রাজশাহী শনিবার, ৪ঠা মে ২০২৪, ২১শে বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহী চিড়িয়াখানার চারটি হরিণ গেল কুকুরের পেটে


প্রকাশিত:
৪ এপ্রিল ২০২০ ০২:১৩

আপডেট:
৪ এপ্রিল ২০২০ ০২:১৯

হরিণ

রাজশাহীর শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানায় পাঁচটি ক্ষুধার্থ কুকুর ঢুকে চারটি হরিণ খেয়ে ফেলেছে। বিষয়টি স্বীকার করেছেন চিড়িয়াখানার সুপারভাইজার শরিফুল ইসলাম।

শুক্রবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তড়িঘড়ি করে সকালেই হরিণগুলোর দেহের অবশিষ্টাংশ মাটিচাপা দেয়া হয়েছে। বের করে দেয়া হয়েছে কুকুর পাঁচটিকেও।

মধু নামে একজন পশুর পরিচর্যকারী এ বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেন। চিড়িয়াখানায় গত তিন মাসে হরিণের ১৫টি বাচ্চা জন্ম নিয়েছে। নেড়ি কুকুরের দল ঢোকার সময় সেডে মোট হরিণ ছিল ৭৫টি। কুকুরে খাওয়ার পর এখন হরিণের সংখ্যা ৭১টি। কুকুরের পেটে যাওয়া চার হরিণের তিনটিই বাচ্চা। একটি তাদের মা।

তিনি আরোও বলেন, হরিণগুলোর দেহের অবশিষ্টাংশ সেডের ভেতরেই মাটি খুঁড়ে পুঁতে ফেলা হয়েছে। জায়গাটি এখনও উঁচু হয়ে আছে। এখোনো হরিণগুলোর চোখে-মুখে দেখা যায় আতঙ্কের ছাপ। চিড়িয়াখানায় পাঁচটি কুকুর ঢুকে চারটি হরিণ সাবাড় করলেও শুক্রবার বিকালেও ভেতরে কুকুর দেখা গেছে।

চিড়িয়াখানার একটি সূত্র জানান, কর্মচারীরা ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করেন না। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্বহীনতার কারণেই সেডের ভেতর চারটি হরিণ নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে।

এ বিষয়ে জানাতে চাইলে চিড়িয়াখানার তত্ত্বাবধায়ক মাহবুব হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে চিড়িয়াখানার ভেটেরিনারি সার্জন ডা. ফরহাদ উদ্দীনের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে কয়েক দফা ফোন করা হলেও ভেটেরিনারি সার্জন ডা. ফরহাদ উদ্দীন ধরেননি।

শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা পরিচালনা করে রাজশাহী সিটি করপোরেশন। যোগাযোগ করা হলে চিড়িয়াখানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সমর কুমার পাল বিষয়টি স্বীকার করে বলেছেন, এটি একটি দুর্ঘটনা।

তিনি জানান, রাত ২টা পর্যন্ত চিড়িয়াখানার পুকুরে কাজ চলেছে। লোকজন ছিল। তখন পর্যন্ত কুকুর ঢোকেনি। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে শহরের হোটেলগুলো বন্ধ থাকায় কুকুরের খাবার সংকট। তাই পাঁচটি নেড়ি কুকুর চিড়িয়াখানায় ঢুকে পড়েছিল। বেড়া থাকলেও কুকুরগুলো হরিণের সেডে ঢুকতে পেরেছিল।

সমর কুমার পাল বলেন, আমরা ধারণা করছি- ক্ষুধার্থ কুকুরগুলো প্রথমে বাচ্চাগুলোকে আক্রমণ করেছিল। তাকে বাঁচাতে গিয়েছিল মা হরিণটি। তখন সবগুলোকেই আক্রমণ করেছে কুকুরগুলো। সবগুলো হরিণের দেহের অংশ খেয়ে ফেলেছিল। ভোরে চিড়িয়াখানার কর্মীরা দেখেন হরিণের সেডে পাঁচটি কুকুর। চারটি হরিণের ক্ষতবিক্ষত দেহও পড়ে ছিল। পরে কুকুরগুলোকে বের করে দেয়া হয়। আর হরিণগুলোর দেহের অবশিষ্টাংশ মাটিতে পুঁতে দেয়া হয়েছে।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরও জানান, এ ঘটনায় চিড়িয়াখানার তত্ত্বাবধায়ককে একটি লিখিত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। দুই-একদিনের মধ্যেই তিনি প্রতিবেদন দেবেন। এরপর এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি হবে নাকি অন্য কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। ফ্লাস নিউজ

 

 

আরপি/এমএইচ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top