নতুন আরএমপি কমিশনার
বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক চেতনা বাস্তবায়ন ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার্থে আরএমপি পুলিশ কাজ করে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) নতুন কমিশনার আনিসুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) রাতে আরএমপি সদর দপ্তরে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আরএমপি কমিশনার আনিসুর রহমানের যোগদান উপলক্ষে রাজশাহীতে কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। এসময় সাংবাদিকরা নতুন পুলিশ কমিশনারকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
বক্তব্যের শুরুতেই ইতিহাসের মহানায়ক স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ‘৭৫র ১৫ আগস্ট শাহাদতবরণকারী বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকল সদস্য, জাতীয় চারনেতা, মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রারম্ভে শাহাদাত বরণকারী তৎকালীন রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি শহীদ মামুন মাহমুদ ও রাজশাহীর পুলিশ সুপার শাহ্ আব্দুল মজিদসহ আত্ম দানকারী ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ নির্যাতিত মা-বোনকে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন আরএমপি কমিশনার।
আনিসুর রহমান বলেন, মিডিয়া হচ্ছে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। মিডিয়ার বদৌলতে আমরা ঘটে যাওয়া পৃথিবীর অনেক বিষয় জানতে পারি। একটি ঘটনাকে হৃদয়গ্রাহী করে আপনারা অত্যন্ত পরিশীলিতভাবে উপস্থাপন করেন। আপনারা শুধু পেশার কারণেই কাজ করেন না, আপনাদের রয়েছে সামাজিক দায়বদ্ধতা। সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে আপনারা জাতির বিবেক হিসেবে সুউচ্চ মর্যদায় অধিষ্ঠিত।
তিনি আরও বলেন, পুলিশ জনগণের সেবক। জনগণের জান-মাল রক্ষা, জননিরাপত্তা প্রতিবিধান, মামলা তদন্ত এবং আইনের সঠিক প্রয়োগ করাই পুলিশের প্রধানতম দায়িত্ব। এই দায়িত্বের পাশাপাশি রাজশাহী মহানগরবাসীর প্রত্যাশা পূরণে আরএমপি পুলিশ আপনাদের পাশে আছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, যেকোনো অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও সনাক্তকরণের জন্য আরএমপি পুলিশ সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব প্রদর্শন করবে। পুলিশের কার্যক্রমকে বেগবান করতে গোয়েন্দা নজরদারি আরও বৃদ্ধি করা হবে।
মাদকের প্রসঙ্গ টেনে নতুন কমিশনার বলেন, রাজশাহী মহানগর ভারত সীমান্তবর্তী হওয়ায় এখানে মাদকের প্রাদুর্ভাব রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মাদকের বিরুদ্ধে ঘোষিত জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে আরএমপি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করবে। সন্ত্রাসবাদ দমনে আরএমপির সিআরটি এবং বোম্ব ডিসপোজাল টিমকে আধুনিক প্রশিক্ষণ ও উন্নত সরঞ্জামে আরও শক্তিশালী করা হবে। অপরাধ নিয়ন্ত্রণের জন্য আমি কমিউনিটি এবং বিট পুলিশিংয়ের কার্যক্রমকে জোরদার ও গতিশীল করতে চাই।
আরএমপি প্রধান বলেন, আমরা পুলিশি সেবা জনগণের দোর গোড়ায় পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর। পুলিশ যাতে জনগণকে হয়রানি করতে না পারে সে দিকে লক্ষ্য রাখা হবে। তা ছাড়া পুলিশ সদস্যদের মাধ্যমে যেকোনো অপরাধ সংঘটিত হলে তাদেরকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিট, অপারেশন কন্ট্রোল অ্যান্ড মনিটরিং সেন্টার, ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাবের কার্যক্রমকে আমি আরও জোরদার করতে চাই। তা ছাড়া কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে আরএমপির অভিযান অব্যাহত থাকবে। পুলিশি দায়িত্বের পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে আমি নানা ধরনের মানবিক কর্মকান্ডও অব্যাহত রাখব। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হিসেবে নতুন কমিশনার বলেন, আজ আমার যাত্রা হলো। এটাই আপনাদের সাথে আমার প্রথম সাক্ষাৎ। আপনারা ইতোপূর্বে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের বিভিন্ন পুলিশি সাফল্য কভার করেছেন। আপনারা পূর্বে যেভাবে সহযোগিতা করেছেন, আগামী দিনগুলোতে একইভাবে সেই ধারা অব্যাহত রাখবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে পুলিশ কমিশনারের যোগদানের পর সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভার আয়োজন করায় পুলিশ কমিশনারের প্রতি কৃতজ্ঞা প্রকাশ করে ধন্যবাদ জানান সাংবাদিকরা। রাজশাহী নগরীকে নিরাপদ নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে পুলিশ কমিশনারের পাশে থাকার কথাও ব্যক্ত করেন তারা।
সভায় আরএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন অ্যান্ড ফিন্যান্স) ফারুক হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) বিজয় বসাক, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক অ্যান্ড ডিবি) সামসুন নাহারসহ রাজশাহীতে কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন নিউজ পোর্টালের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
আরপি/এসআর
বিষয়: মতবিনিময় সভা
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: