গরম পানি ঢেলে কাজের মেয়েকে অমানবিক নির্যাতন!
বিভিন্ন সময় গৃহকর্মীদের নির্যাতনের খবর শোনা যায়। কিন্তু তাই বলে গায়ে গরম পানি! হ্যাঁ এবার কাজের মেয়ের গায়ে গরম পানি ঢেলে নির্যাতনের খবর পাওয়া গেছে।
ভৈরবে গৃহকর্তীর অমানবিক নির্যাতনে কাজের মেয়ে সাদিয়া বেগম (১৮) গুরুতর আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ দুজনকে আটক করেছে।
ভৈরব বাজারের গিয়াস উদ্দিন মিয়ার কন্যা মেহেরুন্নেছা অপি তুচ্ছ ঘটনায় সোমবার সন্ধ্যায় তার পিঠে লাঠিপেটাসহ হাতে গরম পানি ঢেলে দিয়েছে বলে তার অভিযোগ। সাদিয়ার ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার সিংগেরকান্দা গ্রামের মৃত জামাল মিয়ার মেয়ে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ভৈরব পৌরসভার প্যানেল মেয়র মো. আল আমিনের সহায়তায় ও পরামর্শে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য আহত সাদিয়াকে ভর্তি করে দেন তার খালা।
হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, সাদিয়ার শরীরে অনেক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে তার নির্যাতনের বর্ণনা শুনেছে।
জানা গেছে, সাত বছর আগে সাদিয়া বেগম তার দুসম্পর্কের এক খালার মাধ্যমে ভৈরব বাজারের মেহেরুন্নেছা অপির বাসায় কাজ করতে আসে।
সাদিয়া জানায়, প্রথম দিকে তাকে কাজের জন্য কোনো নির্যাতন করা হতো না। কয়েক বছর যাওয়ার পর কাজ করতে গিয়ে তুচ্ছ ঘটনায় যখন তখন তাকে মারধোরসহ প্রায়ই তার হাতে গরম পানি ঢেলে ছ্যাকা দিত। অনেক সময় তার হাত ও পা বেঁধে মারধোর করত। তাকে বাড়িতে যেতে দিত না। এমনকি বাসার বাইরেও যেতে দিত না। গৃহকর্তী বাসার বাইরে গেলে তাকে তালাবদ্ধ করে ঘরে রেখে যেত।
সাদিয়া জানায়, সোমবার সন্ধ্যায় কাজের সময় একটি চুরি ভেঙে গেলে তাকে লাঠি দিয়ে পেটানোসহ গরম পানি ঢেলে হাতে ছ্যাকা দেয়া হয়। এরপর রাতে গোপনে সে বাসা থেকে পালিয়ে খালার ভৈরবস্থ ভাড়া বাসায় আশ্রয় নেয়। ঘটনা শুনে তার খালা ভয়ে কারো কাছে অভিযোগ করার সাহস পায়নি।
পরে পৌর প্যানেল মেয়র মো. আল আমিন ঘটনাটি শুনে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠায়। এ বিষয়ে অভিযুক্ত মেহেরুন্নেছা অপির সঙ্গে বার বার যোগাযোগ করা হলেও তাকে বাসায় পাওয়া যায়নি।
ভৈরব থানার এসআই দেলোয়ার হোসেন জানান, খবর পেয়ে আমি হাসপাতালে গিয়ে সাহিদার শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন দেখতে পায়। ওসির সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত ডাক্তার মো. ফেরদৌস জানান, মেয়েটির শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আঘাতগুলো গুরুতর বলে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়।
আরপি/ এএন
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: