রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ১৮ই এপ্রিল ২০২৪, ৬ই বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীতে গৃহবধূ হত্যায় স্বামীর ফাঁসি দাবি


প্রকাশিত:
১৮ জানুয়ারী ২০২২ ১০:৩৬

আপডেট:
১৮ জানুয়ারী ২০২২ ১০:৫৫

এলাকাবাসীর বিক্ষোভ মিছিল। ছবি: রাজশাহী পোস্ট

রাজশাহীর দুর্গাপুরে মোছা. মেহেরুন (১৭) নামে এক গৃহবধূকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে এবং শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনায় তার স্বামী তৌফিকুল ইসলাম হিমেলকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবি জানানো হয়েছে। সোমবার (১৭ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় উপজেলার জয়কৃঞ্চপুর চেতনার মোড়ে অনুষ্ঠিত এক বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচিতে এমন দাবি জানান স্থানীয়রা।

কর্মসূচিতে নিহত মেহেরুনের পিতা মাহাবুর রহমান, মা লাইলি বেগম, ভাই মো. সম্রাট, চাচাতো ভাই হাসিবুর রহমান, সাবেক ইউপি সদস্য হাফিজুর রহমান, প্রবীণ ব্যক্তি সাজিদুর রহমান এবং এলাকার নারী, শিশু ও বৃদ্ধসহ বিভিন্ন পেশার শতাধিক মানুষ অংশ নেন। এসময় নিহতের মা, বাবা, ভাই ও স্বজনরা ভেঙে পড়েন কান্নায়। দু`হাত তুলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুতি জানান ন্যায়বিচারের।

কান্নায় ভেঙে পড়ে দু`হাত তুলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ন্যায়বিচারের আকুতি। ছবি: রাজশাহী পোস্ট

মানববন্ধনে নিহতের পিতা মাহাবুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মাদক সেবন করত আমার মেয়ের জামাই হিমেল। যৌতুকের জন্য বিভিন্ন সময়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়েছে। সবশেষ গত ১০ জানুয়ারি আমার মেয়েকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে এবং শ্বাসরোধে হত্যা করে। এরপর ভর্তি করে হাসপাতালে। তবে মেডিকেলের মেঝেতে রেখে সে পালিয়ে যায়। পরে আমরা খবর পেয়ে যাই হাসপাতালে।

ছবি: অভিযুক্ত হিমেল

মেহেরুনের ভাই মো. সম্রাট বলেন, দুই মাস আগে বোনের বিয়েতে প্রায় ১০ লাখ টাকার গহনা ও জিনিসপত্র দেয়া হয়েছিল। এছাড়া আরো দুই লাখ টাকা যৌতুক দিতে হয়েছে মাদকাসক্ত হিমেলকে। সে আগে দুটি হত্যা মামলা ও মাদকাসক্ত হিসেবে চিহ্নিত আসামি। গ্রেপ্তারও হয়েছিল একাধিকবার। তবে এসব বিষয় বিয়ের আগে আমরা জানতাম না। কিন্ত বোনের হত্যাকাণ্ডের পর আমরা দুর্গাপুর থানায় গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, মেহেরুনের পিতা ও নয় চাচাসহ পুরো পরিবার আওয়ামীলীগের সঙ্গে জড়িত। তার দাদা সলিম উদ্দিন প্রামাণিক স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ইউপি ও উপজেলা পরিষদ গঠনের সময় থেকে আওয়ামীলীগের সমর্থনে একটানা ১৭ বছর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। অথচ তার নাতনি হত্যাকারী রয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। এমনকি মামলাও নিচ্ছে না পুলিশ। এদিন কর্মসূচি থেকে অভিযুক্ত হিমেলকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে দুর্গাপুর থানার ওসি হাশমত আলীর বক্তব্য পাওয়া যায় নি। তবে জেলা পুলিশের পুঠিয়া-দুর্গাপুর সার্কেলের এসপি ইমরান জাকারিয়া বলেন, অনেক সময় কিছু ঘটনা পারিবারিকভাবে মীমাংসা হওয়ায় তৎক্ষণাৎ মামলা নেয়া হয় না। তবে নিহতের পরিবারের অভিযোগ থাকলে অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এর আগে গত শনিবার দিনগত রাত ১টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান গৃহবধূ মেহেরুন। আর ১০ জানুয়ারি তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। এরপর থেকে পলাতক রয়েছে অভিযুক্ত স্বামী হিমেল।

 

আরপি/আআ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top