রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ৩০শে নভেম্বর ২০২৩, ১৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩০


আ.লীগ নেতার স্ত্রীর নির্যাতনে শিশুর মৃত্যু


প্রকাশিত:
২৪ অক্টোবর ২০২০ ০৪:৫২

আপডেট:
৩০ নভেম্বর ২০২৩ ২৩:৩২

শিশু সাদিয়ার চিকি’সাধীন অবস্থার ছবি

শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব শাকিলের স্ত্রী রাবেয়া আক্তার ঝুমুরের নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মী সাদিয়া ওরফে ফেলি (১০) মারা গেছে।

শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। সাদিয়া শ্রীবরদী পৌর এলাকার মুন্সিপাড়া এলাকার কৃষক সাইফুল ইসলামের মেয়ে।


মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম বলেন, মরদেহ হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। নিহতের প্রযোজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করে ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানায় পাঠানো হবে।

এর আগে, চলতি বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে গৃহকর্মীকে নির্যাতনের ঘটনায় শ্রীবরদী উপজেলা শহরের খামারিয়াপাড়া এলাকা থেকে রাবেয়া আক্তার ঝুমুরকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

প্রসঙ্গত, ১১ মাস আগে সাদিয়াকে গৃহকর্মী হিসেবে নিয়ে আসেন রাবেয়া আক্তার ঝুমুর। এরপর থেকে মাঝে মধ্যে কাজে সামান্য ভুল হলেই সাদিয়ার ওপর চালানো হতো নির্যাতন। শুধু নির্যাতন নয়, তাকে খাবার পর্যন্ত দেয়া হতো না ঠিকভাবে। বাড়ি যেতে চাইলেই মারধর আরও বেড়ে যেত। এমনকি বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করতে দেয়া হতো না। একপর্যায়ে সাদিয়া বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় গৃহকর্ত্রী ঝুমুর।


সাদিয়া বাড়িতে যাওয়ার পর ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে তার অবস্থা দেখে ৯৯৯ নম্বরে কল করে অভিযোগ জানায় পরিবারের লোকজন। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ রাতেই অভিযুক্ত ঝুমুরকে আটক করে।

এরপর অসুস্থ সাদিয়াকে ওই রাতেই শেরপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু অবস্থা ভালো না হওয়ায় পরদিন শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় তাকে। সেখানে ২৭ দিন চিকিৎসা নেয়ার পর শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে মৃত্যুর কাছে হেরে যায় সাদিয়া।

ওই সময় নির্যাতিত সাদিয়া জানিয়েছিল, তাকে ঠিকমতো খাবার পর্যন্ত দেয়া হতো না। পশুর মতো নির্যাতন করলেও কেউ বাধা দিতো না। বাড়ি যেতে চাইলেই মারধর করা হতো।

শেরপুর সদর হাসপাতালে ভর্তির পর আবাসিক মেডিকেল অফিসার খায়রুল কবির সুমন জানিয়েছিলেন, মেয়েটির ওপর নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে, যা দীর্ঘদিন ধরে করা হচ্ছে। পুরো শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। শরীরের স্পর্শকাতর স্থানেও অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পেটে পানি এসে গেছে তার।

এ বিষয়ে শেরপুরের শ্রীবর্দী থানা পুলিশের ওসি রুহুল আমিন তালুকদার বলেন, এ ঘটনায় ঝুমুরকে অভিযুক্ত করে শ্রীবরদী থানায় একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় ঝুমুরকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

 

 

আরপি/এসআর



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top