রাজশাহী রবিবার, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ই আশ্বিন ১৪৩১


ভাসানচরে রোহিঙ্গারা


প্রকাশিত:
৪ ডিসেম্বর ২০২০ ২২:২৮

আপডেট:
৪ ডিসেম্বর ২০২০ ২২:২৯

 

চট্টগ্রামের পতেঙ্গার জেটি থেকে এক হাজার ৬৪২ রোহিঙ্গা নিয়ে ভাসানচড়ে পৌঁছেছে নৌবাহিনীর সাতটি জাহাজ।

শুক্রবার দুপুর দুইটার দিকে নোয়াখালীর চরটিতে জাহাজগুলো পৌঁছায়। সকাল সোয়া দশটার দিকে পতেঙ্গার নৌবাহিনীর জেটি থেকে জাহাজগুলো গন্তব্যের দিকে ছেড়ে যায়। ভাসানচরে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বৃহস্পতিবার উখিয়ার আশ্রয়শিবির থেকে রোহিঙ্গাদের বাসে করে চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয়েছিল।

রাতে তাদের রাখা হয় বাংলাদেশ নৌবাহিনী রেডি রেসপন্স বাথ জেটি ও বিএএফ শাহীন কলেজ মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী ট্রানজিট ক্যাম্পে।

২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এর আগে থেকে ছিল আরও প্রায় চার লাখ। বর্তমানে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে ৩৪ টি ক্যাম্পে।

কক্সবাজার ক্যাম্পে ঘিঞ্জি পরিবেশ, ভূমিধসের আশঙ্কা, নিরাপত্তাহীনতাসহ নানা কারণে সেখানে ভিড় কমাতে উদ্যোগ নেয় সরকার। যদিও বেশ কিছু এনজিও ও বিদেশি সংস্থার কারণে রোহিঙ্গাদেরকে স্থানান্তরে রাজি করানো যাচ্ছিল না। তবে সেপ্টেম্বরের শুরুতে একজন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরের সুযোগ-সুবিধা দেখিয়ে আনার পর একটি অংশ সেখানে যেতে রাজি হয়।

ভাসানচরের পরিবেশ আর কক্সবাজারের ক্যাম্পের পরিবেশের মধ্যে ফারাক বিস্তর। কক্সবাজার ক্যাম্পে থাকতে হয় কাচা ঘরে গাদাগাদি করে। বাইরের পরিবেশও ভালো না। লাখ লাখ মানুষ এক জায়গায় থাকলে সমস্যার অন্ত নেই। ছেলেপুলে একটু স্বস্তিতে খেলাধুলা করবে, সে উপায়ও নেই।

অন্যদিকে ভাসানচরে ব্লকের তৈরি বাসভবনগুলো কেবল দৃষ্টিনন্দনই নয়, সেখানে পয়নিঃষ্কাষণ থেকে শুরু করে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা বেশি। সবুজ প্রকৃতিতে স্বস্তিতে নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ পাবে সবাই।

ভাসানচরের প্রকল্পটি শুরু হয় ২০১৮ সালে। দুই হাজার ৩১২ কোটি টাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে দেড় হাজার একতলা ভবন তৈরি করা হয়েছে। আরও আছে ১২০টি বহুতল ভবন, যা সাইক্লোন আশ্রয় কেন্দ্র ও অন্যান্য সময় অফিস হিসেবে ব্যবহার করা হবে।

সেখানে আবাসনের পাশাপাশি স্কুল, কমিউনিটি সেন্টার ও হাসপাতাল করা হয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য আছে সোলার পাওয়ার। জেনারেটরের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। রান্নার জন্য সিলিন্ডার গ্যাস সরবরাহের ব্যবস্থাও থাকবে।

সেখানে রোহিঙ্গাদের আয়বর্ধকমূলক নানা প্রকল্পও নেয়া হয়েছে। খামারের কাজ, হাতের কাজ ছাড়াও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা থাকবে। ফলে আয় করতে পারবে রোহিঙ্গারা।

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে চুক্তি হলেও মিয়ানমারের অনাগ্রহের কারণে তা বাস্তবায়িত হয়নি। দুই বার প্রত্যাবাসনের খুব কাছাকাছি গিয়েও এক জন রোহিঙ্গাকেও ফেরত পাঠানো যায়নি মিয়ানমারের কারণে।

 

আরপি/ এমআই 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top