রাজশাহীতে
মানবতাবিরোধী অপরাধে মুসাকে মৃত্যুদণ্ড

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের আব্দুস সামাদ ওরফে মুসাকে মৃত্যুদণ্ডর রায় দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
মঙ্গলবার বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিরুদ্ধে উত্থাপিত চার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই রায় ঘোষণা করেন।
এর আগে সোমবার রায় ঘোষণার জন্য আজকের এই দিন ঠিক করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তার আগে গত ৮ জুলাই রাষ্ট্র ও আসামি উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখেন ট্রাইব্যুনাল।
৪ জুলাই এ মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়ে সর্বশেষ ৮ জুলাই যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষের পর রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখেন ট্রাইব্যুনাল।
আসামির বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাসহ (আইও) প্রসিকিউশনের আনা ১৫ জন সাক্ষী তাদের জবানবন্দি পেশ করেন। অন্যদিকে, আসামির পক্ষে কোনো সাক্ষী ছিল না।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর ঋষিকেশ ও জাহিদ ইমাম। অপরদিকে আসামির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুস সাত্তার পালোয়ান।
মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত চলাকালীন নাশকতার অন্য এক মামলায় গ্রেফতার হন আসামি মুসা। ২০১৭ সালের ২৪ জানুয়ারি তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
তদন্তে জানা যায়, মুসা পুঠিয়ার বাঁশবাড়ী এলাকার মৃত আব্বাস আলীর ছেলে। মুক্তিযুদ্ধের আগে তিনি মুসলিম লীগের সমর্থক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক হিসেবে শান্তি কমিটির স্থানীয় নেতার নেতৃত্বে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেন তিনি।
চারজন সাঁওতালসহ ১৫ জনকে হত্যা, ২১ জনকে নির্যাতন, ৮ থেকে ১০টি বাড়িঘর লুণ্ঠনসহ ৫০ থেকে ৬০টি বাড়িঘর অগ্নিসংযোগ করে ধ্বংস করে দেয়ার অভিযোগ আনা হয়।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ২০ এপ্রিল বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে পুঠিয়া থানার ভালুকগাছী ইউনিয়নের সাঁওতাল পাড়ায় গিয়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তার সহযোগীরা স্বাধীনতার পক্ষের হেমব্রম, কানু হাসদা, জটু সরেন ও টুনু মাড্ডিকে তরবারি ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে।
২০১৬ সালের ১১ ডিসেম্বর মামলাটির তদন্ত শুরু হয়। তখন এ মামলায় আসামি করা হয় ছয়জনকে। কিন্তু তদন্ত চলার সময়ই বাকি পাঁচ আসামির মৃত্যু হলেও একমাত্র আসমি হিসেবে মো. আব্দুস সামাদই ছিলেন।
আরপি/এমএএইচ
বিষয়: মৃত্যুদণ্ড মানবতাবিরোধী রাজশাহী
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: