রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ২রা মে ২০২৪, ২০শে বৈশাখ ১৪৩১

ছাড়পত্র ছাড়াই পশু জবাইয়ে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে এলাকাবাসী


প্রকাশিত:
৫ অক্টোবর ২০২১ ০৫:২০

আপডেট:
২ মে ২০২৪ ১৫:০৩

ছবি: পশু জবাই

রাজশাহীর চারঘাটে চিকিৎসকের পরীক্ষা ও ছাড়পত্র ছাড়াই বাজারগুলোতে গবাদি পশু জবাই করে মাংস বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। জবাই করা পশুর শরীরে কোনো রোগ-বালাই রয়েছে কিনা এমন কোনো ধারণা নেই ক্রেতা-বিক্রেতাদের।

একদিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নীরব ভূমিকা, অন্যদিকে জনসচেনতার অভাবের মধ্যে দিয়ে উপজেলার বিভিন্ন বাজার ও পৌর শহরে চলছে মাংস ক্রয়-বিক্রয়। আইন প্রয়োগের দায়িত্ব প্রাণী সম্পদ ও স্বাস্থ্য বিভাগের হলেও তাদের কোনো তৎপরতা নেই বললেই চলে। প্রতারিত হচ্ছে ক্রেতা সাধারণ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পৌরসভা এলাকায় প্রতিদিন অন্তত ৩টি গরু জবাই করা হয়। বুধবার ও শনিবার সাপ্তাহিক হাট বসে। হাটের দিনে একটু বেশি গরু জবাই হয়। প্রতিটি গবাদিপশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার দায়িত্বে একজন চিকিৎসক থাকার কথা রয়েছে।

শনিবার সকালে চারঘাটের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কয়েকটি বাজারে ব্যবসায়ীরা গরু, মহিষ ও ছাগল জবাই করে মাংস বিক্রি করছেন। লোকচক্ষুর অন্তরালে জবাই করা গবাদিপশু বাজারে উচ্চমূল্যে বিক্রি করেন তারা।

এলাকার সচেতন নাগরিকরা বলছেন, এসব গবাদিপশুর বিভিন্ন জটিল রোগ থাকতে পারে। পরীক্ষা ছাড়া গবাদিপশু জবাই করা এবং বিক্রি করা আইনত অপরাধ। কিন্তু এই আইন অমান্য করে বিভিন্ন বাজারে জবাই করা হচ্ছে গবাদিপশু।

সেলিম রেজা নামে একজন ক্রেতা বলেন, পশু অসুস্থ নাকি সুস্থ ছিল আমরা তা অনেকেই জানি না। বিষয়টি দেখভালের দায়িত্ব কার-সংশ্নিষ্ট প্রশাসন, কর্তৃপক্ষের নাকি পশুসম্পদ বিভাগের তা সাধারণ মানুষের অজানা। নিয়ম অনুযায়ী, পশু জবাই করার আগে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ছাড়পত্র এবং পশুর শরীরে সিল দেবেন। সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষের রোগ নির্ণয়ে কোনো ধরনের তদারকি না থাকার ফলে সাধারণ ক্রেতারা ভেজালমুক্ত মাংস কেনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ’

পৌর শহরের বাসিন্দা তোফায়েল জানান,লোকজন মারা যাওয়া গরুর মাংস খাচ্ছে নাকি রোগাক্রান্ত গরু-মহিষের মাংস খাচ্ছে, তা বোঝার কোনো উপায় নেই।

গবাদিপশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার কোনো ছাড়পত্র আছে কি নেই-এমন প্রশ্নের জবাবে মাংস ব্যবসায়ী হেফাজ উদ্দীন বলেন, বেশির ভাগ গরু ভালো থাকায় ছাড়পত্র নেওয়া হয় না। তবে এ মাসের মধ্যে কোনো পশু প্রাণিসম্পদ কর্মকতার কাছ থেকে পরীক্ষা করিয়ে ছাড়পত্র নিয়েছেন কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে গরু বিক্রেতারা নীরব ভূমিকা পালন করেছেন। তবে পৌরসভার কর্মচারীরা এসে মাঝে মাঝে সিল মেরে যায়।

চারঘাট উপজেলা স্যানেটারী কর্মকর্তা আফজাল হোসেন বলেন, ‘আমরা কিছুদিন পর পর বাজার তদারকি করে থাকি। গরুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা প্রাণীসম্পদ অফিসের কাজ। এ ব্যাপারে মাংস বিক্রেতাদের আমরা শুধু বোঝাতে পারি।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মিজানুর রহমান বলেন, প্রতিদিন পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার মত জনবল আমাদের নেই। তবে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়া গবাদি পশুর মাংস খাওয়া ঠিক না। স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা ও ছাড়পত্র দেয়া পৌরসভার কাজ।

চারঘাট পৌর সচিব রবিউল ইসলাম বলেন, আমাদের গবাদিপশু পরীক্ষার জন্য নিজস্ব কোনো জনবল ও শেডঘর নেই। এজন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় না।

 

 

 

আরপি/এসআর-১৬



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top