রাজশাহী শনিবার, ২০শে এপ্রিল ২০২৪, ৮ই বৈশাখ ১৪৩১


যানবাহন চলাচল ব্যাহত

মহাদেবপুরে সড়কে বাজার; দুর্ভোগ চরমে


প্রকাশিত:
২১ জুন ২০২০ ০০:০৩

আপডেট:
২০ এপ্রিল ২০২৪ ০৬:৫৫

ছবি: মহাদেবপুরে প্রধান সড়কে অস্থায়ী বাজার

নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা সদরে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান সড়কে বসছে অস্থায়ী বাজার। এতে সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বছরের পর বছর এ অবস্থা চললেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন উদ্যোগ নেয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলা সদরের পোস্ট অফিস মোড় থেকে শহরের শিবগঞ্জ মোড় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়ক আগে বাইপাস সড়ক হিসেবে ব্যবহৃত হতো। কিন্তু ২০১৬ সালে সদরের কুঞ্জবন এলাকায় আত্রাই নদীর ওপর সেতু নির্মিত হওয়ার পর এই সড়কই বর্তমানে শহরের প্রধান সড়কে পরিণত হয়েছে। এখন সড়কটি ‘শিবগঞ্জ মোড়-নতুন ব্রিজ সড়ক’ নামে পরিচিত।

এই সড়ক ও সেতুর ওপর দিয়ে নিয়ামতপুর ও পোরশা উপজেলার বাসিন্দাদের জেলা শহরে যাতায়াত করতে হয়। এ সড়কের পাশেই অবস্থিত মহাদেবপুর উপজেলা পরিষদ কার্যালয়। শহরের কুঞ্জবন এলাকায় আত্রাই নদীর ওপর নতুন সেতু হওয়ার পর সড়কটি প্রশস্ত করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এই সড়কের বক চত্বর মোড় থেকে পোস্ট অফিস মোড় এলাকা পর্যন্ত অস্থায়ী খুচরা ও পাইকারি বাজার বসছে। আর হাট বসছে সপ্তাহের শনি ও বুধবার। হাটের দিন শহরের বক চত্বর মোড় থেকে পূর্ব দিকে উপজেলা পরিষদ পর্যন্ত সড়কের ওপর প্রায় ৪০০ মিটারে চলে ধান কেনা-বেচা।

সড়কের ওপর আড়ত বসিয়ে ধান কেনা-বেচা করেন ব্যবসায়ীরা। হাটের দিনগুলোতে যানজট এতটাই তীব্র হয় যে সড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। এতে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়তে হয় যাত্রী ও পথচারীদের। স্থানীয় সর্বমঙ্গলা উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরপুর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরপুর সরকারি কলেজসহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের এই সড়ক ব্যবহার করতে হয়।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলা পরিষদের প্রধান গেট থেকে বক চত্বর পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে চলছে ধান কেনা-বেচা। ধান কিনে রাস্তার ওপরই স্তূপ করে রাখা হয়েছে। সড়কের মাঝখানেই ট্রাক দাঁড় করিয়ে স্তূপ থেকে ট্রাকে ধান লোড করা হচ্ছে। বক চত্বর মোড় থেকে পোস্ট অফিস মোড় সড়কের দুই পাশে দোকান বসিয়ে আম, কাঁঠাল প্রভৃতি কেনাবেচা করা হচ্ছে। এতে সড়কটি সংকুচিত হয়ে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।

উপজেলা সদরের বাসিন্দা ছাইদুর রহমান বলেন, ‘আগে সড়কটি বাইপাস সড়ক হিসেবে ব্যবহার হতো। তখন সড়কটি দিয়ে মানুষের চলাচল কম হতো। সড়কের ওপর ধানের আড়ত ও বাজার বসলেও সমস্যা হতো না। এখন এটি প্রধান সড়কে পরিণত হয়েছে। এখন যান ও পথচারী চলাচল অনেক বেড়ে গেছে। অনতিবিলম্বে এই সড়কের ওপর হাটবাজার বসা বন্ধ করা উচিত।’

মহাদেবপুর বাজার বণিক সমিতির সাবেক সম্পাদক ও প্রেসক্লাবের সভাপতি গৌতম কুমার মহন্ত বলেন, ‘আলাদা কোন জায়গা নির্ধারণ করে সড়কের ওপর হাটবাজার সরিয়ে নেওয়ার দাবি বণিক সমিতির দীর্ঘ দিনের। ইতিমধ্যে ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সড়কটির ওপর হাটের দিন বসা তরকারি বাজারের কিছু অংশ সরিয়ে সদর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের পাশে একটি জায়গায় বসানো হয়েছে।

ফলে এখন শহরের পোস্ট অফিস মোড়ে দুর্ভোগ কিছুটা কমেছে। তবে এখন প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে বক চত্বর থেকে উপজেলা পরিষদ পর্যন্ত এলাকায় হাটের দিন বসা ধানের আড়তগুলো। জায়গা না থাকায় আড়তদারদের সড়কের মাঝখানে ধান স্তূপ করে রাখতে হয়। ফলে চলাচলে দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়।’

এ ব্যাপারে মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিজানুর রহমান মিলন বলেন, ‘এ সমস্যাটি আমার চোখে পড়েছে। সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

 

 

আরপি/আআ-০৫

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top