রাজশাহী শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৬ই চৈত্র ১৪৩০


সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার হবে: নির্বাচন কমিশনার


প্রকাশিত:
২২ আগস্ট ২০২২ ০৪:৫২

আপডেট:
২৯ মার্চ ২০২৪ ১৮:৫৭

সংগৃহিত

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যবহার করা হবে ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন)। তবে কতগুলো আসনে ইভিএম ব্যবহার হবে সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। নির্বাচন কমিশন তার সক্ষমতা ও যৌক্তিকতা বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় সংখ্যক আসনে ইভিএম ব্যবহার করবে। আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর রোববার (২১ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

আরও পড়ুন: প্রকল্পে নিরাপত্তা নিশ্চিতের আশ্বাস রাজউক চেয়ারম্যানের

ইভিএমের অসুবিধার চেয়ে সুবিধা বেশি দাবি করে তিনি বলেন, ইভিএমে কারচুপি নিয়ে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন তা প্রমাণে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেও কেউ সেটা প্রমাণ করতে আসেনি। বিএনপি ইভিএম নিয়ে অভিযোগ তুললেও তারা সংলাপে এসে বা অন্য কোনোভাবে ইসির কাছে লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ না দেওয়ায় তা আমলে নেওয়া হয়নি। অন্য দলের মধ্যে যারা ইসিতে গিয়ে ইভিএমে কারচুপির অভিযোগ দিয়েছে, তারা তা যাচাই করছেন।

আরও পড়ুন: পায়ে ধরে কাউকে নির্বাচনে আনব না: নির্বাচন কমিশনার

ইভিএমে ভোট কম পড়া ও কারচুপির অভিযোগ অপপ্রচার দাবি করে আলমগীর বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৮০ শতাংশ ভোট পড়েছে। আপনি আমাকে বলবেন, আমি খারাপ। এর-তো প্রমাণ দিতে হবে। না হলে আমি খারাপ হিসেবে গণ্য হবো কেন? তার মানে এটা অপপ্রচার। অপপ্রচার। যতক্ষণ না আপনি প্রমাণ দেবেন ইভিএমে ভোট কারচুপি করা যায়, ততক্ষণ পর্যন্ত আমি এটা বিশ্বাস করবো না। কারচুরির বিষয়টি হচ্ছে অভিযোগ, কিন্তু প্রমাণিত নয়। যারা অভিযোগ দিয়েছেন সেগুলো আমরা যাচাই করছি। কিন্তু যারা আমাদের কাছে এসে অভিযোগ দেননি, সেটা তো আমরা আমলে নেইনি।

কত আসনে এবং কোন কোন আসনে ইভিএম ব্যবহার হবে, কেন ইভিএম ব্যবহার হবে, সে বিষয়ে আগামী সপ্তাহে বিস্তারিত জানানো বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, রাজনীতিবিদদের মধ্যে যারা টকশোতে অংশগ্রহণ করেছেন তারা ইভিএমের পক্ষে বলেছেন। বলেছেন ইভিএমে ভোট হলে জাল-জালিয়াতি করা যায় না। ভোট ভালো হয়। অর্থাৎ ইভিএমের পক্ষে তারা বলেছেন। আবার কেউ বলেছেন ইভিএমের প্রতি আমাদের আস্থা নেই। এটা আমরা এখনো বুঝি না। ইভিএমে জালিয়াতি করা যায়। তখন বলা হলো জালিয়াতি করা যায় তার প্রমাণ দিয়ে যান। আপনারা থিওরিটিক্যালি বলেছেন। যেমন মনে করেন একজন মানুষ চুরি করতে পারে। চুরি তো মানুষই করে। তাই বলে পৃথিবীতে এখন ৮শ কোটি মানুষ আছে, সবাই কি চোর?


ইভিএমে কারচুপির বিষয়ে ইসি চ্যালেঞ্জ দিলেও কেউ সাড়া দেয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা কয়েকবার ওপেন চ্যালেঞ্জ দিলাম। লিখিতভাবে বললাম। সেই চ্যালেঞ্জ দেওয়া হয়েছে কয়েকবার। কিন্তু সেই চ্যালেঞ্জ নিয়ে আজ পর্যন্ত কেউ প্রমাণ করতে পারেনি।

তিনি বলেন, আপনারা শুধু বাইরে থেকে বলেন, তার ভিত্তিতে-তো একটি দেশ বা প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না। একটি প্রতিষ্ঠান চলে তার প্রমাণের ভিত্তিতে, তার দক্ষতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে। এজন্য ইভিএমের পক্ষ যেমন আছে, তেমনি বিপক্ষও আছে। আবার ইভিএমের অনেকগুলো সুবিধাও আছে। যেমন এতে একজনের ভোট অন্যজন দিয়ে দিতে পারে না। ব্যালটে যেমন একজনের ভোট আরেকজন দিতে পারে। ইভিএমে সেই সুযোগ নেই।

তিনি জানান, অনেকগুলো রাজনৈতিক দল ৩০০ আসনে চায় আবার কোনো কোনো দল একটি আসনেও চায় না। আমরা সবার কথা সমানভাবে গুরুত্ব দিতে পারবো না। আমরা আমাদের সক্ষমতা ও ইভিএমের যৌক্তিকতার ওপর গুরুত্ব দেবো।

যেসব দল তিনশ আসনে ইভিএম ব্যবহারের দাবি করেছেন সেটার প্রতি গুরুত্ব দেবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে কমিশনার বলেন, প্রশ্নই ওঠে না। আমরা কারো মুখের দিকে তাকিয়ে সিদ্ধান্ত নেবো না। আমরা একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর ভোট করার জন্য সক্ষমতা ও ইভিএমের সুবিধা বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেবো।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে বড় ধরনের অনিয়মে ইসির হাতে ভোট বাতিলের বিধান যুক্ত করে সংশোধনী প্রস্তাব সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের আরপিও সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য যথেষ্ঠ। তারপরও কিছু কিছু জায়গায় একটু অস্পষ্টতা আছে। আমাদের মনে হয়েছে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কিছু কিছু জায়গায় যদি সংশোধন করা হয়, বিষয়টি আরও ভালো হবে। কমিশন মনে করেছে অল্প কয়েকটি জায়গায় পরিবর্তন বা সংশোধন করতে পারলে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বর্তমানে যে চ্যালেঞ্জগুলো দেখি, সহজে সেটা মোকাবিলা করা সম্ভব।

জনশুমারির চূড়ান্ত রিপোর্ট পেলে সীমানা পুনর্নির্ধারণের উদ্যোগ নেওয়া হবে উল্লেখ করে আলমগীর বলেন, আমরা শুমারির প্রাথমিক রিপোর্ট পেয়েছি। চূড়ান্ত রিপোর্ট পাইনি। আমাদের হোমওয়ার্ক চলছে। তথ্য সংগ্রহ চলছে। শুমারির চূড়ান্ত রিপোর্ট পেলেই সীমানা পূনর্নির্ধারনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

 

আরপি/ এসএইচ ০৯

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top