রাজশাহী বুধবার, ১লা মে ২০২৪, ১৯শে বৈশাখ ১৪৩১


ইফতার পর্যন্ত বাঁচতে চেয়েছিলেন মোর্শেদ


প্রকাশিত:
৯ এপ্রিল ২০২২ ০০:৪৭

আপডেট:
১ মে ২০২৪ ২০:৫৭

ছবি: সংগৃহীত

বৃহস্পতিবার বিকাল পৌনে ছয়টা। ইফতার কিনতে কক্সবাজার সদর উপজেলার একটি বাজারে যান যুবক মোর্শেদ। এ সময় তাকে ঘিরে ধরেন কয়েকজন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা প্রকাশ্যে কোপাতে থাকেন মোর্শেদকে। সারাদিন রোজা রেখে ক্লান্ত হয়ে পড়া যুবকটি দুর্বৃত্তদের কাছে আকুতি জানান ইফতার পর্যন্ত বাঁচতে। কিন্তু সেই আকুতিতে মন গলেনি পাষণ্ডদের। লোহার রড, ছুরি ও লাঠি দিয়ে এলোপাথাড়ি মেরে বীরদর্পে সটকে পড়েন।

উপর্যুপরি আঘাতে মুহূর্তের মধ্যেই নিস্তেজ হয়ে পড়েন মোর্শেদ। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলেও শেষ রক্ষা হয়নি। রাত আটটার দিকে সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান ৩৮ বছর বয়সী যুবকটি।

বৃহস্পতিবার বিকালে কক্সবাজার সদর উপজেলার চেরাংঘর বাজারে এভাবে প্রকাশ্যে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করার ঘটনা ঘটে।

নিহত মোর্শেদ সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের মাইজপাড়ার ওমর আলীর ছেলে।

মোর্শেদের ভাই জয়নাল আবেদীন জানান, অনেকদিন ধরে সদরের পিএমখালীতে সরকারি একটি সেচ প্রকল্প ইজারা নিয়ে পরিচালনা করে আসছিলেন মোর্শেদ। মাহমুদুলসহ স্থানীয় কয়েকজন সেই প্রকল্পটি দখল করে নেন। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে বিবাদ চলে আসছিল।

কিছুদিনের মধ্যে ওই সেচ প্রকল্পের নতুন করে ইজারা হওয়ার কথা রয়েছে। ইজারা পাওয়ার জন্য নিহত মোর্শেদের পরিবার আবেদন করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে প্রতিপক্ষ।

জয়নাল আবেদীন আরও জানান, বৃহস্পতিবার বিকালে ইফতারি কিনতে চেরাংঘর বাজারে যান মোর্শেদ। বাজার পৌঁছার পর সেখানে ওঁৎ পেতে থাকা মাহমুদুলসহ তাদের গোষ্ঠীর কয়েকজন মোর্শেদের ওপর হামলা চালান। তারা লোহার রড, ছুরি ও লাঠি নিয়ে একের পর এক মোর্শেদকে পিটিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

বাজারে থাকা লোকজনের মারফত জানতে পেরে তাকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অস্থায় রাত ৮টার দিকে মারা যান মোর্শেদ।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানিয়েছেন, হামলার সময় মোর্শেদ কয়েকবার ইফতার পর্যন্ত না পেটাতে আকুতি জানিয়েছিলেন। ‘সারা দিন রোজা রেখে ক্লান্ত’, ‘তোমাদের পায়ে পড়ি, মারতে চাইলে ইফতারের পর মারিও’ বলে বারবার আকুতি জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও মন গলেনি পাষণ্ডদের। হাতে অস্ত্র থাকায় অনেকে ঘটনা দেখলেও কেউ এগিয়ে আসার সাহস পায়নি। এই সুযোগে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন দুর্বৃত্তরা।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল মোস্তফা আলাল হত্যাকাণ্ডের মূল নির্দেশদাতা বলে অভিযোগ করেন মোর্শেদের স্বজনরা।

জানতে চাইলে সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম জানান, হামলাকারীরা চিহ্নিত হয়েছে। তাদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

 

 

আরপি/এসআর-০৬



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top