রাজশাহী বুধবার, ৮ই মে ২০২৪, ২৫শে বৈশাখ ১৪৩১


সংবিধানের কারণে দেশে ‘প্রকৃত গণতন্ত্রের’ চর্চা সম্ভব হচ্ছে না: জি এম কাদের


প্রকাশিত:
৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ২১:৪১

আপডেট:
৮ মে ২০২৪ ০০:৫৫

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, সংবিধানের কারণে দেশে ‘প্রকৃত গণতন্ত্রের’ চর্চা সম্ভব হচ্ছে না।

গণআন্দোলনের মুখে নব্বইয়ের যে দিনে সামরিক শাসক এইচ এম এরশাদ ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন সেই দিনে তার ভাই জি এম কাদের এমন মন্তব্য করেন।

কাদের আরোও বলেছেন, “বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী প্রকৃত গণতন্ত্রের স্বাদ গ্রহণ করা সম্ভব নয়। এই সংবিধান অনুযায়ী সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক চর্চা আমরা করতে পারছি না।”

১৯৮২ সালে বিচারপতি আব্দুস সাত্তারকে হটিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে বসা এরশাদ ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর গণআন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হন। বিভিন্ন দল ও সংগঠন দিনটিকে ‘স্বৈরাচার পতন দিবস’ হিসেবে পালন করে। অপরদিকে এরশাদের জাতীয় পার্টি পালন করে ‘সংবিধান সংরক্ষণ দিবস’ হিসেবে।

দিবসটি উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সভায় জি এম কাদের বক্তব্য দেন বলে দলটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।

জি এম কাদের আরো মন্তব্য করে বলেন, সংসদীয় পদ্ধতির ‘মূল স্পিরিট’ রাজনীতিবিদরা এখনও ‘গ্রহণ করতে পারেনি’।  

বর্তমান সংবিধানের ৭০ ধারার সমালোচনা করে তিনি বলেন, “৭০ ধারা অনুযায়ী সংসদ সদস্যরা নিজেদের বিবেক বুদ্ধি বা বিবেচনার উপরে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। দলের সঙ্গেই তাদের থাকতে হবে, দলের বাইরে তারা যেতে পারে না। সংসদকে সকল কর্মকাণ্ডের আসল কেন্দ্রবিন্দু করা আমাদের সংবিধান অনুমোদন করে না এবং সংসদের কাছে মন্ত্রীদের জবাবদিহি এটাও আমাদের সংবিধান অনুমোদন করে না।”

সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে,

কোন নির্বাচনে কোন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরুপে মনোনীত হইয়া কোন ব্যক্তি সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হইলে তিনি যদি-

(ক) উক্ত দল হইতে পদত্যাগ করেন, অথবা

(খ) সংসদে উক্ত দলের বিপক্ষে ভোটদান করেন,

তাহা হইলে সংসদে তাঁহার আসন শূন্য হইবে, তবে তিনি সেই কারণে পরবর্তী কোন নির্বাচনে সংসদ-সদস্য হইবার অযোগ্য হইবেন না।

সংবিধানের এই অনুচ্ছেদের কারণে সরকার দলীয় সংসদ সদস্যরা মন্ত্রীদের কর্মকাণ্ডের ‘বিরোধিতা করতে পারেন না’ বলে মন্তব্য করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান কাদের।

তিনি বলেন, “বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী সরকার প্রধান সকল কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু থাকেন। এই কারণে আমাদের দেশে প্রকৃত গণতান্ত্রিক ধারা অর্জিত হচ্ছে না। আর এ কারণেই আগে পিছে যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন তাদের সবাইকে স্বৈরাচার বলা হয়েছে।

“কিন্তু সবাই মিলে দোষ দিয়েছেন শুধু একজনকে, তিনি হচ্ছেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এই অপবাদ দিয়েই হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও জাতীয় পার্টির ওপর চরম অন্যায়-অবিচার করা হয়েছে।”

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, “আমাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার কারণে যে কোনো রাজনৈতিক দলও প্রকৃত গণতান্ত্রিক চর্চা করতে পারে না।”

এসময় জাতীয় পার্টির ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এস এম ফয়সল চিশতীর সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, নূর-ই-হাসনা লিলি চৌধুরী, মীর আব্দুস সবুর আসুদসহ অন্য নেতারা বক্তব্য দেন।

 

 

আরপি/এমএইচ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top