রাজশাহী শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১


মহাদেবপুরে প্রেমিক-প্রেমিকা আটক; জরিমানার টাকা প্রভাবশালীদের পকেটে!


প্রকাশিত:
২১ জুন ২০২০ ১৮:০২

আপডেট:
২৬ এপ্রিল ২০২৪ ১২:১১

ফাইল ছবি

নওগাঁর মহাদেবপুরে কথিত প্রেমিকের সাথে দেখা করার অপরাধে এক সন্তানের জননীর ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আর এ জরিমানার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী মাতব্বরদের বিরুদ্ধে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সফাপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণগোপালপুর গ্রামে।

ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সফাপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণগোপালপুর গ্রামের স্বামী পরিত্যাক্তা এক সন্তানের জননীর (১৭) সাথে মুঠোফোনে একই ইউনিয়নের তাতারপুর গ্রামের আলাবক্স সরদারের ছেলে মনির হোসেনের (১৪) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।

কথিত প্রেমিক মনির হোসেন গত ১৯ জুন শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে কৃষ্ণগোপালপুর গ্রামের বটতলী স্কুল মোড়ের পূর্ব পাশের রাস্তায় মেয়েটির সাথে দেখা করতে আসে। এসময় তাদের একসাথে গল্প করতে দেখে গ্রামের জাহাঙ্গীরের ছেলে আবির, আব্দুল হাকিমের ছেলে বাপ্পীসহ ৪ থেকে ৫ জন বখাটে অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগ তুলে ওই কপোত-কপোতিকে আটক করে।

এরপর জোরপূর্বক আটকে রেখে কথিত প্রেমিক মনিরের সাথে মেয়েটির বিয়ে দেওয়ার পাঁয়তারা চালায় বখাটেরা। বিষয়টি জানতে পেরে এদিন বিকেলে মনিরের পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পরবর্তীতে কৃষ্ণগোপালপুর গ্রামের মহির হাজীর ছেলে জাহাঙ্গীর ও তার ছেলে আবির, হাকিমের ছেলে বাপ্পী, ইউপি সদস্য আবু সায়েম, সাবেক ইউপি সদস্য তাতারপুর গ্রামের আব্দুস সোবহানের ছেলে তাজিমসহ স্থানীয় মাতব্বররা এনিয়ে নানা নাটকিয়তা শুরু করেন। বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে কথিত প্রেমিকার ভ্যান চালক বাবার কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। যা মাতব্বররা পকেটস্থ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

কথিত প্রেমিকার বাবা বাছের আলী বলেন, ‘আমার মেয়েকে এবং ওই ছেলেকে জাহাঙ্গীরের ছেলে আবিরের হেফাজতে আটকে রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে তারা ওই ছেলের সাথে আমার মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার কথা বলে ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় মাতব্বররা।’

বাছের আলী আরও বলেন, ‘ইতি:পূর্বে আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছিল এবং সে পক্ষের একটি সন্তান আছে। তাই মেয়ের ভবিষ্যত চিন্তা করে ওই ছেলের সাথে বিয়ে দেওয়ার উদ্দ্যেশে মাতব্বরদের দাবীকৃত ৪০ হাজার টাকা জাহাঙ্গীরের ছেলে আবির এবং মহির হাজীর ছেলে মিন্টুকে দিয়েছি। ওই টাকা কি করেছে তা আমি কিছুই জানি না।’

ইউপি সদস্য আবু সায়েম বলেন, ‘স্থানীয় মাতব্বরদের সর্ব সম্মতিক্রমে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। আর টাকার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।’

জানতে চাইলে সফাপুর ইউপি চেয়ারম্যান শামসুল আলম বাচ্চু বলেন, ‘আমাকে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ কিছু জানায়নি। আর জানলেও এটি আমার এখতিয়ারের বাহিরে।’

মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম জুয়েল বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোন পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।’

 

আরপি/আআ-০২



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top