাজার সমর্থক সশস্ত্র অবস্থায় ছিলেন। ঘটনার পর থেকে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আবারও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। তবে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পর দুই প্রার্থীর লোকজন নিজেদের এলাকায় অবস্থান করছিলেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মতিউর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

স্থানীয়রা জানান, বুধবার রাত ৯ টার আগে কাটাখালি পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র আব্বাস আলী শহীদুজ্জামানের পক্ষে ভোট প্রচারনা শেষে পথসভায় উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে চলে যান। তিনি যাওয়ার পর পরই তান্ডব চলে আড়ানী বাজারে। এই ঘটনার পর বিদ্রোহী প্রার্থী মুক্তার ঘটনাস্থলে এসে মাইকিং করে তার সমর্থকদের ডাকেন। এসময় শাহিদুজ্জামানসহ উপস্থিত নেতাকর্মীরা সংগঠিত হয়ে মুক্তারের সমর্থকদের প্রতিরোধ করতে গেলে উভয় পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, মুক্তার আলী বর্তমানে আড়ানী পৌরসভার মেয়রের দায়িত্ব পালন করছেন। এবারও তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু দল থেকে মনোনয়ন না পাওয়ায় বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। এজন্য আড়ানী পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

আওয়ামীলীগ দলীয় মেয়র প্রার্থী শহীদুজ্জামান দাবি করে বলেন,বুধবার (১৪ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে আড়ানী পৌর সদরের তালতলা বাজারে তার পথসভার পর ককটেল ও গুলি ছুড়ে হামলা চালান বিদ্রোহী প্রার্থী মুক্তারের সমর্থকরা। এ সময় তার নির্বাচনী এবং ব্যক্তিগত কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এছাড়াও মুক্তারের সশস্ত্র কয়েকজন সমর্থক গুলিবর্ষণ ও তালতলা বাজারে বেশকিছু দোকানপাট ভাঙচুর এবং লুটপাট করা হয়েছে। বিদ্রোহী প্রার্থীর মুক্তারের সমর্থকদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার পক্ষের প্রায় ১০-১২ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে সোহান (২২) ও তুষার (৩০) কে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করেছেন।


বিদ্রোহী প্রার্থী মুক্তার আলী বলেন, নির্বাচনী প্রচারনা শেষ করে রাত ৮ টার পরে তিনি বাড়িতে চলে যান। রাত সাড়ে ৯টার দিকে তার কর্মী সমর্থকরা বাড়ি যাওয়ার পথে আ’লীগ দলীয় প্রার্থী শহিদুজ্জামানের লোকজন তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায় বলে দাবি করেন তিনি। এ খবর পেয়ে তার লোকজন নিয়ে আড়ানি বাজারে যান। এসময় তাদের উপর হামলা চালিয়ে তারাই ককটেল বিস্ফোরন ঘটায়। আমার নির্বাচনী ও ব্যক্তিগত অফিসও ভাঙচুর করেছে। তার দাবি,যাদের দোকান ভাংচুর করা হয়েছে,তাদের মধ্যে তারও সমর্থকরা রয়েছে। প্রতিদ্বন্দি প্রার্থী আমার জয়ের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ায়,তার সমর্থকরা সশস্ত্র আকস্মিক হামলা করে। এতে তিনি নিজেসহ তার পক্ষের প্রায় ১০ জনের বেশি আহত হয়েছে। এদের মধ্যে রানা (৩৫) ও নাজমুল নামের ২জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ বিষয়ে অবিযোগ করবেন বলে জানান তিনি।

মামলার তদন্তকারি অফিসার বাঘা থানার এসআই আশরাফ আলী জানান, মেয়র প্রার্থী মহীদুজ্জামানের ভাই কামরুজ্জামান নিপ্পন বাদি মামলা করেছেন। এ মামলায় ১জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ৮টি অবিস্ফোরিত ককটেল ও ভাংচুর করা দু’টি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যারা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধেআইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

 

আরপি/টিএস-১০

 

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top