রাজশাহী রবিবার, ১২ই মে ২০২৪, ৩০শে বৈশাখ ১৪৩১


গণতন্ত্র বিপন্নকারী অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান


প্রকাশিত:
৭ এপ্রিল ২০২৩ ২৩:৫৭

আপডেট:
৮ এপ্রিল ২০২৩ ০৭:৩০

ছবি: সংগৃহীত

গণতন্ত্রকে বিপন্ন করে এমন অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। সংঘাত ভুলে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে গণতন্ত্র বিকশিত করতে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন রাষ্ট্রপ্রধান।

শুক্রবার (৭ এপ্রিল) বিকেলে জাতীয় সংসদের সুবর্ণ জয়ন্তী (৫০ বছরপূর্তি) উপলক্ষে বিশেষ অধিবেশনে স্মারক বক্তৃতায় রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।

এতে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদসহ বেশির ভাগ সংসদ সদস্য অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান স্তম্ভ এই মহান জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে আমি আজ দলমত নির্বিশেষে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি— আসুন সবার সম্মিলিত প্রয়াসে প্রিয় মাতৃভূমি থেকে সংঘাত—সংঘর্ষ এবং যেকোনো উগ্রবাদ ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড থেকে দূরে থেকে কল্যাণমুখী রাষ্ট্র গঠনে শামিল হই। গণতন্ত্রকে বিপন্ন করে তোলে এমন কোনো অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে রুখে দাঁড়াতে হবে।

সংসদের সুবর্ণ জয়ন্তীর কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ও দেশের সংসদীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে ৭ এপ্রিল একটি ঐতিহাসিক ও অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭৩ সালের এই দিনে জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন বসেছিল। সদ্য স্বাধীন দেশে যাত্রা শুরু হয়েছিল সংসদীয় গণতন্ত্রের। তবে এই যাত্রার পেছনে রয়েছে ২৪ বছরের অত্যাচার, শোষণ ও নির্যাতনের করুণ ইতিহাস।’

আবদুল হামিদ বলেন, ‘১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ পরাধীনতার হাত থেকে মুক্ত হয়ে পাকিস্তান সৃষ্টি হলেও বাঙালি জাতি আবারও পাকিস্তানের একটি প্রদেশ পূর্ব পাকিস্তানে নতুন করে পাকিস্তানিদের পরাধীনতার কবলে পড়ে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪-তে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৮-তে আইয়ুব খানের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৬-এর ঐতিহাসিক ৬ দফা ঘোষণা, ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান ও ১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলে পাকিস্তানি শোষণের বিরুদ্ধে বাঙালির মুক্তিসংগ্রাম ও স্বাধিকার আন্দোলন। ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে, ৩০ লাখ শহীদ ও দুই লাখ মা-বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।’

রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আমৃত্যু আর্থসামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি গণতন্ত্রের উন্নয়নকেও সমান গুরুত্ব দিতেন। তাই ৭ই মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু রাজনৈতিক স্বাধীনতার সঙ্গে সঙ্গে অর্থনৈতিক মুক্তির কথা বলেছেন। ১৯৭০ সালে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও তৎকালীন শাসক চক্রের চক্রান্তের জন্য সংসদে বসার সুযোগ হয়নি।’

নিজের রাজনৈতিক জীবনের স্মৃতিচারণ করে আবদুল হামিদ বলেন, ‘১৯৭২ সালের গণপরিষদ এবং ১৯৭৩ সালের বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদের সদস্যদের বেশিরভাগই আমাদের ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন। বর্তমান সংসদে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য হিসেবে তোফায়েল আহমেদ, আমি এবং প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য হিসেবে আমির হোসেন আমু, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, মুহা. ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক ও রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু জীবিত আছেন।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে রাজনীতি করেছেন বা কাছে থেকে দেখেছেন তাদের সংখ্যাও কমে যাচ্ছে। একইভাবে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষদর্শী ও অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যাও দিন দিন কমছে। তাই জাতীয় সংসদের ইতিহাস নতুন ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্য এই বিশেষ অধিবেশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।’

 

 

আরপি/এসআর-০৮



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top