রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ৯ই মে ২০২৪, ২৭শে বৈশাখ ১৪৩১


‘মুরগির বার্ড-ফ্লু’ সংক্রমণে আনা পিপিই এখন করোনা মোকাবিলায়


প্রকাশিত:
২৬ মার্চ ২০২০ ১৭:৪৮

আপডেট:
৯ মে ২০২৪ ২১:০৪

ছবি: সংগৃহীত

নভেল করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে চিকিৎসকদের জীবনের নিরাপত্তায় অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সুরক্ষার সরঞ্জাম (পিপিই)। তবে, দেশের ইতিহাসে এমন ভাইরাস সংক্রামণ মোকাবিলায় প্রয়োজন না হওয়ায় বিপুল পরিমাণ পিপিই সংরক্ষণ কোনো দেশেই ছিলো না।


শিকার হয়ে তাৎক্ষণিকভাবেই বিদেশ থেকে পর্যাপ্ত পিপিই নিয়ে আসার প্রক্রিয়া শুরু করে সরকার। ‘করোনা আতঙ্কের’ এই উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সাধারণ রোগীর চিকিৎসার ক্ষেত্রেও পিপিই ছাড়া চিকিৎসা না দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বিভিন্ন এলাকায়।

প্রান্তিক পর্যায়ে অধিকাংশ হাসপাতালে পিপিই না থাকায় সাধারণ জ্বর-সর্দি-কাশি রোগীর সামনেও আসছেন না চিকিৎসকেরা। আর এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগীরা।

আরোও পড়ুন: করোনা রোগীদের জন্য প্রস্তত করা হচ্ছে রামেকের একটি ভবন

বাংলার আবহমান কাল থেকেই প্রবাদ আছে, ‘ভাঙা কুলাটাও ছাই ফেলতে কাজে লাগে।’ সেই ‘মিথ’ করোনা চিকিৎসার ক্ষেত্রেও যেন বাস্তবে রূপ পেলো। পিপিই সঙ্কট জানতে পেরে দেশে ‘মুরগির বার্ড-ফ্লু’ সংক্রমণকালে আনা অব্যবহৃত পিপিই করোনা মোকাবিলায় হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সালে বাংলাদেশে ব্রয়লার মুরগির ফার্মে বার্ড-ফ্লু ভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করে, প্রাদুর্ভাব চলে ২০১০ সাল পর্যন্ত। সে সময় প্রাণী চিকিৎসকদের নিরাপত্তার লক্ষ্যে ইউএসআইডিসহ কয়েকটি বিদেশি সংস্থা উন্নতমানের পিপিই সরবরাহ করে। এমনকি, কিছু পিপিই সরকার কেনেও।

তবে, গত ১০ বছর ধরে প্রাণিসম্পদে এ ধরনের কোনো সংক্রামণ না হওয়ায় ওইসব পিপিই অব্যবহৃত অবস্থায় পড়েছিল। তবে, সম্প্রতি করোনা মোকাবিলায় পিপিই সঙ্কট সৃষ্টি হওয়ায় গত সোমবার (২৩ মার্চ) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়ে বলেন, যেখানে যতো পিপিই আছে তা থেকে নিজেদের জন্য যৎসামান্য রেখে যেন স্ব-স্ব উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে চিকিৎসকদের কাছে সরবরাহ করা হয়।

সে মোতাবেক প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সব বিভাগীয় ও জেলা দপ্তরের মাধ্যমে উপজেলা দপ্তরগুলোকে এ নির্দেশনা প্রদান করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে সারাদেশে ১২ হাজার ৫৫৬টি পিপিই সরবরাহ করেছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।

আরোও পড়ুন: করোনা প্রতিরোধে রাজশাহী নগরজুড়ে জীবাণুনাশক স্প্রে শুরু

পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হোসাইন মুহাম্মদ আল-মুজাহিদ বাংলানিউজকে বলেন, প্রাণিসম্পদ থেকে পাওয়া পিপিই খুবই উপকারে এসেছে, এই জরুরি সময়ে চিকিৎসক-পুলিশের মাঝে এগুলো বিতরণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বিদেশ ফেরত যারা কোয়ারেন্টিন মানছেন না তাদের সংস্পর্শে যেতে হলেও তো পিপিই আবশ্যক। তাই এই সময়ে এটা বেশ কাজে দিয়েছে।

এছাড়া পাশ্ববর্তী উপজেলা ভান্ডারিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাজমুল ইসলাম প্রাণিসম্পদ থেকে পাওয়া পিপিই চিকিৎসকদের মাঝে বিতরণ করেছেন। জানা গেছে, পিরোজপুর জেলাতে ১৫৭ টি পিপিই বিতরণ করা হয়েছে।

এছাড়া যশোরের চৌগাছা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা প্রভাষ চন্দ্র গোস্বামী বাংলানিউজকে বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে স্থানীয় ইউএনও মহোদয়ের কাছে ২৪ টি পিপিই হস্তান্তর করেছি। জানিয়েছি, খুব বেশি প্রয়োজন হলে আরও দেওয়া সম্ভব হবে।

‘এই সময়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর মানুষের সেবা সংশ্লিষ্টকাজে সহযোগিতা করতে পেরেছে ভেবে ভালো লাগছে,’ বলেন তিনি।

 

আরপি/এমএইচ


বিষয়: পিপিই


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top