রাজশাহী মঙ্গলবার, ১৬ই এপ্রিল ২০২৪, ৪ঠা বৈশাখ ১৪৩১


রাত এলেই কান্না ‘বাবা কোলে নাও’


প্রকাশিত:
৭ জুন ২০২০ ২০:৩৯

আপডেট:
১৬ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:৫১

ছবি: আলীশাবা রহমান

রাত নামলেই সাড়ে তিন বছরের আলীশাবা রহমান বাবার বুকেই মাথা রেখে ঘুমিয়ে পরেন। কিন্তু গত কদিন ধরে বাবা জানালা থেকেই কথা বলছেন। তাকে কোলেও নিচ্ছে না। ছোট্ট শিশু জানে না তার বাবা কোভিড-১৯ এ সংক্রমিত হয়ে আইসোলেশনে।

করোনাভাইরাস পজিটিভ হওয়ায় পরিবারকে সংক্রমণে আলাদা কক্ষে থাকছেন পুলিশ কর্মকর্তা বাবা। আর তাই হঠাৎ বাবার আচরণে পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছে সাড়ে তিন বছরের শিশুকন্যা আলীশাবা রহমান ইবতিদা।

কী কারণে কাছে আসছে না বাবা, কেনই বা কোলে নিয়ে আদর করছে না? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে আইসোলেশনে থাকা বাবাকে জানালা দিয়ে বারবার ডাকছেন কন্যা ইবতিদা। রুমের মধ্যে ঢুকতে এবং বাবার কাছে যেতে না পেরে ধৈর্যহারা হয়ে পড়েছে পুলিশ কর্মকর্তার শিশুকন্যা।

জানা গেছে, গত ৩১ মে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক আব্দুর রহমান মুকুলের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। দায়িত্বরত অবস্থায় তিনি করোনা আক্রান্ত হন এবং রিপোর্ট আসার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি নিজ ঘরে আইসোলশনে চলে যান।সেই থেকেই আব্দুর রহমান মুকুল মেয়েকে কোলে নিতে পারছেন না, পারছেন না আদর করতে। সেই কষ্ট চেপে রেখেও মেয়েকে অনবরত সান্ত্বনা দিয়ে যাচ্ছেন করোনাযোদ্ধা এই পুলিশ কর্মকর্তা। তবে কবে স্বাভাবিক অবস্থায় তিনি ফিরতে পারবেন তাও নিশ্চিত করে বলতে পারছে না কেউ।

আব্দুর রহমান মুকুল বলেন, ‘করোনা শনাক্ত হওয়ার পর থেকে সমাজ ও পরিবারের স্বার্থে নিজেকে আলাদা রাখছি। কিন্তু সাড়ে তিন বছরের মেয়েকে তা বোঝাতে পারছি না। অবশ্য তা বোঝানো সম্ভবও না। সে বুকের ওপর শুয়ে থাকতে চায়, কাছে আসতে চায়। এই বয়সে সে কখনো আমার বুকের ওপর ছাড়া ঘুমায়নি। তাই এ আবদারটাই বেশি। কেন অফিসে যাচ্ছি না, তাও জিজ্ঞাসা করছে আমার মেয়ে।

মেয়েকে কোলে নিতে না পেরে আমারও কষ্ট হয়, কিন্তু করার তো কিছু নেই। হয়তো একদিন আসবে আমি আমার মেয়েটাকে আবার জড়িয়ে ধরতে পারব। আল্লার কাছে এই দোয়াই করি।

 

আরপি/এমএইচ-৩



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top