রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল ২০২৪, ১২ই বৈশাখ ১৪৩১


বয়সভেদে দৈনিক কত ক্যালরি গ্রহণ করা প্রয়োজন?


প্রকাশিত:
৪ অক্টোবর ২০২১ ১৫:১৮

আপডেট:
৪ অক্টোবর ২০২১ ১৫:৪২

ওজন কমাতে আমরা কত কিনা করি। নানা রকম ডায়েট চার্ট মেনেও চলি। তাছাড়া ব্যায়াম বা শরীরচর্চাও করে থাকি। ধারণা  করা হয়, ওজন কমানো মানেই ক্যালরি কমানো। এক কথায় ক্যালরি মানেই যেন ওজন বৃদ্ধি।

তবে, জানেন কি! ডাক্তারি ভাষায় এটি হল আমাদের শক্তি যোগানোর উৎস। আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির চেয়ে যদি বেশি নিয়ে নেই, তাহলে ওজন বাড়বে। আর যদি কম নেই তাহলে ওজন কমতে থাকবে।

একই সাথে মাসলের জোরও কমতে থাকবে। তাই ডাক্তারের দেয়া একটি ডায়েট চার্ট মেনে চলা উচিত। জেনে নেয়া যাক একজন মানুষের দৈনিক কত ক্যালরি গ্রহণ করা প্রয়োজন-

আমরা যে পরিমাণের খাবার খাই তাতেই নির্ধারণ করে আমাদের গ্রহণকৃত ক্যালরির পরিমাণ। আবার কখন কীভাবে আমরা খাবারটা খাচ্ছি সেখানেও কিন্তু অনেক পরিমাণ ভূমিকা রাখে।

সাধারণত একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারীর প্রতিদিন ১৬০০-২৪০০ ক্যালরি গ্রহণ করা উচিত আর পুরুষদের ২০০০-৩০০০ ক্যালরি।

একটি বাচ্চার ক্যালরি ইনটেক প্রতিদিন ১০০০ ক্যালরি, ১৬ থেকে ১৮ বয়সীদে ৩২০০ ক্যালরি ও ১৯ থেকে ২৫ বয়সীদের জন্য ২০০০-২২০০ ক্যালরি খাবার খেতে হবে।

যত বয়স বাড়তে থাকে ক্যালরির প্রয়োজন তত কমতে থাকে। কারণ বয়স বাড়ার সাথে সাথেই শরীরের মেটাবলিজম কমতে থাকে।

দৈনিক ক্যালরি গ্রহণ সংক্রান্ত কিছু তথ্য:

একজন মানুষের ক্যালরি ইনটেক তার বয়স, উচ্চতা, লিঙ্গ ও শরীরের অবস্থা ও লাইফস্টাইলের উপর নির্ভর করে থাকে।

সকালে ভারী খাবার গ্রহণ শরীরের ওজন ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

একটি ৫০০ ক্যালরির সবজি আর ফলমূলের খাবারের মেন্যু অন্য আরেকটি একই পরিমাণ ক্যালরির স্ন্যাকস জাতীয় খাবার থেকে অনেক গুণমানসম্পন্ন ও শরীরের খাবারের চাহিদা অনেকক্ষণ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারে।

দিনে একসঙ্গে অনেক খাবার না খেয়ে সারাদিনে অল্প অল্প করে খাওয়া উচিত। এতে করে অতিরিক্ত খাবার খাওয়া হবে না এবং অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি পাবে না।

প্রতিদিন আমাদের কি কি খাবার ও নিউট্রিশন গ্রহণ করা উচিত:

একটি ব্যালেন্সড ডায়েট আমাদের প্রত্যেকের শরীরের জন্য অপরিহার্য। এটিই ঠিক করে আমাদের শরীরের চাহিদা অনুযায়ী আমরা প্রতিদিন কতটুকু শক্তি গ্রহণ করছি। একজন মানুষের প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় যা যা থাকা উচিত-

ফল

সিজনাল ফলমূল খাবারের তালিকায় রাখা অনেক জরুরি। ফলে প্রাকৃতিকভাবেই চিনি থাকে যা আমাদের শরীরের চিনির চাহিদা মেটায়। যেসব খাবারে প্রক্রিয়াজাতকৃত চিনি থাকে, সেসব খাবার না খেয়ে ফল বা ফলের জুস খেতে পারেন।

শাক-সবজি

শাকসবজিতে থাকে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন আর মিনারেলস। প্রতিদিন প্রতিবেলার খাবারের তালিকায় আমাদের অনেক পরিমাণে সবুজ শাকসবজি রাখা উচিত। যেমন- পালং শাক, ব্রকলি, শিমের বিচি, বাধাকপি, ফুলকপি ইত্যাদি। মোটকথা যে মৌসুমে যে সবজি পাওয়া যায় সবই খাওয়া উচিত।

শস্য জাতীয় খাবার

এসব খাবারের তালিকায় রাখা উচিত হোল-গ্রেন খাবার। বাজারে যে কোনো রকম সিরিয়াল, পাস্তা, ব্রাউন রাইস, ওটমিল, গমের আটা ইত্যাদি। সাদা আটা এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। কারণ এতে নিউট্রিশনের পরিমাণ খুবই কম থাকে।

প্রোটিনযুক্ত খাবার

মাংস, মাছ, বিনস-এ প্রোটিন প্রচুর পরিমাণে থাকে। বাদামও প্রোটিনের অনেক ভালো একটি উৎস। ওয়ালনাট, কাঠবাদাম, চিনাবাদাম কিছু উদাহারণ।

ডেইরি বা দুধ জাতীয় খাবার

এসব খাবার ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম-এর চাহিদা মিটায়। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে এতে ফ্যাটও আছে। তাই খেলেও অল্প পরিমাণ ও ফ্যাট ফ্রী দুধ, দই খাওয়া উচিত।

তেল

লো ফ্যাট জাতীয় তেল আমাদের প্রতিদিনকার খাবারের জন্য অনেক প্রয়োজন। ভোজ্য তেল হিসেবে রাইস ব্র্যান অয়েল, অলিভ অয়েল ব্যবহার করুন।

ভোজ্য তেল কেনার সময় তেলের গায়ে লেবেল পড়ে নিন। এক্ষেত্রে সাফোলা একটিভ অয়েল কিনে দেখতে পারেন।

এতে ওরাইযেনল ও ওমেগা ৩ আছে যা খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে ওজন ঠিক রাখতে সাহায্য করে। ৮০% রাইস ব্র্যান অয়েল ও ২০% সয়াবিন অয়েল-এর সমন্বয়ে তৈরি বলে এটি একটি স্বাস্থ্যকর ভোজ্য তেল হিসেবে স্বীকৃত।

ব্যস, জানা হয়ে গেলো একজন মানুষের দৈনিক কত ক্যালরি গ্রহণ করা প্রয়োজন, কি খাবার প্রয়োজন ইত্যাদি সম্পর্কে। এভাবে প্রতিদিনের খাবার গ্রহণের সময় এসব তথ্য মাথায় রাখলে সুস্থ, সবল ও প্রাণোজ্জ্বল জীবন ধারণ সম্ভব।

রাশিদুল ইসলাম মুসা, কমিউনিটি প্যারামেডিক চাঁপাইনবাবগঞ্জ।

 

আরপি/ এমএএইচ-০১



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top