রাজশাহী শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৬ই চৈত্র ১৪৩০


স্বস্তিতে রাজশাহীর পান চাষিরা


প্রকাশিত:
২৫ অক্টোবর ২০২০ ০৫:০৫

আপডেট:
২৫ অক্টোবর ২০২০ ০৫:১৩

ছবি: সংগৃহীত

বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে কয়েকগুণ লোকসানে রাজশাহী চাষিদের পান বিক্রি করতে হয়েছে। তবে গত কয়েক সপ্তাহ থেকে পানের দাম বাড়তে শুরু করেছে। এতে স্বস্তিতে রাজশাহীর পান চাষিরা।

৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকা দরের বড় পানের বিড়া এখন ৭০ থেকে ১০০ টাকা। আর ছোট ৫ টাকা থেকে ১০ টাকা দরের পানের বিড়া এখন বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা।শনিবার রাজশাহীর মোহনপুর একদিল তলা পানের হাট ঘুরে খুচরা এবং পাইকারি ব্রিক্রেতাদের সাথে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

বিক্রেতারা বলছেন, করোনাভাইরাসের কারণে টানা ৬ মাস লকডাউন থাকায় কয়েকগুণ কম দামে পান বিক্রি করতে হয়েছে। দফায় দফায় বন্যায় পান বরজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে বর্তমান বাজারে পানের দাম বাড়তে থাকায় ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা।

জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, চলতি বছর রাজশাহীতে চার হাজার ৩১১ হেক্টর জমিতে পান উৎপাদন হয়েছে ৬৮ হাজার ৯৭৬ টন। রাজশাহীতে বছরে এক হাজার ১০৩ কোটি ৬১ লাখ টাকার পান বেচাকেনা হয়।

সংস্থাটি আরও বলছে, রাজশাহীর ৬৯ হাজার ২২৮ জন কৃষক পান চাষের সঙ্গে জড়িত আছেন। জেলার মোহনপুর, দুর্গাপুর ও বাগমারা উপজেলায় পান চাষ হলেও মোহনপুর উপজেলাতে উৎপাদন হয় সবচেয়ে বেশি। তবে কয়েক দফা বন্যায় পান বরজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। 

মোহনপুর উপজেলার বাকশিমইল গ্রামের পানচাষি আশরাফ আলী বলেন, ১৫ কাঠা জমিতে পানের বরজ করেছি। অতিবৃষ্টি এবং বন্যার কারণে পানের বরজের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। গত এক মাস আগে যে পানের দাম ছিলো ৫ টাকা বিড়া সেই পানের দাম এখন ৩০ টাকা। এভাবে পানের দাম বাড়তে থাকলে আমরা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবো।

মোহনপুর সদরের পান চাষি উমর আলী জানান, ১০ কাঠা জমিতে পানের বরজ করেছি। পানের উৎপাদনও ভালো হয়েছে। আগে যেই পান বিক্রি হতো ৫০ থেকে ৬০ টাকা বিড়া। সেই পান এখন ৮০ থেকে ৯০ টাকা। বর্তমানে ভালো দাম পেয়ে তিনি খুশি।

মোহনপুর উপজেলার বাকশিমইল গ্রামের পান চাষি আশরাফ আলী বলেন, ১ বিঘা জমিতে পানের বরজ করেছি। চলতি বছর তিন থেকে চার দফা বন্যায় পানের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া তুলনামূলক বরজ থেকে কম পান সংগ্রহ হচ্ছে। খুব অভাবে মধ্য দিয়ে দিন পার হচ্ছে। বর্তমানে পানের দাম বাড়াতে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে।

তিনি আরও বলেন, এক বিড়াতে পান থাকে ৬৪টি। যেই পানের দাম এক সপ্তাহ আগে ছিলো ৫০ থেকে ৬০ টাকা সেই পান বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ১০০ টাকা। আর এক পোয়াতে পান থাকে ৩২ বিড়া। আগে এক পোয়া পানের দাম ছিলো ১৪০০ টাকা এখন বিক্রি হচ্ছে ২৬০০ থেকে ৩০০০ টাকায়। একই কথা জানান উপজেলার ধুরইল গ্রামের আকবর আলী নামের আরেক পান চাষি।

পানের পাইকারি বিক্রেতা সাইদুর রহমান জানান, লকডাউনের সময় পানের বাজার খুবই কম ছিলো। গত এক সপ্তাহ থেকে পানের বাজার বৃদ্ধি পেয়েছে। ছোট পানের পোয়া আগে ৫০০ টাকায় বিক্রি হতো সেই পান এখন ১৫০০ টাকা। আবার বড় পানের পোয়া ১৪০০ টাকায় বিক্রি হতো সেই পান এখন ২৬০০ থেকে ৩০০০ টাকা।

একদিলতলা পানের হাট কমিটির পরিচালক হারুন-অর-রশিদ জানান, করোনাভাইরাসের কারণে টানা ৬ মাস লকডাউনে থাকায় দেশের বিভিন্ন শহরসহ বিদেশে পান রপ্তানি বন্ধ ছিল। গত দুই মাস থেকে সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে যাওয়ায় পুরোদমে পান বেঁচা-কেনা শুরু হয়েছে। এ ছাড়া পানের দামও বাড়তি রয়েছে বলে জানান তিনি।

বেড়েছে পানের দাম, স্বস্তিতে রাজশাহীর চাষিরা। এর আগে বন্যায় পানের বরজ ক্ষতিগ্রস্ত হয় চাষিদের। লোকসানে পড়েন শত শত পানচাষি। বর্তমানে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তারা।

 

 

আরপি/এসআর



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top