বন্ধুর স্ত্রীর গোসলের ভিডিও ধারণ, যুবকের সাজা
-2022-12-01-17-56-32.jpg)
বাথরুমের ভেতর গোপন ক্যামেরা লাগিয়ে বন্ধুর স্ত্রীর গোসলের ভিডিও ধারণ করে চাঁদা দাবির দায়ে এক যুবককে ১৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ১৫ লাখ টাকার অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও দেড় বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জিয়াউর রহমান এ রায় দেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পৃথক তিনটি ধারায় এ রায় ঘোষণা করেন তিনি।
রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইসমত আরা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সাজাপ্রাপ্ত যুবকের নাম দেওয়ান আরিফুর রহমান ওরফে আরিফ (৩৮)। তিনি বগুড়া জেলার উপশহর হাউজিং এস্টেট এলাকার মৃত দেওয়ান আক্তারের ছেলে।
আইনজীবী ইসমত আরা জানান, ২০২১ সালের ২ মে বগুড়া সদর থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। বগুড়া উপশহরের পদ্মা ভবন এলাকার বাসিন্দা শরীফুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। আসামি আরিফ বাদী শরীফুলের বন্ধু। বন্ধুত্বের সুযোগ নিয়ে বাসায় তার যাতায়াত ছিল। এরই এক পর্যায়ে কোনো এক সময় আসামি তার বন্ধুর বাথরুমে গোপন ক্যামেরা স্থাপন করেন।
ওই ক্যামেরায় কৌশলে বন্ধুর স্ত্রীর গোসলের ভিডিও ধারণ করেন আরিফ। এরপর বাদীর স্ত্রীর ফেসবুক আইডির মেসেঞ্জারে তা পাঠিয়ে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। বাদীর স্ত্রী লোকলজ্জার ভয়ে তার এক আত্মীয়কে দেওয়ার নাম করে টাকা সংগ্রহ করে আরিফকে ৫ লাখ টাকা দেন। এরপরও বাদীর স্ত্রীর কাছে আবারও ৫ লাখ টাকা দাবি করেন আরিফ। এতে উপায়ান্তর না পেয়ে শেষ পর্যন্ত স্বামীকে (বাদীকে) ঘটনাটি খুলে বলেন।
বিষয়টি বাদী জানার পর আসামি আরিফকে তার মুঠোফোন ও ফেসবুক থেকে রিমুভ করেন এবং মেসেঞ্জার ডিজেবেল করে দেন, সেইসঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপেও নম্বরটি ব্লক করে রাখেন। পরে গত বছরের ২৬ মার্চ একটি হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার থেকে আরিফ আবারও বাদীকে ফোন করে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন এবং ধারণকৃত ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করার হুমকি ও ভয়ভীতি দেখান।
বাদী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের (২০১৮ এর ২২-১, ২৬-১, ২৯-১) তিনটি ধারায় আসামি আরিফের বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে তাকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামির বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় এ রায় ঘোষণা করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী আরও জানান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপর তিনটি ধারার অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় আসামিকে ওই ধারাগুলো থেকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে সাজামূলে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। রায়ের অনুলিপি বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আরপি/এসআর-০৭
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: