রাজশাহী মঙ্গলবার, ২৪শে সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ই আশ্বিন ১৪৩১


ভোটের আগে আলোচনায় প্রশাসনের শীর্ষ পদ


প্রকাশিত:
২৭ আগস্ট ২০২২ ০৩:২১

আপডেট:
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৫:১৫

আলোচনার তুঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ও আইজিপি পদ

চলতি বছরের শেষে এবং আগামী বছরের শুরুতে প্রশাসনের শীর্ষ বেশ কয়েকটি পদ শূন্য হচ্ছে। আগামী বছরই দেশে পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। এই অবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ এসব পদে কারা আসছেন এটা নিয়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে চলছে তুমুল আলোচনা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে শুরু করে সচিবালয়, সবখানে এই আলোচনা চলতে দেখা গেছে। শূন্য পদে নতুন মুখের ব্যাপারে যেমন গুঞ্জন আছে তেমনি পুরনোদের মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে বলেও আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

জানা গেছে, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসের দুই বছরের চুক্তিভিত্তিক মেয়াদ শেষ হচ্ছে চলতি বছরের শেষের দিকে। গুরুত্বপূর্ণ এই দুই পদে কে আসছেন তা নিয়ে বঙ্গভবন ও সচিবালয়ে কর্মকর্তাদের মধ্যে চলছে নানা গুঞ্জন। তারা মেলাচ্ছেন হিসাব-নিকাশ।

প্রশাসনে রদবদল নিয়মিত কাজের অংশ। তবে উচ্চ পর্যায়ের পদে নিয়োগ ও রদবদলের বিষয়ে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আগামী বছর জাতীয় নির্বাচন হওয়ায় এবারের নিয়োগ বা বদলির বিষয়ে বেশ সতর্কতা অবলম্বন করছে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব পদও শূন্য হচ্ছে। কে হচ্ছেন পরবর্তী জনপ্রশাসন সচিব তা নিয়ে বেশ জোরেশোরে চলছে আলোচনা। এছাড়া পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদের চাকরির মেয়াদ আগামী মাসে শেষ হচ্ছে। এই পদে নতুন কেউ আসছেন নাকি বর্তমান আইজিপি স্বপদে বহাল থাকছেন তা নিয়েও শোনা যাচ্ছে নানা গুঞ্জন।

সচিবালয়ের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রশাসনে রদবদল একটি রুটিন কাজ হলেও আগামী বছর জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ায় প্রশাসনের শীর্ষ পদে কারা থাকছেন তা নিয়ে এবার আলোচনা কিছুটা বেশি। সরকারের মধ্যেও চলছে নানা হিসাব-নিকাশ।

সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে বেশ কয়েকজন সচিব বিদায় নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন, যুব ও ক্রীড়া সচিব মেজবাহ উদ্দিন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব খলিলুর রহমান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিভাগের সচিব ইয়ামিন চৌধুরী। এসব পদে নতুন কারা আসছেন তা নিয়েও আলোচনা চলছে প্রশাসনে।

ড. আহমদ কায়কাউসের বিদায়ে শূন্য হতে যাওয়া মুখ্যসচিব পদে কে নিয়োগ পেতে পারেন, তা নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। মুখ্য সচিব পদে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার কথা বেশি শোনা যাচ্ছে। একই পদে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব কবির বিন আনোয়ারের নাম শোনা যাচ্ছে। দুজনের মধ্যে কবির বিন আনোয়ার জ্যেষ্ঠ। তোফাজ্জল হোসেন মিয়া প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব হলে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব (পিএস ১) মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব হতে পারেন বলে সচিবালয়ে আলোচনা চলছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের চুক্তিভিত্তিক মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ১৫ ডিসেম্বর। তিনি ২০১৯ সালের ২৮ অক্টোবর মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে নিয়োগ পান। প্রথমে এক বছর পরে আরও দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

সাধারণত মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে নিয়োগ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে চাকরিজীবনে তার পরিচ্ছন্ন ইমেজ বিবেচনায় নেওয়া হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব পদে বর্তমান জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মাহবুব হোসেনের নাম শোনা যাচ্ছে। বিসিএস ৮৬ ব্যাচের এই কর্মকর্তা এর আগে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব ছিলেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব পদে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব কবির বিন আনোয়ার এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষাসচিব আমিনুল ইসলামের নামও আলোচনায় আছে। তবে বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামকে আরেকবার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না সচিবালয়কেন্দ্রিক সূত্রগুলো। খন্দকার আনোয়ার ১৯৮২ সালের বিসিএস বিশেষ ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা।

এদিকে পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদের চাকরির মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী মাসের শেষে। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে তার চাকরির মেয়াদ বাড়ানো হবে কি না, সে আলোচনা চলছে গত কয়েক মাস ধরে। কিন্তু নির্বাচনের সময় তাকে আইজিপি পদে রাখতে হলে মেয়াদ বাড়াতে হবে দুই বছর। অন্যদিকে বেনজীর আহমেদের চাকরির মেয়াদ না বাড়লে কে হবেন পরবর্তী পুলিশপ্রধান, তা নিয়েও নানামুখী আলোচনা আছে বাহিনীর কর্মকর্তাদের মধ্যে।

জ্যেষ্ঠতার বিবেচনায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন ও অতিরিক্ত আইজিপি এস এম রুহুল আমিনের নাম আলোচনায় আছে। তবে এই দুই কর্মকর্তা আগামী নির্বাচনের আগে অবসরে যাওয়া সময় চলে আসবে। এই অবস্থায় পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান মনিরুল ইসলামের নামও আলোচিত হচ্ছে। এরই মধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার পদটিও শূন্য হতে যাচ্ছে।

জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, প্রশাসনে রদবদল নিয়মিত কাজের অংশ। তবে উচ্চ পর্যায়ের পদে নিয়োগ ও রদবদলের বিষয়ে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আগামী বছর জাতীয় নির্বাচন হওয়ায় এবারের নিয়োগ বা বদলির বিষয়ে বেশ সতর্কতা অবলম্বন করছে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহল।

ঢাকা মেইল

 

আরপি/ এমএএইচ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top