রাজশাহী শনিবার, ২০শে এপ্রিল ২০২৪, ৮ই বৈশাখ ১৪৩১


প্রচণ্ড তাপদাহে নওগাঁয় বেড়েছে ডাবের চাহিদা


প্রকাশিত:
২২ জুলাই ২০২২ ০৭:১৩

আপডেট:
২২ জুলাই ২০২২ ০৭:৩২

ফাইল ছবি

আষাঢ় শেষে শ্রাবন মাস শুরু হলেও দেখা মেলছেনা বৃষ্টির। প্রচণ্ড তাপদাহে শরীর থেকে প্রচুর ঘাম ঝড়ছে। তাই শরীর কে ঠিক রাখতে নওগাঁর মানুষে কাছে প্রিয় হয়ে উঠেছে কচি নারকেল ডাবের পানি। বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় এ মৌসুমে ডাবের উৎপাদন বেশি হয়। ফলে ক্রেতাদের চাহিদাও বাড়তে থাকে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, শহরের তাজের মোড়, ব্রিজের মোড়, বাটার মোড়, বাজার এলাকার, পুরাতন বাস স্ট্যান্ড, মুক্তির মোড় কাজির মোড়, রুবির মোড়, দয়ালের মোড়, হাসপাতাল মোড় এলাকা সহ পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় ডাব বিক্রিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন বিক্রেতারা।

ডাবের প্রকার ভেদে ১০০ থেকে ১৩০ টাকা দরে প্রতিটি ডাব বিক্রি হচ্ছে।

কাজির মোড় এলাকার জোসনা বলেন, আমি দুইটা ডাব কিনেছি বাসায় গিয়ে আমি আর আমার সন্তান খাব। প্রচণ্ড গরমে শরীর থেকে ঘাম ঝরে পড়ছে। ঝড়ে পরা ঘামে শূন্যতাকে পূরণ করার জন্য মাঝে মধ্যে ডাব খেয়ে থাকি। কিন্তু কিছুদিন শহরে থেকে ডাবের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। যার কারণে ডাব খাওয়া এখন আমাদের সাধ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে।

ডাব ক্রেতা লুকমান হোসেন বলেন, নওগাঁ প্রচন্ড তাপদাহ কারণে দুই সপ্তার বেশি সময় ধরে গরম পরছে। আর এই তীব্র গরমে রোগ-জীবাণুও বেড়ে যায়। যখন অফিসে যাই তখন গরমে প্রচুর ঘাম শরীর ঝরে থেকে। ফলে পানিশূণ্যতা দেখা দিতে পরে। এই পানিশূণ্যতা পূরণ করার জন্য আমি প্রায় সময় ডাবের পানি পান করি। ডাবের ধরণ অনুযায়ী ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে প্রতিটি ডাব কিনতে হয়। ডাবের দাম বেশি হওয়াতে প্রতিদিন খেতে পারি না।

রুবির মোড় এলাকার ডাব ব্যবসায়ী মোর্শেদ বলেন, প্রকার ভেদে বড় ডাব ১০০,ছোট ডাব ৮০, নারিকেল ডাব ৯০ টাকা করে বিক্রয় করা হচ্ছে। প্রতিনিদ প্রায় ৭০থেকে ৮০ পিচ ডাব বিক্রয় হচ্ছে।
শীত মৌসমে বা অন্যান সময় ৪০থেকে ৫০ পিচ বিক্রয় হতো। প্রচন্ড তাপদাহ এর কারণ ডাবের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে।

মুক্তির মোড় এলাকার ডাব ব্যবসায়ী কালাম বলেন, প্রতিদিন তিলেকপুর এবং দুপচাঁচিয়া থেকে তারা ডাব পাইকারী নিয়ে আসেন এই নওগাঁ শহরে। সেখান থেকে তারা শতক ভাবে হবে ক্রয় করে নিয়ে আসেন। প্রকারভেদে ডাবের দাম পড়ে ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা শতক।


দোয়ালে মোড় এলাকার ডাব ব্যবসায়ী বাপ্পি হোসেন বলেন, প্রচণ্ড তাপদাহে ডাবের চাহিদা বেড়েছে। এখন প্রতিদিন প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ পিচ ডাব বিক্রয় করছেন তিনি। তবে অন্যান্য বছর এই সময় ডাবের তেমন একটা চাহিদা থাকত না। কিন্তু এবছর প্রচন্ড খরার কারণে এই সময় ডাবের চাহিদা একটু বাড়ছে।

হঠাৎ করে ডাবের দাম বেশি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন এখন চাহিদা অনুযায়ী আমাদের কাছে পূণ্য আসছে না। আর যেটা আসছে সেটা আমাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে পাইকারদের কাছে থেকে। সেগুলো দোকানে নিয়ে আসলে এর ভিতর থেকে আবার ৫থেকে ১০টি ডাব নষ্ট বের হয়। তিনি বলেন, প্রতিদিন প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ পিচ ডাব পাইকারি নিয়ে আসেন। সেখানে পাইকারি দাম পরে ৮৫ টাকা আর খরচ সহ ৯০ টাকা পরে যায়।

দয়ালের মোড় এলাকার আরেক ব্যবসায়ী সাইদুল রহমান বলেন, প্রতিদিন ৮০থেকে ৯০টা বিক্রয় করা হয়। খরা মৌসুমে ডাবের চাহিদা একটু বেশি হয়। প্রতি পিচ ডাব এখন ১০০ থেকে ১২০টাকা করে বিক্রয় করা হচ্ছে। কোথাও কোথাও ১৫০ টাকা পর্যন্ত ডাব বিক্রয় করছে ব্যবসায়ীরা।

তিনি আরো বলেন, এই নওগাঁ শহরের প্রায় ২৫ থেকে ৩০টি ডাবের দোকান রয়েছে।

এবিষয়ে সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডাঃ আশিষ কুমার সরকার কথা হলে তিনি বলেন, আমাদের দেশে গরমেই সাধারণত ডাবের পানি খাওয়া হয়। এর অনেক কারণ আছে। তবে বলে রাখা ভালো, ডাবের পানি শীতের দিনেও শরীরের যে উপকার করে গরমের দিনেও সেই একই উপকার করে। ফলে গরমের দিনে খাবেন বলে তুলে না রেখে শীতের দিনেও কচি ডাবের পানি খাওয়া উচিত। শরীরে পানির ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে পটাশিয়াম, সোডিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের উপস্থিতির কারণে শরীরে ইলেকট্রোলাইটে ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে।

 

আরপি/ এসএইচ


বিষয়: নওগাঁ


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top