রাজশাহী রবিবার, ২৮শে এপ্রিল ২০২৪, ১৬ই বৈশাখ ১৪৩১


মগবাজার বিস্ফোরণে ইসলামিক অনুষ্ঠান উপস্থাপকের প্রাণহানী


প্রকাশিত:
২৮ জুন ২০২১ ২০:০৪

আপডেট:
২৮ এপ্রিল ২০২৪ ১৯:২৬

ফাইল ছবি

রাজধানীর মগবাজারে ওয়ারলেসে একটি তিনতলা ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত হয়েছেন গণমাধ্যম কর্মী, কুরআনে হাফেজ ও মাওলানা মুস্তাফিজুর রহমান।

বিস্ফোরণের ঘটনার পর রক্তাক্ত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) পাঠানো হয় তাকে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মুস্তাফিজ। সোমবার মুস্তাফিজের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন তার দীর্ঘদিনের সহকারী মাহমুদুল হক জালীস।

মাহমুদুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, আরজে মুস্তাফিজ অত্যন্ত নরম ভদ্র এবং বিনিময় ছিলেন। সবসময় হাসিমুখে কথা বলতেন। সব কাজে তার পারদর্শিতা ছিল নজরকাড়া। তার এমন চলে যাওয়া মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে আমাদের।

কোরআন সুন্নাহ মাল্টিমিডিয়ার পরিচালক মাওলানা লুৎফর রহমান বলেন,আমার অফিসে দীর্ঘদিনের কর্মী ছিলেন মুস্তাফিজ। তিনি খুবই কর্মঠ এবং যোগ্যতা সম্পন্ন কর্মী ছিলেন। যেকোনো কাজে বিচক্ষণতার পরিচয় দিতেন। তার এমন মৃত্যুতে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। আমরা শোকাহত।

পরিবারের বড় ছেলে মুস্তাফিজ। ঢাকাতেই থাকতেন তিনি। কাজের সুবাদেই ঘটনার দিন মগবাজারে অবস্থান করছিলেন মুস্তাফিজ - এমনটাই জানিয়েছে তার পরিবার।

মুস্তাফিজের আরেব সহকারী সাঈদুজ্জামান নূর বলেন, তার মতো অমায়িক এবং মিশুক মানুষ খুব কমই ছিলেন। সবসময় ইসলামের পথে জীবন যাপনের চেষ্টা করতেন। তার আকষ্মিক বিদায় কষ্ট পাচ্ছি অনেক।

জানা গেছে, একজন সংস্কৃতির কর্মী হিসেবে বেশ পরিচিত ছিলেন মোস্তাফিজ রহমান। রেডিও ধ্বনির ইসলামিক অনুষ্ঠান ‘আহকামুল জুমা’ এর উপস্থাপক ছিলেন তিনি । অনুষ্ঠানটি প্রতি শুক্রবার সরসারি সম্প্রচার হতো।

বিভিন্ন জায়গায় উপস্থাপনার কোর্সও করাতেন। তিনি টেলিভিশনের রমজান মাসব্যাপী জনপ্রিয় অনুষ্ঠান আলোকিত কোরআন ও সময়ের সেরা হাফেজ প্রোগ্রামগুলোর সমন্বয়কারী ছিলেন।

ময়মনসিংহ গফরগাঁও এর সন্তান মুস্তাফিজুর রাহমান ঢাকার কবি নজরুল সরকারি কলেজে বাংলা বিভাগ এর অনার্স ১ম বর্ষের শিক্ষার্থীও ছিলেন। কওমি মাদরাসায় পড়াশোনা শেষ করে তিনি জেনারেল পড়াশোনার জন্য কবি নজরুল ইসলাম কলেজে পড়তেন।

প্রসঙ্গত, রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় মগবাজার ওয়্যারলেস এলাকার একটি তিন তলা ভবনে এ বিস্ফোরণ ঘটে। ভয়াবহ ওই বিস্ফোরণে এক শিশু ও তার মাসহ ৭ জন নিহত হয়েছেন।

এ ঘটনায় ৫০ জনের ওপর আহত হয়েছেন। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট ও আশপাশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঢামেকের জরুরি বিভাগেই নেওয়া হয়েছে ৩২ জনকে এবং বার্ন ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয় ১৭ জনকে। আহতদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

১২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও রাজধানী মগবাজার ওয়ারলেসে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বিস্ফোরণের সঠিক কারণ জানা যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীদের কেউ কেউ বলছেন, এসির বিস্ফোরণ ঘটেছে, কেউ বা মার্কেটের জেনারেটরকে দায়ী করছেন। অনেকেই ট্রান্সফরমারের কথা বলছেন।

তবে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের ধারণা, শর্মা হাউজ নামে ফুডশপে গ্যাস জমে ভবনে বিস্ফোরণ ঘটেছে।

তিতাস গ্যাসের কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে শর্মা হাউজে দুটি এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন। তারা সরাসরি গ্যাসের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণের বিষয়টি নাকচ করে দিয়েছেন।

কীভাবে এবং কোথা থেকে বিস্ফোরণ হলো তা খতিয়ে দেখতে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ফায়ার সার্ভিসের এক্সপার্টরা রাতেই কাজ শুরু করেছেন।

 

 

আরপি/এসআর-০২



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top