রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ১৬ই মে ২০২৪, ৩রা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


বঙ্গবন্ধু হত্যার মাস্টার মাইন্ড জিয়াউর রহমান: মেয়র লিটন


প্রকাশিত:
১৫ আগস্ট ২০২২ ০৯:৪৪

আপডেট:
১৬ মে ২০২৪ ২৩:১৫

ছবি: সংগৃহিত

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রজ্ঞা, মেধা, দক্ষতা, যোগ্যতা, দেশপ্রেম, মানুষের প্রতি ভালোবাসা, মানুষকে মনে রাখার যে স্মরণশক্তি, তা কিংবদন্তীতুল্য।

রোববার (১৪ আগস্ট) সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ঢাকার শাহবাগে অবস্থিত বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মিলনায়তনে আয়োজিত এই আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, যে মানুষটি সারাজীবনের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য ভুলে গিয়ে বাঙালিকে তার হাজার বছরের স্বপ্ন স্বাধীন ভূখন্ড উপহার দিলেন। সেই বঙ্গবন্ধু ক্ষমতা গ্রহণের এক বছরের মাথায় কী এমন ঘটলো, যে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র স্লোগান দিয়ে দল গঠন করার প্রয়োজন হলো। কারা ছিলেন পেছনে? কারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ক্ষেত্র তৈরি করলো-এসব খুঁজে বের করতে হবে। এসব ইতিহাস জানতে হবে।

মেয়র লিটন বলেন, পরাশক্তি বা বিদেশী শক্তি বাদ দিলে দেশের মধ্যে বঙ্গবন্ধু হত্যার মাস্টার মাইন্ড জিয়াউর রহমান। তার উচ্চাভিলাস একাত্তর সালে প্রমাণ হয়েছিল। যখন সে কালুরঘাট বেতারকেন্দ্রে ঘোষণা দেওয়ার সময় নিজের নাম দিয়ে ঘোষণা দিয়ে ফেলেছিলেন। পরে তাকে বলা হলো এটা আপনি দিতে পারেন না। আপনাকে কে চিনে ? আপনি বলেন আপনি বঙ্গবন্ধুর পক্ষে দিচ্ছেন। তখন তিনি বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন।

বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বলতে গেয়ে লিটন বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন নিহত হয়ে সিড়ির উপর পড়ে আছেন। তখন ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে জিয়াউর রহমান তার বাড়ির বাথরুমে ভোর সাড়ে ৪টা বা ৫টার দিকে উঠে লাইট জ্বালিয়ে সেভ করছেন। তৈরি হবেন, কারণ তাকে যেতে হবে তার মিশন সম্পন্ন হয়েছে। এখন তাকে যেতে হবে পরবর্তী কার্যক্রমগুলো হাতে নেওয়ার জন্য। জিয়াউর রহমান ক্ষমতা নিয়ে তিনি কিছুদিনের জন্য খন্দকার মোস্তাককে রাষ্ট্রপতি করেছিলেন। জিয়াউর রহমানের নির্দেশে ১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর উদ্ভট ইনডিমিনিটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়। খুনীদের বিচার করা যাবে না-এমন বর্বর আইন সারা পৃথিবীতে হতে পারে না। জিয়াউর রহমানের নির্দেশে ইনডিমিনিটি অধ্যাদেশ জারি হলো, যা ১৯৭৯ সালে আইনে পরিণত করা হয়। এবং সেই আইন দীর্ঘদিন এরশাদ পাল্টাননি, খালেদা জিয়াও পাল্টাননি।

খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বঙ্গবন্ধুর শাহাদত বার্ষিকীতে খালেদা জিয়া কেক কেটে মিথ্যা জন্মদিন পালন করতেন, উল্লাস করতেন। অনেক দিন আমাদের নেত্রী অনুরোধ করেছেন, আমাদের দল থেকে অনুরোধ করা করা হয়েছে, যাতে অন্তত এই কাজটি তিনি করেন না, এই দিনে মিথ্যা জন্মদিন পালন না করেন। আজকে খালেদা জিয়া জেলখানায় আছেন মামলার আসামী হয়ে। সৃষ্টিকর্তা একজন আছেন না? শাস্তি পেতে হবে না? একেই বলে ন্যাচারাল জাস্টিস। শাস্তি দুনিয়াতে তাকে পেতে হচ্ছে, তার দলকে দেখতে হচ্ছে। 

তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘদিন একটানা ক্ষমতায় আছেন। তাতে জ্বলে যাচ্ছে তাদের, যারা দেশের দৃশ্যমান উন্নয়ন দেখে সহ্য করতে পারছে না। পদ্মা সেতু দুর্বল, গাড়ি উঠলে পড়ে যাবে-এইরকম খালেদা জিয়া নিজেও বলেছিলেন। এখন যখন বিএনপির ভাইয়েরা পদ্মা সেতু দিয়ে যাচ্ছেন, সেই ভয়টি কি মাথায় রেখেই যাচ্ছেন নাকি পদ্মা সেতু দিয়ে যাওয়া বন্ধ করে স্পিড বোর্ডে বা ফেরিতে করে যাচ্ছেন?। নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করার মতো কথা বিএনপি ছাড়া আর কে বলবে? কে করবে?

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গ টেনে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বিএনপি দুইবার নির্বাচন বর্জন করেছে। এরাই তারা যারা পচাত্তরের সুফলভোগী। তারা কেউ মারা গেছে, কেউ বেঁচে আছে। বিভিন্ন দলে আছে, বিভিন্ন জায়গায় আছে। বিএনপিসহ তারাই এখন বলছেন, ‘এবারের নির্বাচনে আমাদের দাবি মতো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে হবে। তা না হলে নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।’ এ ব্যাপারে আমি বলতে চাই, আপনারা দাবি করতেই পারেন, মিছিল করতে পারেন, মিটিং করতে পারেন-সবই করতে পারেন। কিন্তু জ্বালাও-পোড়ায় করতে গেলে আমরা ছাড় দিব না। নির্বাচন প্রতিহত করবেন এই সুযোগ বাংলার মাঠিতে কখন আর আপনারা পাবেন না। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থেকেই নির্বাচন হবে বলে জানান এই প্রেসিডিয়াম সদস্য।

বিএনপির নির্বাচন প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বিএনপির বলছে, ‘সেপ্টেম্বর মাস থেকে দেশ উত্তাল হবে।’ মির্জা ফখরুল বলছে, ‘সুনামীতে আওয়ামী লীগ পালিয়ে যাবে। সুনামীতে আওয়ামী লীগ পালবে নাকি কে পালাবে সেটি পরে দেখা যাবে। ৬/৭ বছর আগে আপনাদের নেত্রী খালেদা জিয়া আন্দোলনের যে কর্মসূচি দিয়েছিলেন, সেটি আজ পর্যন্ত তিনি বাতিল করেননি। সেই আন্দোলন কিন্তু চলছে, বাতিল করেননি, বন্ধ করেননি। তার মাঝখানে নির্বাচন হলো, সরকার হলো, উন্নয়ন হলো, পদ্মাসেতু হলো, কর্ণফুলী টানেল হচ্ছে। এইরকম আন্দোলন যদি আপানারা করেন, করতে পারেন। কোন সমস্যা নাই। আমরা আপনাদের আন্দোলন মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত আছি।'

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হকের সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম, আমন্ত্রিত অতিথি ভারতের রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য শ্রী পবিত্র সরকার, আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সিনিয়র সাংবাদিক আবেদ খান, পরিবেশ বিজ্ঞানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, কথা সাহিত্যিক ও বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেন উপস্থিত ছিলেন। 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top