রাজশাহী সোমবার, ২৯শে এপ্রিল ২০২৪, ১৭ই বৈশাখ ১৪৩১

ভোলাহাটে বন্ধ হয়নি হাট, হাজার হাজার মানুষের সমাগম


প্রকাশিত:
২৭ মার্চ ২০২০ ০৩:১২

আপডেট:
২৭ মার্চ ২০২০ ০৩:২২

বৃহস্পতিবার ভোলাহাট উপজেলার গোহালবাড়ী হাটের দৃশ্য

 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলায় সরকারী আইন অমান্য করে দেদারসে হাট বসাচ্ছেন ইজারাদাররা। এতে সরকারি আদেশ অমান্যসহ মানুষকে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যে ফেলছেন তারা।

এছাড়াও উপজেলার বাইরে অবস্থান করা নাগরিকরা বাড়িতে ফিরেছেন। তারা মানছেন না হোম কোয়ারেন্টিন। অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তারা। ফলে বাড়ছে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে ব্যক্তি উদ্যোগে গণজমায়েত না করা ও প্রশাসনের উদ্যোগে এসকল হাটবাজার বন্ধ করার দাবি সচেতন মহলের।

অন্যদিকে, করোনা সংকটকে ব্যবহার করে বাজারগুলোতে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য। এতে ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ। বাজার মনিটরিংয়ের মাধ্যমে এগুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রশাসনকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

জানা গেছে, এর আগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজিবুল আলম স্বাক্ষরিত এক জরুরী ঘোষনায় ২৩ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ অথবা পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত উপজেলায় করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে হোটেল, চায়ের দোকান, মার্কেট, দোকানপাট ও হাট বন্ধ রাখা এবং ৫ জনের বেশী গণজমায়েত না হওয়ার আদেশ দেয়া হয়। তবে ফার্মেসী, সার ও বালাইনাশক, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি, মুদি দোকান এবং কাঁচাবাজার সেই ঘোষনার আওতামুক্ত রাখা হয়। এ আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথাও উল্লেখ করা হয়।

এছাড়াও গত ২৫ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার সময় জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে করোনা ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকতে ঘরের মধ্যে থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভাষণে গণজমায়েত না করার অনুরোধ করেন তিনি। কিন্তু উপজেলা প্রশাসন ও সরকার প্রধানের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে হাটবাজার চালাচ্ছেন ইজারাদার ও সংশ্লিষ্টরা।

বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) উপজেলার বৃহত্তর হাট গোহালবাড়ীহাট ও বড়গাছীহাট বসে। এর আগে বুধবার উপজেলার বাচ্চামারী হাট বসে। ঐ দিনগুলোতে এসকল হাটে ব্যাপক গণজমায়েত ঘটে। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, হাটে হাজার হাজার মানুষের সমাগম। কোথাও তিল ধারণের জায়গা নেই। বজায় নেই নিরাপদ সামাজিক দূরত্ব। মাস্ক ব্যবহারকারীর সংখ্যাও খুবই কম। এছাড়াও পেঁয়াজ, আলুসহ বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য চড়া দামে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

এখানেই শেষ নয়, দেশ বিদেশে কর্মরত উপজেলার নাগরিকরা ছুটিতে বাড়িতে এসেছেন। তারাও মানছেন না হোম কোয়ারেন্টিন। অনেককেই ঘরের মধ্যে না থেকে হাটে-বাজারে, খেলার মাঠে অবাধে ঘুরাঘুরি করতে দেখা যাচ্ছে।

সমাজের বিশিষ্টজন ও সচেতন মহল বলছে, এমন জমায়েতের ফলে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে। বিদেশে থাকা নাগরিকরা উপজেলায় ফিরেছেন। এভাবে মিশতে থাকলে আক্রান্ত ব্যক্তির মাধ্যমে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। সরকারি নির্দেশনা না মেনে এমনভাবে গণজমায়েত ঘটতে থাকলে উপজেলায় করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থেকেই যাবে। তাই দেশের এই চরম সংকট মোকাবেলায় সরকারের নির্দেশনা মেনে গণজমায়েত না করে সকলকে ঘরে থাকার আহ্বান জানান সচেতন নাগরিক সমাজ।

এদিকে, আগামীকাল শুক্রবার পোল্লাডাঙ্গা ও মুন্সিগঞ্জ হাট বসার দিন রয়েছে। এ বিষয়ে পদক্ষেপ না নিলে আবারো গণজমায়েত হবে এবং এতে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে এমন আশঙ্কা করছেন শিক্ষিত সমাজ। তাই প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান তারা।

 

আরপি/ এএন



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top