রাজশাহী শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১

কাঠগড়ায় শিশুর কান্না, ফের বিয়ে হলো দম্পতির


প্রকাশিত:
৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৯:৪৬

আপডেট:
১৯ এপ্রিল ২০২৪ ২৩:৪৪

ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীতে আদালতেই বিয়ে হলো যৌতুকের মামলার আসামি ও বাদি যুবক-যুবতীর। আট মাস আগে সামান্য ভুল-বোঝাবুঝির কারণে বিয়ের সংসার ভেঙ্গে যায় তাদের।

বৃহস্পতিবার (০২ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এ এই বিয়ে সম্পন্ন হয়।

বিয়ের সময় আদালতে জান্নাতের মা–বাবা ও শিমুলের বাবা উপস্থিত ছিলেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী রেবেকা সুলতানা গণমাধ্যমকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ যুবক শিমুল পারভেজ (২২) রাজশাহীর পবা উপজেলার কাটাখালী পৌর এলাকার বাসিন্দা। ২০২১ সালের ২ এপ্রিল জান্নাত ফেরদৌসের বিয়ে হয়। সন্তান জন্মের দুই মাস আগেই শিমুল পারভেজ-জান্নাত ফেরদৌস দম্পতির বিচ্ছেদ হয়। বিচ্ছেদের কয়েক দিন পর গত ১২ অক্টোবর জান্নাত ফেরদৌস আদালতে যৌতুকের মামলা দায়ের করেন।

আদালতের তথ্যমতে, আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে আদালতে ওই মামলার জামিন শুনানি চলছিল। এ সময় বিচারক মাসুদুজ্জামান লক্ষ করেন, সাক্ষীর কাঠগড়ায় দাঁড়ানো মামলার বাদী জান্নাতের কোলে ছয় মাসের ফুটফুটে শিশু কাঁদছে। শুনানির সময় জান্নাতের চোখেও পানি দেখা যায়। শিমুলও মাথা নিচু করে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। বিয়ের কিছুদিন পর সামান্য ভুল–বোঝাবুঝিতে আসামি শিমুল তার স্ত্রীকে তালাক দেন। যা ইতোমধ্যে কার্যকরও হয়েছে।

আদালতে দুই পক্ষের আইনজীবী পক্ষে-বিপক্ষে তাদের বক্তব্য দিলেও সেটা ছাপিয়ে আদালতের দৃষ্টি পড়ে মায়ের কোলে থাকা অসহায় শিশুর দিকে। পরে আদালত জানতে চান, শিশুটির ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে বাদি ও আসামিপক্ষ আপস করতে চায় কি না। একপর্যায়ে আদালত দুই পক্ষকেই কিছু উপদেশমূলক কথা বলেন। এ সময় শিমুল ও জান্নাত দুজনই আদালতের মধ্যস্থতায় আপস করতে রাজি হন।

এ সময় দুই পক্ষের আইনজীবীর অনুরোধে আদালত বিচারকাজ শেষে আদালত কক্ষের ভেতরেই উভয় পক্ষের আইনজীবী, অভিভাবক ও বার সমিতির সম্পাদকের উপস্থিতিতে কাজী ডাকেন। পরে এক লাখ টাকা দেনমোহরে ইসলামি বিধান অনুযায়ী পুনরায় শিমুল ও জান্নাতের বিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় আদালত উপস্থিত সবাইকে মিষ্টিমুখ করান।

বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে স্বামী-স্ত্রী দুজনকেই বিচারক খাসকামরায় ডেকে ভবিষ্যতের জন্য শুভ কামনা জানান এবং শিশুটিকে আদর করেন। আদালতের এই মানবিক উদ্যোগে বাদি, আসামি, আইনজীবী, আদালতের পেশকার, পিয়ন, ম্যাজিস্ট্রেটসহ সবাই মুগ্ধ হোন।

বাদিপক্ষের আইনজীবী রেবেকা সুলতানা বলেন, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদুজ্জামান এই আদালতে যোগ দেওয়ার পর থেকে মানবিক বিচারের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যাচ্ছেন। তার আন্তরিক প্রচেষ্টায় এবার আদালতকক্ষে ব্যতিক্রমী বিয়ের আয়োজনের মাধ্যমে একটি সংসারের ভাঙন ঠেকানো গেল। এতে একটি শিশুর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত হলো। 

 

 

 

আরপি/এসআর-০৬



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top