রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ২৮শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০

রাজশাহীর মোহনপুরে

আত্মহত্যা রহস্যের জট খুলতে শুরু করেছে


প্রকাশিত:
৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৮:৪৪

আপডেট:
৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৯:১৬

ছবি: নিহত জরিনা ও মাহাবুর

তারা 'হাতুড় দিয়ে পিটিয়েছে। আমার বোনের শরীরে কালো কালো দাগ পড়েছে। বুকে গর্ত হয়েছে। পিঠে, ঘাড়ের নিচে গর্ত হয়ে গেছে। মাথা ফুলে গেছিল।' বলছিলেন নিহতের বোন শিউলী খাতুন।

গত বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় জরিনা নামের কলেজছাত্রীর বিয়ের দাবিতে অনশন করে আত্মহত্যা ঘটনার রহস্যের জট খুলতে শুরু করেছে। নিহত জরিনা খাতুন মোহনপুর উপজেলার হরিহরপুর গ্রামের বদের উদ্দীনের মেয়ে।

একই উপজেলার মাটিকাটা গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে মাহাবুর রহমান এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে।

জোরিনার বাবা বদের উদ্দীন জানান, তার মেয়েকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে গিয়ে মাহাবুর ও তার পরিবার পাশবিক নির্যাতন হত্যা করেছে। পরিকল্পিতভাবে জোরিনাকে ঘরে আটকে রেখে মুখে গামছা বেধে নির্মমভাবে রড ও বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। হত্যার পর আলামত লুকানোর জন্য তারা মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।


হরিহরপুর গ্রামের বাসিন্দারা জানান, ঘটনার পরপরই হরিহরপুর প্রাইমারীর প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমান থানায় গিয়ে বিষপানে মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশকে জানান। ফলে এলাকায় প্রেমঘটিত আত্মহত্যা বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি বিয়ের দাবিতে জরিনা অনশন করে আত্মহত্যা করেছে বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

মোহনপুর থানার ওসি মোস্তাক আহমেদ বলেন, 'আত্মহত্যার প্ররোচনায় ৯ এর (ক) ধারায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ৫ জনের নামে থানায় মামলা হয়েছে। ইতোমধ্যে একজনকে আটক করা হয়েছে। পলাতকদের গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।'

নিহতের ভাই মোশারফ হোসেন বলেন, 'কলেজ থেকে বেরিয়ে সোনাদিঘীর মোড়ে বই কিনছিলাম। হঠাৎ অপরিচিত এক নাম্বার থেকে কল আসে। আমাকে বলা হয় তোমার বোন বিষ খেয়েছে। তাড়াতাড়ি হাসপাতালে আসো। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে যেতেই আমার বোনের মৃতদেহ দেখি।’

উল্লেখ্য, ঘটনার প্রতিবাদ এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শুক্রবার বিকালে এক মানববন্ধনের আহবান করে স্থানীয়রা। মোহনপুর থানার ওসি মোস্তাক আহমেদ মানববন্ধন স্থগিত করার অনুরোধ এবং ১৫ দিনের মধ্যে দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস জানিয়েছেন।

এদিকে মাহাবুর রহমান ও তার বাবা পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।

 

 

আরপি/এমএইচ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top