রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ২রা মে ২০২৪, ১৯শে বৈশাখ ১৪৩১


শৈত্যপ্রবাহে কাঁপছে রাজশাহী


প্রকাশিত:
২১ ডিসেম্বর ২০২১ ০৫:৫২

আপডেট:
২১ ডিসেম্বর ২০২১ ০৫:৫৩

ফাইল ছবি

পৌষের প্রথম সপ্তাহেই রাজশাহীতে জেঁকে বসেছে শীত। হঠাৎ করেই তাপমাত্রার পারদ নেমে এসেছে নিচে। আজ রাজশাহীতে তাপমাত্রা নেমে এসেছে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এটি চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। ফলে রাজশাহীর ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। তাই দিনের তাপমাত্রা আরও কমতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশে আবহাওয়া অধিদফতর (বিএমডি)।

সোমবার (২০ ডিসেম্বর) রাজশাহী আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ (ভারপ্রাপ্ত) মো. কামাল উদ্দিন জানান, সোমবার সকাল থেকে হু হু করে বইছে ঠাণ্ডা বাতাস। দিনভর হিমেল হাওয়ায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে পথের ধারে থাকা ছিন্নমূল মানুষগুলো এখনই শীতে জবুথবু হয়ে পড়েছে। ভোরে ঘন কুয়াশা থাকলেও সকাল থেকেই সূর্যের মুখ দেখা গেছে।

তবে আকাশের বুকে দিনভরই চলেছে মেঘ ও সূর্যের লুকোচুরি খেলা। মধ্য দুপুরে ঘোলাটে আকাশ ফুটে মায়াবী সূর্য হাসলেও তার সেই কিরণ উত্তরের শীতার্ত মানুষগুলোর শরীরে আজ উষ্ণতা ছড়াতে পারেনি।

ফলে কনকনে ঠাণ্ডায় অসহনীয় হয়ে উঠেছে রাজশাহীর জনজীবন। হিমালয় ছুঁয়ে আসা ঠাণ্ডা বাতাস শীতের তীব্রতাকে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। হাড় কাঁপানো শীতে কাহিল হয়ে পড়েছে রাজশাহীসহ উত্তরাঞ্চলের মানুষ। তবে শীত বাড়লেও এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে শীত বস্ত্র বিতরণ শুরু হয়নি। তবে বেসরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ চলছে।

উদ্ভুত পরিস্থিতিতে রাজশাহীর চর ও গ্রামাঞ্চলেও বেড়েছে শীতের তীব্রতা। এসব এলাকার মানুষগুলোকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা যাচ্ছে।

আবহাওয়াবিদ জানান, হঠাৎ করে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হওয়ায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে রাজশাহীতে। এতে কৃষিতেও দেখা দিয়েছে বিপর্যয়। বিশেষ করে শৈত্যপ্রবাহ দীর্ঘাস্থায়ী হলে কৃষকের মাঠে থাকা আলুর ফসলে লেট ব্লাইট (পচন রোগ) ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বোরো ক্ষেতের বীজতলায় কোল্ড ইনজুরির আশঙ্কাও। ফলে সাধারণ কৃষকরা এখনই দুশ্চিন্তা পড়েছেন।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিস বলছে, সোমবার রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সকাল ৬টায় বাতাসের আদ্রতা ছিল ৭০ শতাংশ এবং বেলা ৩টায় ছিল ৩৫ শতাংশ।

আবহাওয়াবিদ কামাল উদ্দিন জানান, গত কয়েক দিন থেকেই তাপমাত্র কমছে। তবে আজই প্রথম তাপমাত্রা ১০ এর নিচে নেমেছে। বর্তমানে রাজশাহীর ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে এই অবস্থার উন্নতির কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে রাতে কুয়াশা বাড়তে শুরু করলে দিনে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে।

কিন্তু দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচেই অবস্থান করবে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ জুড়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাবে রাজশাহী ও আশপাশের জেলার ওপর দিয়ে।

এদিকে সারাদেশের রাতের তাপমাত্রা আরও এক থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশে আবহাওয়া অধিদফতর। এছাড়া দিনের তাপমাত্রাও সামান্য কমতে পারে। এর ফলে সারাদেশে আরও বেশি শীত অনুভূত হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, কুয়াশা বাড়ার পাশাপাশি ঠান্ডা বাতাস আগের চেয়ে বেশি বইছে। ফলে শীতের অনুভূতি দ্রুত বাড়ছে। মঙ্গলবার দিন ও রাতের তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। রাতের তাপমাত্রায় খুব বেশি হেরফের না হলেও দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কমে আসায় শীতের অনুভূতি বেড়েছে। 

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আরিফ হোসেন জানান, আগামী দুই দিন এ শৈত্যপ্রবাহ থাকবে, এরপর তাপমাত্রা একটু বাড়বে। ২৪ ডিসেম্বর থেকে আবার শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে।

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায়। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল কক্সবাজার ও সীতাকুণ্ডে, ২৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আগামী ২৪ ঘণ্টায় দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকবে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে রাতের তাপমাত্রা কমলেও দেশের অন্যত্র তাপমাত্রা একই রকম থাকবে

সিনপটিক অবস্থায় বলা হয়েছে, উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন নিরক্ষীয় ভারত মহাসাগর এলাকায় লঘুচাপটি অবস্থান করছে।

 

আরপি/ এমএএইচ-০৬



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top