রাজশাহী শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৬ই চৈত্র ১৪৩০


মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে অ্যাম্বুলেন্সের চাকা ঘোরে না, ওষুধও থাকে না!


প্রকাশিত:
৫ জানুয়ারী ২০২১ ২২:০১

আপডেট:
৬ জানুয়ারী ২০২১ ০০:২৮

ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী মহানগরীর কলাবাগান এলাকায় পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের দ্বারা পরিচালিত মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন সেবাপ্রার্থীরা।

স্বাস্থ্যসেবা, ডাক্তার-নার্সদের আচরণ, পরিবেশসহ সুযোগ-সুবিধা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন ভুক্তভোগিরা।


তারা বলছেন, কম খরচে স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া যাবে এখানে এমন ধারণা থেকেই তারা সেবা নিতে আসেন। কিন্তু এখানে রোগিকে ভর্তি করার পর সেবা সর্ম্পকে ভিন্ন অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হয়।

রোগি ও তার স্বজনদের প্রতি ডাক্তার ও নার্সদের আচরণও অপ্রত্যাশিত। এখান থেকে কোনো ওষুধ দেয়া হয় না।

বাইরে অ্যাম্বুলেন্স দেখা গেলেও অকেজোই থাকতে দেখা যায়।


রোগি ও তার স্বজনদের অভিযোগ, এখানে কয়েকটি পরীক্ষা করানো হয়। বাকি পরীক্ষা করানো হয় বাইরে থেকে।  তাও চিকিৎসকরা নির্দিষ্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করাতে বলেন।

তাদের নির্দেশিত জায়গায় পরীক্ষা না করানো হলে শুরু হয় রোগিদের প্রতি অবহেলা। অনেক সময় ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা চিকিৎসকদের রুমের বাইরে এসে বসে থাকেন। তাদের কোম্পানির ওষুধ না নিয়ে অন্য কোম্পানির ওষুধ কিনলেও চিকিৎসকদের বাজে মন্তব্য শুনতে হয়।

এই অবহেলার কারণে অনেক রোগি ভর্তি হওয়ার পরেও এখানে চিকিৎসা না নিয়েই চলে যান।

সেবা নিতে আসা রোগির স্বজন রাজু আহমেদ জানান, তিনি দিনমজুরের কাজ করেন। কম খরচে সেবা নিতে তার স্ত্রীকে এখানে ভর্তি করেছিলেন। কিন্তু তিনি যেটা ধারণা করেছিলেন, এখানে এসে তার বিপরীত চিত্র দেখতে হয়েছে।

অপারেশনের সময় ছাড়া সেখান থেকে চলে আসা পর্যন্ত কোনো ডাক্তার বা নার্স আর কোনো খোঁজ নেননি। তাদের বলে দেওয়া জায়গা থেকেই পরীক্ষা-নিরিক্ষা করাতে হয়েছে। ওষুধ কিনতে হয়েছে। এমন কী পরিবহণ সুবিধাও তিনি পাননি। এছাড়া সব সময় এখানে ডাক্তারও থাকেন না। সেই সময় রোগিদের বেশি সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়।

কেন্দ্রের দায়িত্বরত কর্মকর্তা ডা. শারমিন জানান, সরকারি সেবা কেন্দ্র হিসেবে এখানে রোগিদের যথেষ্ট যত্ন নেয়া হয়। স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে আগে সিজারিয়ান রোগিদের জন্য ওষুধের ব্যবস্থা থাকলেও গত দুই বছর থেকে আর সরবরাহ করা হয় না।

কিন্তু প্রাথমিক ওষুধগুলো সরবরাহ করা হয়। এ সময় রোগিদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যস্ততার অজুহাতে কথা বলতে চাননি তিনি।


এ বিষয়ে জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক ডা. নাসিম আখতার জানান, এই প্রতিষ্ঠানে অ্যাম্বুলেন্সের কোনো লোকেশন ছিলো না। একটা বিশেষ অনুরোধে জয়পুর থেকে এখানে আনা হয়েছিলো।

অ্যাম্বুলেন্স আনা হলেও এটার জন্য কোনো ড্রাইভার নিয়োগ দেয়া হয়নি। কিছুদিন একটা উদ্বৃত্ত ড্রাইভার ছিলো। তাকে দিয়েই চালানো হচ্ছিল। তিনি অবসরে গেলে এখন অ্যাম্বুলেন্সটি পড়ে আছে।

ওষুধের বিষয়ে তিনি জানান, ওখানে কিছু গভর্মেন্ট সাপ্লাই থাকে। আর কিছু কেনাকাটার বিষয় থাকে। এটা প্রক্রিয়াধীন আছে। কারণ গভর্মেন্ট সিস্টেমে আগের চেয়ে ওষুধ কেনায় কড়াকড়ি হয়েছে। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই ওষুধ এসে যাবে।


তিনি আরো জানান, এখানে কিছু টেস্ট আছে। আর কিছু বাইরে থেকে করতে হয়। তবে নির্দিষ্ট জায়গা থেকে টেস্ট করাতে বলা হয়- এমনটা নয়। এছাড়া রোগিরা কোনো অভিযোগ করলে তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন। এ পর্যন্ত কোনো রোগি তাদের কাছে কোনো অভিযোগ করেনি।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top