রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১

মেস বন্ধের প্রভাব রাজশাহীর কাঁচাবাজারে


প্রকাশিত:
৩ জুন ২০২০ ০২:৩৬

আপডেট:
৩ জুন ২০২০ ০২:৩৬

ছবি:রাজশাহীর কাঁচাবাজার

করোনাকালীন সময়ে রাজশাহীর প্রায় ৫ শতাধিক মেস-হোস্টেল বন্ধ আছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় প্রায় ২ লাখ শিক্ষার্থী বাসায়। এর প্রভাব পড়েছে রাজশাহীর কাঁচাবাজারে। করোনার প্রভাবমুক্ত থাকলেও বড় সংখ্যক শিক্ষার্থী নিত্যপণ্য না কেনায় নিম্নমুখী রাজশাহীর বাজারদর।

লকডাউন শিথিল করায় সবধরণের শাক-সবজি পর্যাপ্ত পরিমাণে সরবরাহ হচ্ছে। তবে ক্রেতার অভাবে অবিক্রিত থেকে যাচ্ছে অনেক সবজি। রাজশাহীর বাজারগুলোতে কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে মাছ এবং সবজির দাম।

আজ মঙ্গলবার রাজশাহীর সাহেববাজার, কোর্ট বাজার, উপশহর নিউমার্কেট, লক্ষীপুরসহ আরও কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে এমনটাই দেখা গেছে।

গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল প্রতি কেজি ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা। বর্তমানে কেজিতে ২০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে সবজি, মাছ, ডাল, চিনি, আটা, গুড়া দুধসহ সব ধরনের মুদি পণ্যের দাম। বাজারে বেশিরভাগ সবজি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে। সেই সাথে কিছু সবজির দাম কমেছে আবার বেড়েছে কিছু সবজির। এক সপ্তাহের ব্যবধানে মিষ্টি কুমড়ার দাম কমেছে ১৫ টাকা, যা এখন বিক্রি হচ্ছে ১০-১২ টাকায়। পটল, বেগুনের দাম কিছুটা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকায়।

নগরীর কাঁচাবাজারগুলো ঘুরে দেখা যায়, লাউ প্রতি পিস মানভেদে ১০-১৫ টাকা, বাঁধাকপি ২০-২৫ টাকা, বেগুন প্রতিকেজি ২০-২৫ টাকা, মূলা ১০-১৫ টাকা, টমেটো ১৫-৩০ টাকা, আলু ২৪ টাকা, করলা ৩০-৩৫ ও ঝিঙ্গা ৪০ টাকা দরে। এছাড়া সবধরনের শাক বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ১৫ টাকা আঁটি।

এদিকে আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে পিঁয়াজ, আদা ও রসুন। তবে কমেছে কাঁচা মরিচের দাম। প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা থেকে ৪০ টাকায়। কেজি প্রতি দেশি পিঁয়াজ ৩৮ টাকা, ভারতীয় পিঁয়াজ ৩০ টাকা দরে পাওয়া যাচ্ছে। রসুন ১৪০ টাকা, আদা ১১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে গত সপ্তাহের দামে বিক্রি হচ্ছে সবধরনের চাল। মিনিকেট ৫০-৫৬ টাকা, নতুন আঠাশ ৪৩-৪৫ টাকা, গুটিস্বর্ণা ৩৫-৩৮ টাকা, পাবনা সুমন ৪২-৪৫ টাকা, জিরাশাইল ৫২ টাকা, ৪৯ নম্বর চাল ৬০ টাকা, চিনিগুঁড়া আতপ ৯০-১০০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

অপরিবর্তিত আছে মুদি পণ্যের দাম। বাজারে প্রতি খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ২৮ টাকা, প্যাকেট ৩২ টাকা, চিনি আমদানিকৃত ৬৪, দেশি চিনি ৬৪ টাকা, মসুর ডাল ১৩০, মুগডাল ১৪০, খেঁসারি ৯০, এঙ্কার ডাল ৪৪ টাকা কেজি।

মটর ৮০, ছোলা ৭২, লবণ ৩০ টাকা। খোলা সয়াবিন তেল ৮৮ টাকা আর ব্র্যান্ডভেদে ৫ লিটারের তেলের বোতল বিক্রি হচ্ছে ৫২০ থেকে ৫০৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। রাইস, পুষ্টি ব্রান্ড তেল প্রতি ৫ লিটার বোতল ৬৪০ থেকে ৬৩০ দরে বিক্রি হচ্ছে।

রাজশাহীর বাজারগুলোতে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫-১৪০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকায়। লেয়ার মুরগির দাম প্রতিকেজি ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায়। যেগুলো গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকা থেকে ২১০ টাকায়। অপরিবর্তিত আছে হাঁসের দাম। পাতিহাঁস ৩২০ টাকা, রাজহাঁস ৪০০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহের দামেই প্রতিকেজি গরুর মাংস ৫৪০ টাকা, খাসির মাংস ৭২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারগুলোতে মুরগির মাংসের দাম কমলেও ডিমের দাম বেড়েছে। মুরগির প্রতি হালি লাল বাদামি ডিম ৩০ টাকা, সাদা ডিম ২৬ টাকা, হাঁসের ডিম ৩৬ টাকা, দেশি মুরগির ডিম ৫০ টাকা, কোয়েল ৮ টাকা হালি বিক্রি হতে দেখা গেছে।

বিক্রেতারা বলছেন, রাজশাহীতে স্কুল-কলেজের ছাত্রদের নিয়ে তাদের ব্যবসা। নিত্যপণ্যের সরবরাহ আছে। কিন্ত প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বেচাকেনা খুবই কম।

সবজি ব্যবসায়ী মুকুল হোসেন রাজশাহী পোস্টকে বলেন, ‘বাজারে প্রচুর সবজি, কিন্তু কেনার লোক নেই। লকডাউন খুললেও বেঁচাকেনা নেই। আমাদের সীমিত বেঁচাকেনা এখন। তবে স্কুল কলেজ খুললে ছাত্ররা আসলে আমাদের স্বস্তি।’

মাছ ব্যবসায়ী জামশেদ আলী রাজশাহী পোস্টকে বলেন, ‘প্রতি কেজি রুই বিক্রি করছি ১৮০ টাকা থেকে ২৪০ টাকা, কাতল ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা। এখন কেনার লোক নেই। সারাদিন মাছ নিয়ে বসে আছি। মেস বন্ধ, মাছ বিক্রিও থমকে গেছে।’

এছাড়া শোল ৪৫০ টাকা, পাবদা ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা, টেংরা ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, বোয়াল ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, আইড় ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। ছোট আকারের প্রতিকেজি ইলিশের দাম ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। মাঝারি এবং বড় আকারের ১২শ’ থেকে ১৩’শ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

তবে লকডাউনের পর তুলনামূলক কম দামে পর্যাপ্ত নিত্যপণ্য পাওয়ায় স্বস্তির শ্বাস ফেলছেন ক্রেতারা।

আরপি/আআ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top