সাব্বিরের বিরুদ্ধে বর্ণবাদী আচরণের অভিযোগ
মাঠের পারফরম্যান্সে আলোচনায় নেই। লাইমলাইটে না থাকায় তাকে খুঁজেও পাওয়া যাচ্ছিল না। কেউ কেউ জিজ্ঞেস করছিলেন, কোন দলে খেলছেন সাব্বির রহমান? ১০ ম্যাচে যার রান ১৫১, তাকে মনে না রাখা অস্বাভাবিক নয়।
ব্যাট যখন কথা বলছিল না তখন তিনি এগিয়ে গেলেন ভিন্ন পথে। মাঠের বাইরে বিতর্কিত আরেকটি কাণ্ডে সাব্বির আবার আলোচনায়। প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব শেখ জামালের স্পিন অলরাউন্ডার ইলিয়াস সানীকে গালাগাল, ইট ছুড়ে মারা ও বর্ণবাদের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
এই ঘটনায় শেখ জামাল ক্লাব কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিস বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে। সিসিডিএম চেয়ারম্যান ও বিসিবি পরিচালক কাজী ইনাম বরাবর চিঠি পাঠিয়ে সাব্বিরের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেছে শেখ জামাল।
ঘটনা জানাতে গিয়ে ইলিয়াস সানী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘গত ১৩ জুন আমাদের সঙ্গে ওদের ক্লাবের খেলা ছিল। আমি ব্যাটিংয়ে নামার সময় থেকেই অকথ্য ভাষায় কথা বলতে থাকে। ক্রিকেট মাঠে স্লেজিং হয়। কিন্তু গালাগাল করা... মাঠে সেই বিষয়টি সমাধান হয়ে যায়।’
ওখানেই শেষ নয়, সানী আরও বলেন, ‘আজ বিকেএসপিতে আমি যখন ফিল্ডিং করছিলাম তখন আবার নিজ থেকে এগিয়ে এসে ঝামেলা করে। বাস থেকে নেমে আমাকে কাইল্যা, কাইল্যা বলে ডাকতে থাকে। তার সঙ্গে আমার সম্পর্ক এতটা গভীরও নয় যে এমনটা বলতে পারে। দীর্ঘদিন সেও ক্রিকেট খেলে, আমিও খেলছি। কিন্তু এরকম ডাক কখনও তার মুখ থেকে শুনিনি। এরপর ইট নিয়ে আমাকে ছুড়ে মারে। আমার গায়ে লাগেনি, কিন্তু ফিল্ডিং করছিলাম বলে আমাকে সাবধানী হওয়া দরকার ছিল। আমি আম্পায়ার ও ম্যাচ রেফারির কাছে অভিযোগ করি। তারা খেলা থামিয়ে রেখেছিল ২-৩ মিনিট। সাব্বিরকে বকা দিয়ে ওখান থেকে সরিয়ে দেয়।’
ইলিয়াস সানীর দাবি, পুরোনো ক্ষোভ থেকেই এমনটি করতে পারেন সাব্বির। সেদিন তারা ম্যাচ হেরেছিল। একই সঙ্গে ইলিয়াস সানীর সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ান। সিসিডিএমে দেওয়া চিঠিতে শেখ জামাল লিখেছে, ‘শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব লিমিটেড বনাম ওল্ড ডিওএইচএস স্পোর্টস ক্লাব এর মধ্যকার খেলা চলাকালে শেখ জামালের খেলোয়াড় মোহাম্মদ ইলিয়াসকে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের খেলোয়াড় সাব্বির রহমান রুম্মন মাঠের বাইরে থেকে বিনা কারণে উপর্যুপরি ইট ছুড়ে মারেন। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও উচ্চস্বরে বর্ণ বৈষম্যমূলক আচরণ করে বলেন যে, ওই কাইল্যা, কাইল্যা, কাইল্যা ইলিয়াস। যা একজন পেশাদার ক্রিকেট খেলোয়াড় হিসেবে এমন আচরণ শুধু অশোভনীয়ই নয়, শাস্তিযোগ্য অপরাধও বটে। ’
সাব্বিরের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ আসলেও তিনি অস্বীকার করেছেন। রাইজিংবিডিকে মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি এসব সম্পর্কে কিছুই জানি না। তার সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালো। আমার এসব করার কোনও প্রয়োজনই নেই। আমার সঙ্গে এরকম ঘটনা ঘটেনি। তাকে কাইল্যা বলে অনেকেই ডাকে। আমারও এরকম নাম আছে। এসব হয়েই থাকে খেলোয়াড়দের মধ্যে। কিন্তু এসব নিয়ে অভিযোগ করার কী আছে?’
মাঠে ও মাঠের বাইরের বিতর্কিত ঘটনার জন্য সাব্বির এর আগেও নিষিদ্ধ হয়েছেন। খেলা চলাকালে গ্যালারিতে গিয়ে দর্শক পিটিয়ে ছয় মাস নিষিদ্ধ হয়েছেন। এবারের অপরাধও বড় অপরাধ। সামনে সাব্বিরের ভাগ্যে কী আছে তা সময়ই বলে দেবে।
আরপি/ এসআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: