রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ২রা মে ২০২৪, ২০শে বৈশাখ ১৪৩১

করোনার প্রাদুর্ভাবে ঈদুল আযহাতেও ব্যস্ততা নেই চারঘাটের কামারপল্লীতে


প্রকাশিত:
২৬ জুলাই ২০২০ ০৪:৩৮

আপডেট:
২৬ জুলাই ২০২০ ০৪:৩৯

ঢিলেঢালা কাজে কামার। ছবি:  প্রতিনিধি

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে রাজশাহীর চারঘাটের কামারপল্লীতে বেড়ে যায় কর্মব্যস্ততা। নাওয়া-খাওয়া ভুলে দুটি বাড়তি টাকার আশায় রাত-দিন কাজ করেন কামাররা। ক্রেতাদের চাহিদামতো তৈরি করে দেন দা, ছুরি, বটি ও চাপাতি।

প্রতিবছরে ন্যায় এবার ঈদকে ঘিরে সেই কর্মব্যস্ততা নেই। লোহা-হাতুড়ির টুং টাং শব্দে পড়েছে ভাটা। তাদের রোজগারে হানা দিয়েছে করোনা। করোনার কারণে ক্রেতা কম, তাই অলস সময় পার করছেন অনেক কামার।

সাধন কর্মকার জানায়, স্বাভাবিক দিনগুলোতে যেখানে রোজগার ছিল ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, বর্তমানে তা ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় নেমে এসেছে। করোনার কারণে প্রায় তিন মাস ধরে কাজ নেই। ব্যবসার পুঁজির টাকাও সংসারের পেছনে খরচ হয়ে গেছে। সামনে কোরবানির ঈদ অথচ এখনো কাজের অর্ডার পাচ্ছি না। এ ভাবে চলতে থাকলে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে উপোষ থাকতে হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলা সদর ইউনিয়নের পরানপুর কামার পাড়া এবং সরদহ ইউনিয়নের ঝিকড়া কামার পাড়ায় আগে অর্ধশতের বেশি কামার ছিল। বর্তমানে আছেন প্রায় ৩০ জন। এছাড়াও উপজেলার পৌরসভাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে আরো অনেকেই এ পেশায় জড়িত আছেন।

বাপ-দাদার রেখে যাওয়া এই পেশায় নতুন করে কেউ ঝুঁকছে না। অনেকেই জীবিকার তাগিদে পেশা পরিবর্তন করেছেন। যাঁরা এ পেশাকে আঁকড়ে ধরে আছেন তাদের অবস্থাও শোচনীয়। কাঁচামাল ও কয়লার দাম বৃদ্ধির কারণে পণ্যের ন্যাযমূল্য না পেয়ে এ পেশায় আগ্রহ হারাচ্ছেন কামাররা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কোরবানির ঈদকে ঘিরে কামারপল্লীতে বছরের এই সময়ে তেমন কর্ম তাৎপরতা লক্ষ করা যায়নি। দিনে অল্প কিছু লোক আসেন তাদের পুরনো দা, ছুরি, বটি ও চাপাতি ধার দিতে। নতুন কোনো যন্ত্রপাতি বিক্রি হচ্ছে না।

কামাররা জানায়, এবছর করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে মানুষের আর্থিক অবস্থা তেমন ভালো না। তাই গত বছরের তুলনায় কাজ অনেক কমে গেছে। তারপরও যতটুকু কাজ আসে তা তাৎক্ষণিক করে দেওয়া আপ্রাণ চেষ্টায় করছেন।

চারঘাট পৌর এলাকার রণজিৎ কুমার কর্মকার জানায়, এই পেশায় আগের সেই যশ নেই। যন্ত্রপাতি তৈরির কাঁচামাল, কয়লার দাম বৃদ্ধির তুলনায় উৎপাদিত জিনিসের ন্যায্যমূল্য পাওয়া যাচ্ছে না। করোনার কারণে গেল বছরের চেয়ে কাজ কম। কয়েকদিন আগে শূন্য হাতেও বাড়ি ফিরতে হয়েছে। করোনাে পাদুর্ভাব কাটলে আবারো সুদিন আসবে বলে আশা করেন তিনি।

 

আরপি/আআ-১২



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top