রাজশাহী শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০


‘১৩ বছরে দেশের বনাঞ্চল দ্বিগুণ হয়েছে’


প্রকাশিত:
৫ জুন ২০২২ ২৩:৫২

আপডেট:
৫ জুন ২০২২ ২৩:৫৩

ফাইল ছবি

২০০৯ সালে আওয়ামী রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার সময় দেশের বনাঞ্চল ছিল ১১ ভাগ, যা বর্তমানে ২২ ভাগে উন্নীত হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অর্থাৎ গত ১৩ বছরে দেশের বনাঞ্চল দ্বিগুণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

রোববার (৫ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা ২০২২ এবং জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষ মেলা ২০২২ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, 'বনাঞ্চলকে আমরা ২২ ভাগে উন্নীত করতে পেরেছি। যেটি আমরা যখন সরকারি আসে তখন ১১ ভাগ ছিল।'

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'বাংলাদেশ হচ্ছে সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। আমাদের এত জনসংখ্যা। কাজেই এখানে বনায়ন সংরক্ষণ একটা কঠিন কাজ। আপনারা জানেন যে, আমাদের দেশের প্রায় ১০ লাখের মতো রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। আমার ছোটবেলায় দেখা, এই উখিয়া ছিল ঘনবন। যেখানে বাঘের ডাক শোনা যেত। হাতির পায়ের ছাপ দেখা যেত। কিন্তু সেটা এখন আর নেই।'

রোহিঙ্গাদের দ্বারা উখিয়ার বনাঞ্চল বিনষ্ট হয়েছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, 'যেটুকু ছিল আমরা যখন এই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য জায়গা দিলাম তার পরিবেশটা তখন সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। এটা বাস্তব। যে কারণে আমি ভাসানচরে আমাদের বিভিন্ন চরগুলোকে উন্নত করা এবং চরে বসতি স্থাপন করা সে ব্যবস্থা নিয়েছি। ১৯৯৬ সালে যখন সরকার এসেছিলাম তখন আমি উদ্যোগ নিয়েছিলাম। হেলিকপ্টারে করে পাহাড় এবং দ্বীপাঞ্চলে আমরা বৃক্ষরোপণের জন্য বীজ ছড়িয়ে দিতাম। বাংলাদেশের মাটি ঊর্বর। আমরা যে বীজগুলো ছড়াতাম সেখানে আমরা হিসাব নিয়েছিলাম, ৪০ ভাগ বনায়ন করতে সক্ষমতা অর্জন করি।'

সরকারপ্রধান বলেন, 'বহু দ্বীপাঞ্চলে আমরা বৃক্ষরোপণ করেছিলাম। তাছাড়া আমাদের সমগ্র হাইওয়ে, রাস্তার পাশে ব্যাপক বৃক্ষরোপণ করেছি। আমাদের দুর্ভাগ্য সোনাদিয়াসহ বিভিন্ন অঞ্চলে যে গাছগুলো হয়েছিল সেই গাছগুলো কেটে বিএনপি যখন সরকারে তারা মাছের ঘের করতে শুরু করে। এমনকি সুন্দরবনের ভেতরে খাল সেটা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। মোংলা পোর্ট বন্ধ করে দিয়েছিল। বিএনপি সরকার সেখানে প্রায় আড়াইশ খালের মুখ বন্ধ করে দিয়েছিল। সেখানে চিংড়ি চাষ করা হতো। সেখান থেকে একশোর বেশি খাল আমরা উন্মুক্ত করতে সক্ষম হয়েছি। আমি আহ্বান করব, বাকি খালগুলো যেন উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।'

স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে একটি সবুজ বেষ্টনি করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, 'বিশ্বব্যাপী যখন জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে আলোচনায় ছিল না তখন আমরা আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দল হিসেবে একটি মাত্র দল যারা প্রকৃতি পরিবেশ রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিই।'

শেখ হাসিনা বলেন, 'বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন তাদের ওপর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল যে, আমরা বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি হাতে নেব এবং ১৯৮৪ সালে আমরা সিদ্ধান্ত নিই, '৮৪ থেকে শুরু করে বিশেষ করে ৮৫ সালে ব্যাপকভাবে আমরা কার্যক্রম শুরু করি। আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলো আছে, সেই সমস্ত সংগঠনের ওপর একটি নির্দেশ আছে যে, প্রতিটি দলে যারা সদস্য তারা প্রত্যেকে তিনটি করে গাছ লাগাবেন। একটা ফলদ, একটা বনজ, একটা ভেষজ।'

সরকারের পক্ষ থেকে ইকো পার্কসহ বিভিন্ন সবুজায়ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে এবং বাস্তবায়ন করা হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে পথ দেখিয়ে দিয়ে গেছেন বাংলাদেশকে প্রকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষার জন্য, সেজন্য ব্যাপক কর্মসূচি আওয়ামী লীগ সরকার হাতে নিয়েছে এবং সেগুলো বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে বনায়ন খুব কম পেয়েছে এবং সবুজায়ন কম ছিল।’

প্রধানমন্ত্রী জানান, বন এবং পরিবেশ মন্ত্রণালয় অতীতেও ছিল। তবে সেটি সেভাবে আগে ব্যবহার হয়নি। তিনি বলেন, 'প্রতিটি জায়গায় যেন ব্যাপকভাবে বৃক্ষরোপণ হয়, সে ব্যবস্থা নিচ্ছি।'

পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের লোকবল প্রায় আট গুণ বাড়ানো হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। এ সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে বলেও জানান তিনি।

জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে বাংলাদেশ অধিক সতর্ক বলে জানিয়েছেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, 'আমরা ২০০৮ সাল থেকে ২০২১-২০২২ অর্থবছর পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার ৭৫২ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদানের মাধ্যমে আট শতাধিক প্রকল্প ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন করেছি। তাছাড়া দীর্ঘমেয়াদী জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় কাজ করছি। বাংলাদেশে কোনো গ্রিন হাউজ গ্যাস নির্গমণ করে না। তবুও আমরা আগে থেকেই সতর্ক।'

 

 

আরপি/এসআর-০৪



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top