রাজশাহী রবিবার, ১২ই মে ২০২৪, ৩০শে বৈশাখ ১৪৩১


সৌরভকেই আইসিসিপ্রধান হিসেবে দেখতে চান মোড়লরা!


প্রকাশিত:
২৯ জুন ২০২০ ১৮:৪৪

আপডেট:
১২ মে ২০২৪ ০৮:২২

ছবি: সংগৃহীত

ক্রিকেটবিশ্বে অঘোষিত মোড়ল অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড চায় আইসিসিপ্রধান হিসেবে সৌরভ গাঙ্গুলীই আসুক।

যদিও বিষয়টি নিয়ে এখনও দোটানায় আছেন ভাতীয় ক্রিকেট বোর্ড ও সৌরভ নিজেও। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।


আগামী কয়েক দিনের মধ্যে এসপার-ওসপার সিদ্ধান্ত নিতে হবে সৌরভ গাঙ্গুলীকে। ভারতীয় বোর্ডকে ঠিক করতে হবে– বিশ্ব ক্রিকেটে অনেকের ইচ্ছায় সাড়া দিয়ে আইসিসির সর্বোচ্চ পদের জন্য তারা লড়বেন কিনা।


ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থার বিদায়ী চেয়ারম্যান শশাঙ্ক মনোহরও একজন ভারতীয়। যদিও তার সঙ্গে ভারতীয় বোর্ডের সম্পর্ক একেবারেই বন্ধুত্বপূর্ণ নয়।


ভারতীয় বোর্ডকর্তারা মনে করেন, আইসিসিতে তাদের ক্ষমতা খর্ব করেছেন মনোহরই। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, ফের ভারত থেকে চেয়ারম্যান হওয়া নিয়ে কোনো অসুবিধা নেই।


দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী ক্রিকেট দেশ চাইছে করোনাভাইরাস নিয়ে এমন সংকটের সময়ে শক্ত হাতে কেউ এসে হাল ধরুক।


কারও কারও সরাসরি প্রস্তাব– সৌরভ গাঙ্গুলীই আসুক নতুন আইসিসিপ্রধান হিসেবে। গ্রাহাম স্মিথ এ দাবি তুলেছেন। ডেভিড গাওয়ার বলেছেন, সৌরভ যোগ্যতম ব্যক্তি।

 

জুলাইয়ের মধ্যেই পরবর্তী চেয়ারম্যান নির্বাচনের প্রক্রিয়া সেরে ফেলতে চায় আইসিসি। তার মানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য বোর্ডকর্তাদের হাতে সময় থাকছে ১৫ দিনের মতো।

বোর্ডের অন্দরমহলে এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। এমনও শোনা গেল যে, সৌরভের মনোনয়ন নিয়ে অন্য দেশের বোর্ডকে বাজিয়েও দেখা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য সাড়া পাওয়া গেলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি।


আইসিসি চেয়ারম্যানের দৌড় থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন পাকিস্তানের এহসান মানি। সিঙ্গাপুরের ইমরান খাজার নাম শোনা যাচ্ছিল। এখন তার দাবিও তেমন জোরালো নয়।


ইংল্যান্ডের কলিন গ্রেভস খুবই আগ্রহী। কিন্তু তার দিকেও যথেষ্ট সমর্থন নেই। অন্য কয়েকটি বোর্ডের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে মনে হচ্ছে– ‘ডার্ক হর্স’ হিসেবে উঠে আসতে পারেন নিউজ়িল্যান্ডের গ্রেগ বার্কলে।


২০১২ থেকে হ্যাডলির দেশের বোর্ডে ডিরেক্টর তিনি। এখন আইসিসিতে তিনিই নিউজ়িল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করেন।


ক্রিকেটবিশ্বের চোখ যদিও ভারতের দিকে। দেশের নানা প্রান্তে ওয়াকিফহাল মহলে কথা বলে বোঝা গেল, সৌরভের আইসিসি যাওয়া না যাওয়া একাধিক বিষয়ের ওপর নির্ভর করছে।


প্রথমত ভারতীয় বোর্ড ইতিমধ্যে সুপ্রিমকোর্টে প্রেসিডেন্ট সৌরভ এবং সচিব জয় শাহের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করেছে।


সুপ্রিমকোর্ট এখনও শুনানির দিন জানাননি। হিসাবমতে, সেপ্টেম্বরে পদে বসা সৌরভ-জয়ের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা জুলাইয়ে।


আবার রাজনৈতিক মাঠে আবির্ভাব ঘটিয়ে সৌরভ বিজেপির মুখ হয়ে উঠবেন কিনা, সেই কৌতূহলও রয়েছে। তবে ওয়াকিফহাল মহলের মতে, এ মুহূর্তে রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য ক্রিকেট পদে লড়াই করা আটকে নেই।

সৌরভদের যদি মেয়াদ বাড়ে, আইসিসি চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ের চিত্রও পাল্টে যেতে পারে। তখন সৌরভের ভারতীয় বোর্ড প্রেসিডেন্ট হিসেবে থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।


একে তো তিনি নিজে ভারতীয় বোর্ড নিয়ে যতটা আগ্রহী, ততটা আইসিসি প্রধানের পদ নিয়ে নন। তার ওপর বোর্ডের শীর্ষ কর্তারাও মনে করেন– সৌরভ চলে যাওয়া মানে সফলতম অধিনায়কের মাধ্যমে চার বছর পরে তৈরি হওয়া বোর্ডের ভাবমূর্তি ফের ধাক্কা খেতে পারে।


ভারতের ক্রিকেট মহলে আইসিসি চেয়ারম্যানের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আর একটি নাম শোনা যাচ্ছে– অনুরাগ ঠাকুর।


অনুরাগ আইসিসি চেয়ারম্যানের যোগ্যতা, মানে আটকাচ্ছেন কিনা তা নিয়েও বিবাদ রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন– রাজনৈতিক প্রতিনিধিদের নিয়ামক সংস্থার পদাধিকারী হওয়া নিষিদ্ধ হয়ে গেছে।


আবার অনুরাগ সমর্থকদের পাল্টা প্রশ্ন– শরদ পাওয়ার তো আইসিসির প্রধান হয়েছিলেন! তবে পাওয়ারের পর নিয়মেও অনেক পরিবর্তন হয়েছে।


তৃতীয় যে নামটি হালকাভাবে হলেও ঘুরছে, তা বাতিল হওয়ার দিকেই পাল্লা ভারী– এন শ্রীনিবাসন। একে তো তার বয়স সত্তরের ওপরে।

সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, ভারতীয় বোর্ডের প্রতিনিধি হতে পারবেন না। তার ওপরে জামাই গুরুনাথ মাইয়াপ্পানের ক্রিকেট জুয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়ার সেই ঘটনাতেও আটকে যেতে পারেন।


আগামী কয়েক দিনে করোনার আতঙ্ক চলার মাঝেই উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে আইসিসি মসনদ নিয়ে আলোচনা।


কেউ কেউ মনে করিয়ে দিচ্ছেন, সৌরভীয় ইতিহাস বলছে– তিনি সংকটের মুহূর্তে ব্যাট ধরতে পছন্দ করেন। ম্যাচ গড়াপেটা-পরবর্তী কঠিন অধ্যায়ে অধিনায়ক হয়ে ভারতীয় ক্রিকেটে আগ্রাসী, হার না মানা মনোভাব তৈরি করেন এ বাঙালি ক্রিকেটার।

 

 

আরপি/এমএইচ-৭



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top