রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ৯ই মে ২০২৪, ২৭শে বৈশাখ ১৪৩১

ধর্মীয় সম্প্রীতি সুরক্ষায় আন্তঃধর্মীয় সংলাপ

‘ধর্মীয় শিক্ষাই বন্ধ করতে পারে নির্বাচনী ও ধর্মীয় সহিংসতা’


প্রকাশিত:
২৩ জুলাই ২০২৩ ০৫:৫৬

আপডেট:
৯ মে ২০২৪ ২২:৪৬

ছবি: সংলাপ

‘একটি দেশের মসজিদে এক দল ধর্মান্ধ মানুষ হামলা চালিয়েছিল। সেই ঘটনা নিয়ে আমাদের দেশে একই ধর্মের মানুষ ব্যাপক সহিংসতা সৃষ্টি করেছিল। একদল ধর্মান্ধ হয়ে অপরাধ করেছে, আমাদের কেন অপরাধ করতে হবে? এক্ষেত্রে পারস্পারিক সংলাপ ও সমঝোতার মাধ্যমে সহিসংতা থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব হতো। এর জন্য প্রয়োজন পারিবারিকভাবে ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া। ধর্মীয় শিক্ষাই বন্ধ করতে পারে নির্বাচনী ও ধর্মীয় সহিংসতা।’

শনিবার (২২ জুলাই) দুপুরে রাজশাহী নগরীর একটি রেস্তোঁরায় আয়োজিত বিভাগীয় আন্তঃধর্মীয় সংলাপে ধর্মীয় বক্তারা এসব কথা বলেন।

নির্বাচন পূর্ব ও পরবর্তী ধর্মীয় সম্প্রীতি সুরক্ষায় এই আন্তঃধর্মীয় সংলাপে বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিনিধি ছাড়াও শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, আদিবাসী, জনপ্রতিনিধি ও গণমাধ্যমকর্মীরা অংশ নেন।

আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনিস্টিটিউটের (আইআরআই) সহায়তায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা রুরাল অ্যান্ড আরবান পুরর্স পার্টনার ফর সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট (রূপসা) সংলাপের আয়োজন করে। এসময় নির্বাচনী সহিংসতা বা ইলেকট্ররাল ভায়োলেন্স শুন্যের কোঠায় আনতে বক্তারা বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করেন।

রূপসা’র নির্বাহী পরিচালক হিরণ্ময় মণ্ডলের সভাপতিত্বে সংলাপের প্যানেল আলোচক ছিলেন রাজশাহী কাশফুল কোরআন ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাওলানা মো. মোস্তাক আহমেদ, রাজশাহী পুরোহিত সোসাইটির সভাপতি আশোক সান্ন্যাল, বাংলাদেশ ব্রাক্ষণ সংসদ কেন্দ্রীয় কমিটির বিভাগীয় প্রচার সম্পাদক সুরেশ চক্রবর্তী, রাজশাহী চার্চের পাষ্টার ইফরাইম হেমব্রম।

সংলাপে বক্তারা আরও বলেন, আমাদের অসাম্প্রদায়িক চেতনায় মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যেভাবে দেশ স্বাধীন হয়েছে সেভাবে সকল ধর্মের মানুষকে মিলেমিশে এক সঙ্গে বসবাস করতে হবে। রাজনৈতিক নেতা বাছাইয়ে দলগুলোর অনেক ব্যর্থতা রয়েছে। অনেক বিতর্কিত মানুষ রাজনৈতিক মনোনয়ন পেয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হচ্ছেন। পরে তিনি সমাজের নানা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ান।

রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা বাছাইয়ে আরো সতর্ক হওয়া উচিত। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে সচেতন হতে হবে। অন্য ব্যক্তির ধর্মীয় পোস্ট যাচাই না করে শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ ধর্মীয় ইস্যু থেকেই সৃষ্টি হয় ধর্মীয় সহিংসতা। তাই মানুষের মধ্যে নেতিবাচক মনোভাব প্রত্যাহার করতে হবে। আমাদের সকলের মানসিকতা, চিন্তাধারার মাধ্যমে সুস্থ মনোভাব প্রকাশ করতে হবে। তবেই সহিংসতা অনেকাংশে কমে আসবে বলে মনে করেন বক্তারা।

অনুষ্ঠানে সংলাপটি শুধু বিভাগীয় শহরে নয়, বরং জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়েও আয়োজন করার দাবি জানান অতিথিরা।

রূপসা’র প্রোগ্রাম অফিসার এসএম শাহারুজ্জামান সজীবের পরিচালনায় অন্যদের মধ্যে রাজশাহী জেলা পরিষদ সদস্য দীলিপ কুমার সরকার, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের রাজশাহী জেলার সাধারণ সম্পাদক অসীত কুমার ঘোষ, ইমাম আব্দুর রাজ্জাক, রাজশাহী জেলা বিএনপির সদস্য গোলাম মোস্তফা মামুন, সাংবাদিক রিমন রহমান, শফিকুল ইসলাম, শিক্ষার্থী ইলিন সুমাইয়া জামান, রুবেল মল্লিক, তামান্না তাবাসুম ইরানি, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত কাউন্সিলর সুলতানা আহম্মেদ সাগরিকা, আদিবাসি ছাত্র পরিষদের সভাপতি নুকুল পাহাড়, আদিবাসী ছাত্র পরিষদের স-হসভাপতি সাবিত্রী হেম্রাম, এনজিও প্রতিনিধি শামসুল হক, দলিত সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি মুক্তি রাণী দাশ, ছাত্রলীগ নেতা মনজুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে সংলাপের বিষয়বস্তু নিয়ে পাওয়ার পয়ন্টে উপস্থাপন করেন রূপসা’র প্রকল্প ব্যবস্থাপক সামিয়া জামান।

 

 

আরপি/এসআর-০৪


বিষয়: সংলাপ


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top