রাজশাহী শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১


দ্বার খুলল দুই গুরুত্বপূর্ণ সেতুর


প্রকাশিত:
১১ অক্টোবর ২০২২ ০৩:১৭

আপডেট:
১৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৫৪

ছবি: সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের মাধ্যমে দেশের দুটি গুরুত্বপূর্ণ সেতুর দ্বার খুলল। যার একটি হলো নড়াইলে দেশের প্রথম ছয় লেনের মধুমতি সেতু যা কালনা সেতু নামে পরিচিত এবং অপরটি নারায়ণগঞ্জে তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু যার নাম দেওয়া হয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম নাসিম ওসমান সেতু।

সোমবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে দুটি সেতুর শুভ উদ্বোধন করেন সরকারপ্রধান। উদ্বোধনী বক্তব্যে সেতু দুটি দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি আনন্দিত কারণ আজ এই সেতু দুইটি আমি উদ্বোধন করতে পেরেছি। আমি মনে করি যোগাযোগের ফলে আমাদের অবহেলিত অঞ্চলগুলো উন্নত হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে একটি যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করেছি। এখন আমরা দাবি করতে পারি যে বাংলাদেশের সকল জেলার মধ্যে একটা সম্পর্ক হয়, সেই কাজটি আমরা করতে সক্ষম হয়েছি।

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ এবং উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমরা এগিয়ে যাব।

জানা গেছে, জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে ৯৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে মধুমতি নদীর উপর ৬৯০ মিটার দীর্ঘ মধুমতি সেতু নির্মিত হয়েছে, যা স্থানীয়ভাবে কালনা সেতু নামে পরিচিত। এটি নড়াইল, গোপালগঞ্জ, খুলনা, মাগুরা, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গা, যশোর এবং ঝিনাইদহ জেলাকে সংযুক্ত করেছে।

প্রকল্প কর্মকর্তাদের মতে, সেতুটি চালু হওয়ার মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের মানুষ দ্রুত সড়ক যোগাযোগ সুবিধা পাবে। কারণ, সেতুটি কালনাঘাট থেকে রাজধানী ঢাকা পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটারেরও বেশি দূরত্ব কমিয়ে দেবে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্তত ১০টি জেলার মানুষ কম সময়ে বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করতে পারবে। এটি দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল, যশোর থেকে ঢাকা পর্যন্ত ভ্রমণের সময়ও কমিয়ে দেবে। কারণ এতে ঢাকা থেকে দূরত্ব হবে মাত্র ১৩০ কিলোমিটার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলা এবং নড়াইল জেলার অন্তর্গত লোহাগড়া উপজেলার মধ্যে মধুমতি সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এ অঞ্চলের মানুষ এখন পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরিঘাট হয়ে ঢাকা-যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক ব্যবহার করে যার অর্থ তারা যশোর থেকে ঢাকায় পৌঁছাতে আরও ১০০ কিলোমিটার বেশি ভ্রমণ করে। প্রকল্পের কর্মকর্তাদের মতে, সেতুটি এশিয়ান হাইওয়ের একটি অংশ যা রাজধানীকে দেশের বৃহত্তম বেনাপোল স্থলবন্দরসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে সংযুক্ত করবে।

ঢাকার পাশের জেলা নারায়ণগঞ্জ শহরকে বন্দর উপজেলার সাথে সংযুক্ত করবে তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু। অর্থনীতি চাঙ্গা করবে, পদ্মা সেতুর মাধ্যমে চট্টগ্রাম ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলার মধ্যে যোগাযোগ সহজতর করবে। সেতুটির প্রকল্প পরিচালক শোয়েব আহমেদ বলেন, ১.২৯ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে চট্টগ্রাম অঞ্চলগামী যানবাহন এবং একইভাবে চট্টগ্রাম থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলগামী যানবাহন যানজট এড়াতে এবং সময় বাঁচাতে নারায়ণগঞ্জ শহরকে বাইপাস করতে সক্ষম করবে। সেতুটির সঙ্গে নতুন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠলে পদ্মা সেতু থেকে জনগণ সর্বোচ্চ সুবিধা পাবে বলেও জানান তিনি।

সেতুটি পূর্বে বন্দর উপজেলার মদনগঞ্জকে পশ্চিমে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সৈয়দপুরের সঙ্গে যুক্ত করবে। এখন মোটরচালিত নৌযানই নদীর দুই পাড়ের মানুষ ও অন্যান্য এলাকার জনসাধারণের জন্য পারাপারের প্রধান মাধ্যম। শীতলক্ষ্যা সেতু চালু হলে পঞ্চবটি বিসিক শিল্প এলাকা, পঞ্চবটি মোড়, চাষাঢ়া মোড়, সাইনবোর্ড, নারায়ণগঞ্জের চট্টগ্রাম সড়ক বা ঢাকার পোস্তগোলা ও শনির আখড়া রুটে যানবাহনকে তীব্র যানজটের সম্মুখীন হতে হবে না বলে জানান শোয়েব আহমেদ যানবাহনগুলো রাজধানীর পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ শহরকে বাইপাস করতে পারবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এতে রাজধানী ও নারায়ণগঞ্জ শহরের ওপর চাপও কমবে।প্রকল্পটি ২০১০ সালে একনেকে অনুমোদন পেলেও ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি নির্মাণকাজ শুরু হয়। প্রকল্প পরিচালক বলেন, সেতু নির্মাণে ৬০৮.৫৬ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে এর মধ্যে ২৬৩.৩৬ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকারের তহবিল থেকে এবং ৩৪৫.২০ কোটি টাকা সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট (এসএফডি) থেকে এসেছে।

আরপি/ এসএইচ ০৪

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top