রাজশাহী শনিবার, ২৭শে এপ্রিল ২০২৪, ১৫ই বৈশাখ ১৪৩১


শখের নার্সারিই পেশায় রূপ নিলো সেতাব শেখের


প্রকাশিত:
৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:২৪

আপডেট:
২৭ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:১৩

ছবি: নার্সারি

মাত্র পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে নার্সারি করার স্বপ্ন দেখেন সেতাব শেখ। ২০১২ সালে মাত্র ১০ কাঠা জমিতে শখের বসে নার্সারি শুরু করেন। সেই নার্সারি এখন বেড়ে ৫ বিঘা জমিতে।

ছোটবেলা থেকে গাছের প্রতি ভালোবাসা। কোথাও গাছ পেলে সেই গাছ রোপণ করতেন বাড়ির আঙিনায়। এরপর জাগে নার্সারি করার স্বপ্ন। পড়াশোনার পাশাপাশি বাড়িতেই ছোট পরিসরে গাছ রোপণ করেন। সেখান থেকেই গাছের চারা রোপণ করার বিভিন্ন পদ্ধতি আয়ত্ব করা শুরু করেন সেতাব শেখ।

সেতাব শেখের বাড়ি চারঘাট পৌরসভার মিয়াপুর গ্রামে। ২০১৭ সালে ৪ বিঘা জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ নিয়ে বড় পরিসরে শুরু করেন নার্সারি। খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে নার্সারিতে লাভের মুখ দেখতে পান তিনি।

এরপর ধীরে ধীরে নার্সারিতে গাছের প্রজাতির সংখ্যা বাড়াতে থাকেন। সময়ের সাথে সাথে মান ভালো হওয়ায় দূর-দূরান্ত থেকে গাছ কিনতে আসেন অনেকে। কেউ কেউ গাছের বাগান ঘুরে দেখেন। কেউ গাছ কিনে নেন। শখের নার্সারি একসময় বাণ্যিজ্যিকভাবে শুরু করেন। এই নার্সারিতে আয়ের উৎস খুঁজে পান সেতাব শেখ। এরপর আর তাকে পেছনে তাকাতে হয়নি। কয়েক বছরে নির্বিঘ্নে গাছের চারা রোপণ ও বিক্রি করে লাভবান হতে থাকেন তিনি।

সেতাব শেখ জানান, তার নার্সারিতে প্রায় ২শত জাতের গাছ রয়েছে। আমের জাতের মধ্যে সূর্যডিম, হাড়িভাঙ্গা, ল্যাংড়া, আম্রপালি, হিম সাগর, গুটি ফজলসহ প্রায় ৩০টি জাতের আমের চারা রয়েছে। কমলা, মাল্টা, দার্জিলিং কমলা, লটকন, আঙ্গুর, আপেল, বরই, ড্রাগনসহ ২৫ প্রজাতির ফল। ফুলের মধ্যে থাই গোলাপ, রজনীগন্ধা, চায়না টগর, হাসনাহেনা, বকুল, কৃষ্ণচূড়াসহ প্রায় শতাধিক প্রজাতির ফুলের চারা রয়েছে। এছাড়াও আছে তেজপাতা, ছোট এলাচ, চুই ঝাল, অল স্পাইসহ বিভিন্ন প্রজাতির ঔষধি গাছও।

তিনি আরও জানান, জীবিকার তাগিদে এই নার্সারিকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন তিনি। পরিবারের অভাব-অনটনেও কখনোই নার্সারির স্বপ্ন দেখা বন্ধ হয়নি। কয়েকবার অতি বৃষ্টিতে গাছের চারা ভেসে গেলেও তার স্বপ্ন কখনোই তাকে পেছনে ফিরতে দেয়নি। স্বপ্নবাজ হওয়ায় বার বার লোকসানের মুখে পড়েও আবারও নতুন করে শুরু করেছেন নার্সারি। গাছের চারা বিক্রি করে অতিকষ্টে দিনাদিপাত করেছেন। এই নার্সারিতে কর্মসংস্থান হয়েছে ৬ জন বেকার যুবকের। নার্সারির জন্য তারাও ভাগ্যের চাকাটা ঘুরিয়েছেন।

চারঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মদ বলেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় যারা নার্সারি করেছেন, তাদের নার্সারি নিয়মিত পরিদর্শন করা হচ্ছে। এছাড়াও নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হয়। বৃক্ষমেলায় তাদের চারা গাছ বিক্রি করারও সুযোগ রয়েছে।



 

 

আরপি/এসআর-০২



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top