রাজশাহী রবিবার, ২৮শে এপ্রিল ২০২৪, ১৬ই বৈশাখ ১৪৩১

প্রান্তিক কৃষকসহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণের দাবি তরুণদের


প্রকাশিত:
৫ অক্টোবর ২০২০ ০৫:০৫

আপডেট:
২৮ এপ্রিল ২০২৪ ২০:৪৫

তরুণদের মানববন্ধন। ছবি: রাজশাহী পোস্ট

রাজশাহীতে প্রান্তিক কৃষকসহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ প্রদানসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন তরুণেরা। এই দাবি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। অনুষ্ঠিত হয়েছে মানববন্ধন।

আজ রোববার দুপুরে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ইয়ুথ এ্যাকশন ফর সোস্যাল চেঞ্জ (ইয়্যাস)’ বিভাগীয় কমিশনার মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর এই স্মারকলিপি প্রদান করে।

এছাড়াও ডাকযোগে অনুলিপি প্রেরণ করা হয়েছে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী, পরিকল্পনা মন্ত্রানালয়ের মন্ত্রী ও প্ল্যানিং কমিশনের (জিইডি) সিনিয়র সেক্রেটারিকে।

একই দাবিতে পৃথক স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিলকে। বাগমারার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে অনুলিপি ডাকযোগে প্রেরণ করা হয়েছে।

তরুণ সংগঠন ইয়ুথ এ্যাকশন ফর সোস্যাল চেঞ্জ-ইয়্যাস সভাপতি মো. শামীউল আলীম শাওন ও সাধারণ সম্পাদক নাজমুল ইসলাম আকাশ স্বাক্ষরিত এ স্মারকলিপিতে তরুণরা দাবি জানান- জেলার বাগামারা উপজেলার বন্যাদূর্গতদের জন্য প্রয়োজনীয় ত্রাণ ও পূর্ণবাসন প্রদান, ক্ষতিগ্রস্থ প্রকৃত ব্যক্তিদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ প্রদান, কর্মহীন হওয়া ব্যক্তিদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা, ফকিরনী ও বারানই নদী খনন করে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা, এই দুই নদীর বেড়িবাঁধ সঠিকভাবে সংস্কার ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে।

স্মারকলিপি প্রদানের পূর্বে নগরীর সাহেব বাজার জিরোপয়েন্টে মানববন্ধন কর্মসূচির পালন করে তরুণরা। ইয়্যাস, ব্লাড ব্যাংক রাজশাহী ও সেবা পরিবারের আয়োজনে মানববন্ধনে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরুণরা অংশ্রগহণ করেন।

ইয়্যাস সভাপতি শামীউল আলীম শাওনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বাগমারা উপজেলার কাচারী গোয়ালিপাড়া ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য রবিউল ইসলাম, নরদাশ ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড সদস্য সেলিম রেজা, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ স্থানীয় বাসিন্দা সেতাব আলী, বারিক হোসেন প্রমূখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, টানা বর্ষণের সঙ্গে উজানের পানিতে বাগমারা উপজেলার দ্বীপপুর ইউনিয়নের জুলাপাড়ার মরাঘাটির সংলগ্ন ফকিরনী নদীর ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে উপজেলার উত্তর এলাকা প্লাবিত ও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে লক্ষাধিক মানুষ। বন্যার পানিতে অধিকাংশ কাঁচা ঘরবাড়ি ধসে পড়ে পানিতে বিলিন হয়ে গেছে। অবশিষ্ট বাড়িগুলোও হুমকির মুখে রয়েছে।

বক্তারা আরো বলেন, অনেক পাকা বাড়িতেও দেখা দিয়েছে ফাঁটল। বন্যার পানিতে শত শত হেক্টর পাকা ধান, পাট ও সবজি ক্ষেত ভেসে গেছে। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে পানবরজ। এছাড়াও পুকুর ও বিলের চাষ করা কয়েক হাজার কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে। মানুষ আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও উঁচু জায়গাতে। প্রায় অধিকাংশ কাঁচা-পাকা সড়ক ডুবে গেছে। উপজেলা সদরের সঙ্গে ইউনিয়নগুলোর সড়ক যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়েছে। প্লাবিত হয়েছে কাচারীকোয়ালীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স। দিশেহারা হয়ে পড়েছে বানভাসীরা।

পাঁচ দিনে তিন বেলা খাবার খেয়েছেন বলে উল্লেখ করে মানববন্ধনে ভূক্তভোগীরা বলেন, পানিবন্দি থেকে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও নিরাপদ আশ্রয়ের অভাবে সীমাহীন দুর্ভোগে রয়েছি। দিনমজুর-ক্ষেতমজুরসহ খেটে খাওয়া মানুষরা পর্যাপ্ত ত্রাণ না মেলায় অনাহারে, অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছি। গৃহপাালিত পশু নিয়েও বিপাকে পড়েছেন বলে জানান তারা।

বক্তারা প্রান্তিক কৃষকসহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিদের তালিকা করে ন্যায্য ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবি জানান। একই সাথে ফকিরনী ও বারানই নদী খনন করে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা ও নদীর বেড়িবাঁধ সঠিকভাবে সংস্কার ও সংরক্ষণ নিশ্চিতের দাবি জানান তারা।

 

আরপি/আআ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top